Baruipur: মরা পোড়াচ্ছে মেয়ে! চমকালেন? বাবার দায়িত্ব হাসিমুখেই কাঁধে টুম্পার...
অয়ন ঘোষাল: ২০১৪ সাল। টুম্পার বাবা বাপি দাস, পেশায় বারুইপুর কল্যাণপুর জোড়া মন্দির শ্মশানের ডোম, হঠাৎ কাজ থেকে বাড়ি ফিরে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন। পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। টুম্পা তখন মাত্র ১৯। উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছে। বাড়িতে অসুস্থ মা। ১৫ বছরের বোন। ১০ বছরের ভাই। কিভাবে চলবে সংসার?
বাবার চাকরি পাওয়ার বয়স হয়েছিল পরিবারের একমাত্র টুম্পার। কিন্তু সেতো মেয়ে। শ্মশানে ডোমের কাজ করবে কিভাবে? ২৪ ঘণ্টার কাজ। নির্জন শ্মশান। কতরকম লোকের আনাগোনা। অসম্ভব! বলে উঠল সবাই। রুখে দাঁড়ালো একা টুম্পা। জানিয়ে দিল, সংসার ভেসে যেতে দেওয়া যাবে না। ডোমের কাজই সই। সেই থেকে এক অদম্য জীবন সংগ্রাম শুরু।
এই শ্মশানে টুম্পাই একমাত্র শ্মশান কর্মী। তাই চুল্লির তালা খোলা থেকে শবদেহের স্ট্যান্ড তোলা, চুল্লির ঢাকনা খোলা থেকে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার আগে পরিবারকে দেহাংশ দান। সবটাই একা হাতে করে এই সাহসিনী। প্রথম প্রথম ভয় লাগত। তখন কাঠের চুল্লি ছিল। দাহ কার্যের পুরোটাই সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। কটু গন্ধের ধোঁয়ায় শ্বাস নেওয়া দায়।
হাল ছাড়েনি টুম্পা। পিছিয়ে আসেনি। এরপর ২০১৯ সালে এই শ্মশানে ইলেকট্রিক চুল্লি বসে। কিছুটা উন্নত হয় কাজের পরিবেশ।
১৯ বছরের একটা মেয়ে হালফিলে মজে থাকে লেখাপড়া আর ভার্চুয়াল জগতে। তাদের চোখে থাকে একরাশ রঙিন স্বপ্ন। সেই বয়সী টুম্পা সেদিন হঠাৎ সাহস করেছিল। সমবয়সী অন্যদের থেকে হঠাৎ যেন বড় হয়ে গিয়েছিল। আজ সফল ভাবে গোটা পরিবারের ভরণ পোষণ করতে পেরে তাই তার মুখে বিজয়ীর হাসি।