বর্ষার পড়ন্ত বিকেলে ঘুরে আসুন বর্তির বিল, ডিঙি নৌকা আর শাপলা ফুলের স্পর্শ, সফর কয়েক ঘণ্টার
আর ভালো লাগছে না। এবার বেড়াতে যাব। কিন্তু কোথায়? হাতে সময় যে ওই একদিন! দিঘা, মন্দারমণি অনেক হল। আর এখন অন্য কোথাও যাওয়া মানে তো করোনার ভয় সঙ্গে আবার করোনা পরীক্ষা, ভ্যাকসিনের গল্প। বেড়াতে যাওয়ার বাজেট বেড়ে যাবে। তাহলে একদিনের জন্য কোথায় যাওয়া যায়? ওই মল নয়ত গঙ্গার ঘাট! নাহলে ঢাকুরিয়া লেক। কিন্ত মনটা শহরের চেয়ে দূরে যেতে চাইছে। যেখানে ঠাণ্ঠা হাওয়া বইবে। বৃষ্টি ভেজা মাটির মৃদু গন্ধ হৃদয় ভরিয়ে দেবে। সবুজের মাঝে ঝলমল করবে নীল আকাশ। পাখিদের কোলাহল। শাপলা ফুলের ভিড়ে নৌকাবিহার। যদি এমনটাই আপনার ইচ্ছা হয়। তাহলে ঘুরে আসুন বর্তির বিল।
বর্ষাকালে বর্তির বিলে ঘুরে মজা। কারণ, সেখানে এখন টলটল করছে জল। বিশুদ্ধ অক্সিজেনে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবেন। বর্তির বিল এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেমাস। শাপলার অপূর্ব দৃশ্যে গ্রামের মানুষগুলি রোজগারের পথ পেয়েছে এই ঘুরতে পছন্দ করা মানুষগুলোর হাত ধরে।
একদিকে বারাসাত অন্যদিকে বারাকপুর। যোগ সুত্র নীলগঞ্জ রোড। সেই নীলগঞ্জের ভিতরে বারবেড়িয়া গ্রাম। যার ভিতরেই রয়েছে এই অপূর্ব বর্তির বিল। বারাসাত বারাকপুরের লোকজনের কাছে খুব পরিচিত জায়গা হলেও শহর ও শহরতলির কাছে এখনও তেমন পরিচিতি পায়নি। তবে হঠাৎ বেরিয়ে পরা মানুষগুলোর দৌলতে এখন বর্তির বিলের ছবি ভাইরাল।
এখন প্রশ্ন কী দেখবেন বর্তির বিলে? দিগন্ত বিস্তৃত জলা জায়গা। মাঝ দিয়ে চলে গিয়েছে সরু একফালি মাটির রাস্তা। দূরে কুটির বাড়ি। রাস্তার ধার দিয়ে শুকানো হচ্ছে পাট। বর্তির বিলে ঘুরে বেড়াচ্ছে ডিঙি নৌকা। এই নৌকায় চড়ে ৩০ মিনিট বিলে ঘুরে বেডা়নোই মূল আকর্ষণ। মূলত প্রেমিক প্রেমিকারা বেশ পছন্দ করছেন এই নির্জন রোম্যান্টিক পরিবেশ। প্রিওয়েডিং ফটোশুটের জন্যও বেশ বিখ্যাত হয়ে উঠেছে এই বিল।
নৌকায় ঘুরতে খরচ ১০০ টাকা। একটু বেশি টাকা গরিব মানুষগুলোর হাতে দিলে তারা আরও বেশ কিছুক্ষণ এবং অনেকটা ঘুরিয়ে দেখাবেন।
বর্তির বিল ঘুরে দেখার আদর্শ সময় ভোর বেলা। নয়ত, পড়ন্ত বিকেলে। টুরিস্ট স্পট নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেভাবে মানুষের মনে জায়গা করেছে বর্তির বিল তা গেলেই বুঝতে পারবেন। তবে মরশুম হওয়া চাই বর্ষাকাল।
বাইক বা গাড়ি থাকলে গুগল ম্যাপ অন করে বেরিয়ে পড়ুন। আর তা যদি না থাকে। তাহলে ট্রেন ধরুন। বারাকপুর অথবা দত্তপুকুর। সেখান থেকে নীলগঞ্জ বাজার। তারপর উমা মেডিক্যাল হলের বিপরীতের রাস্তা ধরে বারবেড়িয়া গ্রাম। টোটো পেয়ে যাবেন। যে রাস্তা ধরে এগিয়ে যাবেন, তার চারপাশে বাঁশ গাছের জঙ্গল, সারি সারি গাছ চোখে পড়বে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে ধরে গেলে বাসুদেবপুর মোড় এর থেকে একটু ভিতরে।
যাবেন বর্তির বিল? উইকেন্ড আসছে। তাই পরিকল্পনাটা সেরে ফেলুন। কিন্তু মনে রাখবেন, করোনা বিধি মেনে চলবেন। যদি শহর থেকে ওই গ্রামে যান, তাহলে নিজের গায়ে তাপমাত্রা বা সর্দি কাশি আছে কিনা তা দেখে নিন। মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন।