`ভেঙে মোর ঘরের তালা...` করোনা দুর্যোগেও আগমনীর বার্তা নিস্তেজ সোনাগাছিতে

Thu, 03 Sep 2020-2:02 am,

প্রিয়াঙ্কা দত্ত: ছোঁয়াচ এড়াতে বেশিরভাগই আর ও মুখো হননি। করোনা আবহে তাই কার্যত তালা পড়েছে যৌনপল্লিতে। ব্যবসায় মন্দা, রোজগারও তলানিতে। পেটের টান আর হাজারও দুর্ভোগে আপাতত মনমরা সোনাগাছি। লকডাউনে রোজগার না থাকায় বেশিরভাগই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। যাঁরা রয়েছেন আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন কোনওমতে ব্যবসা জিইয়ে রাখার। সবমিলিয়ে এশিয়ার সবচেয়ে বড় যৌনপল্লি তালাবন্দি হয়েছে সেই মার্চেই। 

 

ওরা বলছে, "খদ্দেরই আমাদের লক্ষ্মী, আপাতত তিনি মুখ ফিরিয়েছেন, তা বলে কি দূর্গা মা-এর আরাধনা হবে না?" আর সেই মতোই সমস্ত আয়োজন করে খুঁটি পুজো সেরে ফেলেছে যৌনপল্লি। এ বছরের থিম, "ভেঙে মোর ঘরের তালা নিয়ে যাবি কে আমারে" বলার অপেক্ষা রাখে না থিমেও রয়েছে অস্তিত্ব জিইয়ে রাখারই আর্তি। 

 

ওরা চাইছেন আবার আগের মতো খদ্দের আসুক। মা লক্ষ্মী সদয় হোন সোনাগাছিতে। আপাতত কোভিড পরিস্থিতিতে সমস্ত সুরক্ষাবিধি মেনেই চলছে দূর্গাপুজোর আয়োজন। মণ্ডপে আসা দর্শনার্থীদের জন্য মাস্ক-স্যানিটাইজার-থার্মাল গান রেখে এবং যথাসম্ভব দূরত্ব-বিধি মেনে এ বছর পুজো হবে সোনাগাছিতে। 

 

যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, এই পুজোয় যৌনকর্মীদের থেকে কোনও চাঁদা নেওয়া হবে না। এদিক ওদিক থেকে সাহায্য নিয়েই পুজো হবে। পাশাপাশি কেউ চাল-ডাল দান করলে তা দিয়েই তৈরি হবে ভোগ। 

 

এ বছর ওদের অষ্টম বর্ষের পুজো। ২০১৩-তে ছোট্ট ঘরের মধ্যেই পুজো করেছিলেন ওরা। তখন বাইরে পুজো করার অনুমতি ছিল না। অনেক লড়াই-এর পর অবশেষে ২০১৭ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে শোভাবাজার এলাকার মসজিদবাড়ি স্ট্রিটের উপরে মণ্ডপ করে দুর্গাপুজো করার অনুমতি পান। আর সেই অধিকার আর ছাড়তে চান না  কেউ। তাই একরাশ মনখারাপেও চলছে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি।  রোজগারে ভাটা পড়লেও, দূর্গাপুজোর আনন্দের সঙ্গে মোটেই আপস করতে রাজি নয় সোনাগাছি।

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link