Chris Donahue: অজান্তেই ইতিহাস সৃষ্টি করে ফেললেন যে মার্কিন সেনা!
সবুজ রঙের একটি ছবি। বিমানের দিকে হেঁটে আসছেন এক সেনা। নাইট ভিশন ক্যামেরায় তোলা এই ছবি এখন সারা পৃথিবীর কাছে রাতারাতি বিখ্যাত।
এবং সকলে জেনেও গিয়েছেন ছবিটির ইতিহাস। একরাশ সবুজ আলোর ভিতর দিয়ে যিনি বিমানের দিকে হেঁটে আসছেন তিনি ক্রিস্টোফার টি ডোনাহুও (Chris Donahue)। স্থান কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দর। আমেরিকার শেষ সি-১৭ বিমানের দিকে হেঁটে আসছেন আফগানিস্তানের মাটিতে আমেরিকার শেষতম সেনা এই ক্রিস্টোফার। দিনটি ৩০ অগাস্ট।
আসলে তালিবানের সঙ্গে চুক্তিমতো ৩০ অগাস্টই আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ ভাবে সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল আমেরিকার। সেই মতো সেনা সরিয়ে নিল আমেরিকা। তার আগে সে দেশে স্থিত আমেরিকার নাগরিক এবং মার্কিন কূটনীতিবিদ-সহ অসংখ্য মানুষকে ফিরিয়ে আনা গিয়েছে বলেই জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আমেরিকার লক্ষাধিক সেনা আফগানিস্তানে ছিল। এই বিপুল সেনারই একজন ক্রিস্টোফার। আর ঘটনাচক্রে তিনিই হলেন আফগানিস্তানের মাটি ছেড়ে চলে আসা শেষ আমেরিকান সেনা। আর ঠিক এই কারণেই অজান্তেই ইতিহাস সৃষ্টি করে ফেললেন ক্রিস্টোফার।
কে এই ক্রিস্টোফার? তাঁর প্রোফাইলও এতক্ষণে সকলের হাতে-হাতে। উত্তর ক্যারোলিনার ফোর্ট ব্র্যাগে ৮২তম এয়ারবোর্ন ডিভিশনের কম্যান্ডিং জেনারেল হিসাবে কর্মরত তিনি। ২০২০ সাল থেকেই এই দায়িত্বে তিনি।
১৯৬৯ সালের অগাস্টেই জন্ম ক্রিস্টোফারের। নিউ ইয়র্ক ওয়েস্ট পয়েন্টের United States Military Academy থেকে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৯২ সাল থেকেই কর্মজীবন শুরু ক্রিস্টোফারের। প্রথমে আমেরিকার সেনার ইনফ্যান্ট্রি শাখার সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হন।
কর্মজীবনের প্রথম কয়েক বছর দক্ষিণ কোরিয়ায় আমেরিকার সেনাবাহিনীর ইনফ্যান্ট্রি শাখায় কর্মরত ছিলেন ক্রিস্টোফার। পরবর্তীকালে অবশ্য বিভিন্ন দেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন অকুতোভয় এই সেনা অফিসার। একাধিকবার কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। নিজের পরিবার-পরিজন ভুলে এতদিন আফগানিস্তানের মাটিতে পড়ে ছিলেন ক্রিস্টোফার।
দীর্ঘ কর্মজীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন ক্রিস্টোফার। কখনও স্কোয়াড্রন অপারেশন অফিসার, কখনও স্কোয়াড্রন এগজিকিউটিভ অফিসার। কখনও ট্রুপ কম্যান্ডার, সিলেকশন অ্যান্ড ট্রেনিং ডিটাচমেন্ট কম্যান্ডার, অপারেশন অফিসার, ডেপুটি কম্যান্ডার বা ইউনিট কম্যান্ডার। কাজের মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। স্নাতক হওয়ার ২১ বছর পর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও অর্জন করেন তিনি। ২০১৩ সালে আর্মি ওয়্যার কলেজের ফেলোশিপ নিয়ে ওই ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।