এই কূটনৈতিক কৌশলেই নিঃশর্তে অভিনন্দনকে ছাড়াতে সক্ষম মোদীর ভারত

Thu, 28 Feb 2019-9:45 pm,

বুধবার দুপুর ৩টে ১৫ মিনিটে নয়াদিল্লি জানায়, ভারতের এক যুদ্ধবিমান চালক নিখোঁজ। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানান, ভারতের সেনাঘাঁটিতে হামলা চালাতে এসেছিল পাকিস্তানি বিমান। একটি পাক যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামানো হয়েছে। কিন্তু ভারতের মিগ-২১ বিমান ও চালক নিখোঁজ। পরে পাকিস্তান জানায়, উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করেছে তারা। 

নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়। বিমানচালকের যে আচরণ করা হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি ব্যক্ত করে ভারত সরকার। পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়াতে বিদেশমন্ত্রক জানিয়ে দেয়, জেনেভা চুক্তি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে বিমান চালকের ছবি ও ভিডিয়ো ঘৃণ্যভাবে প্রদর্শন করেছে পাকিস্তান। দ্রুত তাঁকে ভারতের হাতে নিরাপদে তুলে দেওয়ার কথা জানিয়ে  দেয় নয়াদিল্লি। 

করাচিতে ভারত বম্বিং করতে চলেছে বলে যুদ্ধের আবহ তৈরি করার চেষ্টা করে পাকিস্তান। বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকে বিষয়টি জানায় তারা। এরপরই বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে ভারত সরকার জানিয়ে দেয়, এমন কোনও পদক্ষেপ করার অভিসন্ধি নেই। ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করে আন্তর্জাতিক মহল। উল্টে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় অন্যান্য দেশগুলি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সন্ত্রাসবাদী তালিকায় আজহার মাসুদের নাম অন্তর্ভূক্তের প্রস্তাব দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। ফলে আরও চাপ বেড়ে যায়। চিনকেও সঙ্গে নেয় ভারত। 

অভিনন্দনকে ব্যবহার করে ভারতের সঙ্গে দর কষাকষির মতলব এঁটেছিল পাকিস্তান। কিন্তু নয়াদিল্লি স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কোনওভাবেই দর কষাকষি চলবে না। বিজেপির বুথ কর্মীদের সঙ্গে ভিডিওবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ''সেনার উপরে পূর্ণ ভরসা রয়েছে। ভারতের শ্রীবৃদ্ধিকে আটকে দিতে চাইছে শত্রু। তাদের রুখতে গোটা দেশকে এককাট্টা হতে হবে''। বুধবার রাতেও সেনা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে মোদী স্পষ্ট করেছিলেন, কোনওরকম চাপের কাছে মাথা নোয়াবে না সরকার। সেনার হাতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তান যে সুর নরম করতে চলেছে, সকালে সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছিলেন, ''ওদের (ভারত-পাকিস্তান) সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। উত্তেজনা কমবে বলে আশা করি''।

পাকিস্তান অভিনন্দনের মুক্তির বদলে শান্তি আলোচনা চেয়েছিল। কিন্তু ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কোনও ধরনের দর কষাকষি করা যাবে না। অভিনন্দনকে মুক্তি না দিলে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। ভারতকে বশ্যতা স্বীকার করাতে না পেরে রণভঙ্গে দিল পাকিস্তান।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে কোণঠাসা হয়ে শেষপর্যন্ত দর কষাকষির রাস্তা থেকে সরে এসে অভিনন্দনকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা করতে বাধ্য হন ইমরান খান। 

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link