আগামিকাল লড়াইয়ে হেভিওয়েট Mamata, ময়দানে আর কোন তারকারা?
আগামী কাল রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দ্বিতীয় দফা। এই দফার সব চেয়ে মেগাযুদ্ধ মমতা বনাম শুভেন্দু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্বন্ধে নতুন করে বলার কিছুই নেই। সেই কংগ্রেস আমল থেকে তিনি একজন ইলাস্ট্রিয়াস নেত্রী। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে কাজ করেছেন আবার অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গেও কাজ করেছেন। প্রথমদিকে জ্যোতি বসু এবং পরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিপরীতে নিজেকে অন্যতম জননেত্রী হিসাবে তুলে ধরতে পেরেছিলেন তিনি। এ রাজ্যে ৩৪ বছরের বামশাসনের অবসান ঘটিয়েছেন তিনি প্রায় একার হাতেই। দু'বারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা কি এবার জিতে হ্যাটট্রিক করতে পারবেন? সময়ই বলবে।
শুভেন্দু অধিকারী এবারে সম্ভবত রাজ্য বিজেপি'র থেকে চেয়ে 'ভারী' নাম। দাঁড়িয়েছেনও সাঙ্ঘাতিক জায়গায়। নন্দীগ্রামে। তাঁর বিরুদ্ধে তাঁর পূর্বতন নেত্রী মমতা। ফলে ভয়ানক যুদ্ধ। থমথমে নন্দীগ্রাম এলাকা। কে জিতবেন এখানে? রাজ্য রাজনীতিতে অবিসংবাদী নেত্রী মমতা, না তাঁর একদা-ভাবশিষ্য শুভেন্দু?
মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় এবারে অত্যন্ত আলোচিত প্রার্থীদের একজন। সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী হিসাবে তিনি দাঁড়িয়েছেন মমতা ও শুভেন্দুর বিপরীতে। অনেকেই ভাবছেন এরকম একটা আসনে তিনি কোন সাহসে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামলেন! না, কোনও চমক নয়। বছর সাঁইতিরিশের মীনাক্ষী বহুদিন ধরে একাগ্র ভাবে বামরাজনীতি করে আজ এরকম একটা জায়গায় পৌঁছেছেন। ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সভানেত্রী হিসাবে তিনি দীর্ঘদিন নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে আসছেন।
দীর্ঘদিনের কংগ্রেসনেতা। সবংয়ের অন্যতম নেতা। কিন্তু এখন তিনি তৃণমূলে। মানস ভুঁইয়া। গতবার সবংয়ে দাঁড়িয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। এই ২০২১-য়ে সবংয়েই আবার তাঁর পরীক্ষা। নিজের অস্তিত্বরক্ষার লড়াই, আবার বিজেপি'র সঙ্গে এঁটে তৃণমূলের সিট বাঁচানোরও লড়াই তাঁর।
অভিনেতা সোহম বহুদিন ধরেই তৃণমূলে আছেন। দেখতে গেলে ইদানীং রাজনীতিতে যে সেলেব-ঢেউ উঠেছে তার ঢের আগে থেকেই তিনি রাজনীতিতে। গতবার বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন। এবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে প্রার্থী তিনি।
অভিনেত্রী সায়ন্তিকা সদ্য রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন শাসকদলে। শোনা গিয়েছে, বাঁকুড়ার এই তৃণমূলপ্রার্থী সম্প্রতি একটু আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন।
হুমায়ুন কবীর আইপিএস পদ ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। দাঁড়িয়েছেন মেদিনীপুরের ডেবরায়। তাঁর ভোট-লড়াইও কম আকর্ষণীয় নয়। কেননা তাঁর বিপরীতে ভারতী ঘোষ।
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে এসপি ছিলেন ভারতী ঘোষ। একটা সময় মমতা-ভারতী বোঝাপড়া ছিল দারুণ আলোচ্য বিষয়। কিন্তু মমতার সঙ্গে বিরোধের জেরে বছর চারেক আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এবারে ডেবরায় গেরুয়াশিবিরের প্রার্থী।
একেবারে ভিন্ন ক্রিজে অশোক দিন্দা। ক্রিকেটর মাঠ ছেড়ে রাজনীতির ময়দানে। সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যোগ দিয়েই প্রার্থী। দাঁড়িয়েছেন ময়নায়। চুটিয়ে আইপিএল খেলেছেন অশোক। ২০১০-এর জুনে ভারতের হয়ে একদিনের আন্তর্জাতিকে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ডেবিউ করা অশোক অবশ্য এ বছরের ফেব্রুয়ারিতেই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন।
তৃণমূলের স্টার যুবনেতা অভিনেতা হিরণ এখন বিজেপিতে। দিলীপ ঘোষের জায়গা খড়্গপুর সদরে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৬ সালে দিলীপ ঘোষ এই সিটটি জিতেছিলেন। তিনি ২০১৯ সালে সাংসদ হন। তখন ওই সিটে উপ-নির্বাচন হলে বিজেপি তৃণমূলের কাছে হেরে যায়। এখন দেখার হিরণ এবং দিলীপ জুটি এবার বিজেপিকে এখানে ভোট-বৈতরণী পার করে দিতে পারে কিনা।