Kaushiki Amavasya 2024: কৌশিকীতে তারাপীঠ তো জমজমাট, কিন্তু এই পীঠের দেবী কি হিন্দু? জানুন, মা তারার অজানা রহস্য...
দিনটির সঙ্গে বহুকাল ধরেই বীরভূমের তারাপীঠের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। সাধক বামাক্ষ্যাপার অন্যতম সিদ্ধপীঠ এই তারাপীঠ। প্রত্যেক বছর তারাপীঠে দেবীদর্শনের জন্য বহু ভক্ত আসেন। তবে তাঁরা বিশেষ করে আসেন এই কৌশিক অমাবস্যায়।
তারাপীঠের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা তারা। বলা হয়, সব দেবদেবীর ঊর্ধ্বে তিনি। সব দেবী রূপেই পুজো করা হয় তাঁকে। কখনও তিনি দুর্গা,কখনও লক্ষ্মী,কখনও সরস্বতী, কখনও আবার স্বয়ং কালী!
কিন্তু কে এই তারা? ইনি কি পুরাণের দেবী? হিন্দু দেবী? আর এখানেই উঠে আসা নানা ব্যাখ্যা।
দেবী কালিকার দশমহাবিদ্যা রূপের অন্যতম রূপ তারা। বামা কালীর মতো তিনি বাম পা শিবের বুকে রেখে দণ্ডায়মান। দেবী অবশ্য খর্বা, লম্বোদরী, ব্যাঘ্রচর্ম পরিহিতা। চতুর্ভুজা-- খড়্গ, কর্তৃকা, নীল পদ্ম ও সমুন্ড খর্পর। দেবী পিঙ্গলবর্ণা, একজটাধারিণী। ত্রিনয়না, করালবদনা, হাস্যমুখী, ভীষণদন্তা। বিশ্বব্যাপী জলের মধ্যে শ্বেত পদ্মের উপর অবস্থিতা। দেবীর পুজো তিন ভাবে-- ব্রহ্মজটা, উগ্রতারা, নীল সরস্বতী।
পুরাণে বর্ণিত চোলা হ্রদে এই দেবীর সৃষ্টি। চোলা হ্রদ কোনটি? সেই হ্রদ আজকের বঙ্গোপসাগর। এই দেবীর প্রথম সাধক বশিষ্ঠ মুনি। এখনকার তারা দেবীর মূর্তি এবং বশিষ্ঠদেবের কল্পিত বা দর্শিত তারা-মূর্তিতে ভিন্নতা আছে। বশিষ্ঠদেবের বর্ণনায় বলা হয়েছে, দেবী দ্বিভুজা, সর্পময় যজ্ঞোপবীতভূষিতা। বাম কোলে স্বয়ং মহাদেব, পুত্ররূপে। সমুদ্রমন্থনে হলাহল পানে শিব যখন নীলকণ্ঠ হয়ে বিষের জ্বালায় জর্জরিত, তখন মাতৃরূপে দেবী তাঁর স্তনদুগ্ধ পান করাচ্ছিলেন দেবাদিদেবকে।
যাই হোক, কালী পুজোর রাতে এই তারা দেবীকে কালী রূপে পুজো করা হয়। কিন্তু তাতে তারার পরিচয় কি কিছু স্পষ্ট হল? ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায় তাঁর বাঙ্গালির ইতিহাস (আদি পর্ব) গ্রন্থে লিখেছেন, বৌদ্ধ তারা দেবী তো ব্রাহ্মণ্য আয়তনে (ধর্মে) কালী দুর্গার অন্য নাম। বিভিন্ন গবেষকেরাও তন্ত্রের আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গে লিখেছেন, তারা বৌদ্ধতন্ত্রের দেবী। হিন্দুরা তারাদেবীকে দশমহাবিদ্যায় স্থান দিয়ে আত্মসাৎ করেছে। সেই হিসেবে তারা দেবী হিন্দু দেবী নন, তিনি বৌদ্ধ দেবী।