লকডাউনে রোজগার নেই, পরনের জামাটুকু খুলে ছেলেকে ঘর থেকে বার করে দিল বাবা! বৌমার সঙ্গেও ঘৃণ্য আচরণ
বাড়ির অমতে নিজের পছন্দ করা মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। এখানেই সমস্যার সূত্রপাত। বিয়ের পর স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসতেই চরম অশান্তি। ছেলে-বৌমাকে কোনওভাবেই স্বীকার করছিলেন না বাবা-মা। সঙ্গে আবার পণ না পাওয়ার ক্ষোভও রয়েছে। আর পাঁচটা গার্হস্থ্য অশান্তির মতো কিন্তু নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দম্পতি মেহেবুব দাস ও সুমিতা দাসের লড়াই কিন্তু আরও কঠিন।
স্ত্রী সুমিতার কথায়, স্বামীর কথা ভেবে শ্বশুরবাড়িতে সব অত্যাচার মেনেই থাকছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও না কোনও ছুতোতে অত্যাচার চলতই। তাঁর বিয়ের গয়না (যার বাজারমূল্য ১০ লক্ষ টাকা) শ্বশুর, শাশুড়ি কেড়ে নেয় বলেও অভিযোগ। চলত অত্যাচারও। এমনটাই অভিযোগ অসহায় মেহেবুব ও তাঁর স্ত্রীর। এরপর কোনওমতে নিজেদের প্রাণ বাঁচিয়ে ভাড়া বাড়িতে এসে সংসার পাতেন মেহেবুব সুমিতা।
কিন্তু মাঝে সেই লকডাউন! টিউশন করে যেকটা টাকা আয় করতেন, তাও বন্ধ হয়ে যায় মেহেবুবের। ফলে টাকার অভাবে ভাড়া বাড়ি ছাড়তে হয়। বাধ্য হয়েই ফের বাবার দ্বারস্থ হন ছেলে। অভিযোগ, বাবা তাঁকে মারধর করেন। এমনকি পরনের পোশাকটুকুও খুলে নেনে যেহেতু সেটা নিজে কিনে দিয়েছিলেন।
সুমিতা নিজের বাপেরবাড়ি থেকে আনা গয়না ফেরত চাইলে শ্বশুর তাঁর স্বামীকে মারধর করে বলেও অভিযোগ। এরপর অসহায় স্বামী-স্ত্রী ১ জুলাই মন্দারমণি কোস্টাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস গিয়ে দেখে মেহেবুবের বাড়িতে তালা ঝুলছে। তাঁর বাবা-মা বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন।
এখনও এই ঘটনার কোনও সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়েই পোস্টার হাতে রাস্তায় ধর্নায় বসেছেন অসহায় দম্পতি। পথচলতি সাধারণ মানুষ দেখছেন, আর প্রশ্ন করছেন, "বাবা-মা, শ্বশুর-শাশুড়ির ওপর অত্যাচারের খবর মেলে আখছার, কিন্তু বাবা-মা যে নিজের সন্তানের সঙ্গে এমনটা করতে পারে, তা তো আগে দেখিনি।"