Shiboprosad-Nandita: `ইচ্ছে` দিয়ে শুরু, ২০ বছর পর `প্রাক্তন` নয়, `বেলাশুরু` ডুয়োর
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'ইচ্ছে' ছবির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ পরিচালক ডুয়োর। মা ছেলের সম্পর্কের টানাপোড়েন, ছেলের প্রতি মায়ের অন্ধ ভালবাসার কথা খুব সহজেই গল্পের মাধ্যমে বলেছিলেন শিবপ্রসাদ-নন্দিতা জুটি। সেই থেকেই ছাপোষা মধ্যবিত্তদের মন জয় করে নিয়েছিলেন তাঁরা।
অলকানন্দা রায়ের সহযোগীতায় জেলবন্দিদের পর্দায় নিয়ে এলেন এই পরিচালক ডুয়ো। প্রথমবার বাংলা ভাষায় তাঁদের নিয়ে শুটিং হল কোনও ছবির। জেলবন্দিদের নিয়ে নাটকের কনসেপ্ট ভাইরাল হল, সেইসময় হই চই পড়ে গেল টলিপাড়ায়।
সুচিত্রা ভট্টাচার্যের কাহিনি অবলম্বনে তৈরি হল সাইকোলজিক্য়াল থ্রিলার 'অলীক সুখ'। ঋতুপর্ণা-দেবশঙ্কর ও সোহিনী অভিনীত ছবি তুলে ধরল সমাজের অত্যন্ত কঠিন বাস্তব। মনের অসুখ নিয়ে আস্ত একটা ছবি খুব সহজেই বলে দিলেন তাঁরা।
শিবপ্রসাদ-নন্দিতা জুটির উত্থানের আরও এক ধাপ উঠল 'রামধনু' ছবির মাধ্যমে। মা-বাবার চাপে আটকে থাকা শৈশব উঠে এল বড়পর্দায়। সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে কত না মা বাবার চোখ খুলে দিলেন এই পরিচালকদ্বয়।
পরিবার কাকে বলে, নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি, এক কামরার ফ্ল্যাটের বদ্ধ জীবন থেকে বেরিয়ে একান্নবর্তী পরিবারের দমকা বাতাস এনে দিলেন বেলাশেষের মাধ্যমে। একটি ছবিতে যেমন রসবোধ, তেমন সামাজিক বার্তা, পারিবারিক মূল্যবোধ থেকে শুরু করে দাম্পত্যর খুঁটিনাটি, সাধারণভাবে ছোট ছোট মুহুর্তে গাঁথা জীবনের কোলাজে মুগ্ধ হল আপামর বাঙালি থেকে অবাঙালি প্রত্যেকে। প্রেক্ষাগৃহে বাংলা ছবির দর্শককে ফিরিয়ে খানিকটা টেনে আনলেন এই জুটি।
শিবপ্রসাদ-নন্দিতার হাত ধরেই ১৪ বছর পর পর্দায় ফিরলেন বাংলা ছবির সুপারহিট জুটি। প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা ডুয়োর অভিনয়ের পাশাপাশি দাম্পত্য টিকিয়ে রাখার হিসেবটা প্রায় ঘাড় ধরে শিখিয়ে দিলেন তাঁরা। কত না প্রাক্তন জুটিকে প্রেম ভাঙার না জানা কথা বলে দিয়ে গেলেন তাঁরা, এই ছবি দেখে চোখের জল ফেলেন নি এমন মানুষ পাওয়া বিরল।
নিজ নিজ ক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকা অভিভাবক বাবা মায়ের কাছে সন্তানের দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হন, কখনও আবার খারাপ লাগাও থাকে। সন্তানের সঙ্গে ঠাকুমার দাদুর যে যোগ তা কোথাও গিয়ে কম না হয়ে যায়, সেই ভীতি থেকেই রাগ, কঠিন এক বাস্তবকে কোর্টরুম ড্রামার রূপ দিয়ে এক ছোট্ট ছেলের চোখ দিয়ে দুনিয়া দেখালেন উইন্ডোজ এর দুই স্তম্ভ শিবপ্রসাদ-নন্দিতা। আবেগ, ভালবাসা চোখের জল যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল।
হামি, মিষ্টি দুই খুদে। আর তাঁদের স্কুল লাইফ। ছোটদের নিয়ে ছবি করলেও তা যে অভিভাবকদের শিক্ষা দেওয়ার জন্যই তা প্রথমে ব্য়ক্ত করেন নি পরিচালক। নিষ্পাপ শিশুদের নিয়ে খেলিয়েছেন সেটে, তাঁদের হাবে ভাবে সাবলীল কিছু মোমেন্ট দিয়ে তৈরি করেছেন 'হামি'। চারিপাশ দেখে কোনও কিছু বিচার করার প্রবণতা যে আসলে কতটা ক্ষতি করে, প্রতিযোগীতায় শিশুদের কতটা সমস্যা হয় রিয়েল লাইফ থেকে তুলে এনেছেন গল্প।
কণ্ঠই যাঁর সম্পদ, যাঁর পেশার অন্যতম হাতিয়ার গলা, সেই RJ-র গলায় ক্যান্সার। কীভাবে বাঁচাবেন জীবন, পেশার তাগিদে কীভাবে চালাবেন সংসার? এ প্রশ্নে জর্জরিত এক শিল্পীর জীবনকাহিনি উঠে এল 'কণ্ঠ' ছবির মাধ্য়মে। ভয়েস বক্স বাদ যাওয়ার পর শরীর থেকে বের করেছিলেন আওয়াজ, সেই রিয়েল লাইফ হিরোর গল্প বড়পর্দায় তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছেন দর্শক।
'অলীক সুখ' ছবি নিয়ে কানের রেড কার্পেটে নন্দিতা রায় ও ঋতুপর্ণা, বাংলা থেকে টলিউডের প্রতিনিধি হয়ে গিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। শিবপ্রসাদ-নন্দিতা ডুয়োর ২০ বছরের কেরিয়ারে ঋতুপর্ণা তাঁদের লাকি-চার্ম। দু দশক ধরে বাঙালি থেকে অবাঙালি, আট থেকে আশি সকলের মনোরঞ্জন করে গিয়েছেন শিবপ্রসাদ-নন্দিতা।