EXPLAINED | Who Is Baba Vanga: কে এই বাবা ভাঙ্গা? মিলছে যাঁর ভয়ংকর সব ভবিষ্যদ্বাণী! চিননু অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারীকে

Tue, 10 Dec 2024-7:49 pm,

কিংবদন্তি ফরাসি ভবিষ্যদ্বক্তা নসট্রাদামুসের সঙ্গেই উচ্চারিত হয় 'বুলগেরিয়ার নসট্রাদামুস' ওরফে বাবা ভাঙ্গার নাম। ৯/১১-র হামলা থেকে শুরু করে প্রিন্সেস ডায়নার মৃত্যু, চেরনোবিল বিপর্যয় থেকে ব্রেক্সিট, কত কিছু সম্পর্কে যে ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছিলেন বাবা ভাঙ্গা। সেসব অক্ষরে-অক্ষরে সত্য প্রমাণিত। কে এই বাবা ভাঙ্গা? কেন তাঁকে নিয়ে এই চর্চা। এই প্রতিবেদনে চিননু অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারীকে...

১৯১১ সালের ৩১ জানুয়ারি উসমানীয় সাম্রাজ্যের (বর্তমান ম্যাসেডোনিয়া প্রজাতন্ত্র) স্ট্রোমিকাতে জন্মগ্রহণ করেন ভ্যানগেলিয়া প্যানদেভা দিমিত্রোভা। যিনি পরে বাবা ভাঙ্গা নামে বিশ্ববন্দিত হন। বুলগেরিয়ার রহস্যময় ও আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পন্ন এক অন্ধ নারী বাবা ভাঙ্গা। যিনি তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন বুলগেরিয়ার কুজহু পার্বত্য অঞ্চলের রুপিটি নামক স্থানে। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাস যে, 'বল্কানদের  নসট্রাদামুস' অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারীই ছিলেন 

 

শৈশবে ভ্যানগেলিয়া নীল চোখ ও সোনালি চুলের এক সাধারণ মেয়েই ছিলেন। তাঁর বাবা অভ্যন্তরীণ ম্যাসেডোনীয় বিপ্লবী সংগঠনের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বুলগেরীয় সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে যোগদান করেছিলেন। শৈশবেই ভ্যানগেলিয়ার মা মৃত্যুবরণ করায় তাঁর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং ভ্যানগেলিয়াকে তাঁর সৎমাই বড় করেছেন। যদিও ভ্যানগেলিয়া অধিকাংশ সময় প্রতিবেশীদের সঙ্গেই কাটাতেন। 

 

শোনা যায় যে, এক ভয়ংকর ঝড় বাবা ভাঙ্গাকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর তাঁকে কর্দমাক্ত অবস্থায়  অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল এক মাঠ থেকে। বাবা ভাঙ্গার চোখে ছিল বালি। অনেক চেষ্টার পরও তিনি চোখ খুলতে পারছিলেন না এবং চোখের অস্ত্রোপচারের টাকাও ছিল না। এরপর বাবা ভাঙ্গা ধীরে ধীরে পুরো অন্ধ হয়ে যান। যদিও এই দাবির স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই।

 

১৯২৫ সালে বাবা ভাঙ্গাকে জেমুন শহরের এক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হলে, যেখানে তিনি ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা শিখেছিলেন। শুধু তাই নয়, সেখানেই তিনি পিয়ানো বাজানো, বুনন, রান্নাবান্নাও শেখেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপরও শিক্ষা নেন। এই বিদ্যালয়ে বাবা ভাঙ্গা প্রায় তিন বছর ছিলেন। এরপর তাঁর সৎমায়ের মৃত্যু হলে, সৎভাইদের দেখাশোনার জন্য বাবা ভাঙ্গা বাড়ি ফিরে যান। পরিবার হতদরিদ্র হওয়ায় অন্ধত্ব নিয়েও কাজ করতে হয়ছিল বাবা ভাঙ্গাকে।

 

১৯৪২ সালের ১৯ মে বাবা ভাঙ্গা দিমিতার গোসতারভ নামে এক সৈনিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। দিমিতার ছিলেন পেটরিচের নিকটবর্তী ক্রেন্দাহিলিৎসা গ্রামের বাসিন্দা, যিনি তাঁর ভাইয়ের হত্যাকারীদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করতেই ভাঙ্গার কাছে নিয়মিত আসতেন। সেখান থেকেই আলাপচারিতা ও বিয়ে। বিয়ের পরপরই তাঁরা পেটরিচ চলে যান এবং সেখানেই বাবা ভাঙ্গার খ্যাতি আরও বৃদ্ধি পায়। কিছুদিন পর দিমিতা বাধ্যতামূলকভাবে বুলগেরীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। এবং কিছু সময় উত্তর গ্রিসে (যা সেই সময় বুলগেরিয়ার অধীন ছিল) অতিবাহিত করেন। দিমিতার ১৯৪৭ সালে অতিরিক্ত মদ্য়পানের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৯৬২ সালের ১লা এপ্রিল মারা যান।

১৯৩৯ সালে বাবা ভাঙ্গা ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেমময় যদিও ডাক্তাররা বলেছিলেন তিনি খুব শীঘ্রই মৃত্যুবরণ করবেন, তবে বাবা ভাঙ্গা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। বাবাভাঙ্গা ১১ আগস্ট ১৯৯৬ সালে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বহু মানুষ এসেছিলেন। ভাঙ্গার শেষ ইচ্ছা অনুসারেই পেটরিচের তাঁর বাড়িটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয় এবং ৫ই মে ২০০৮ সালে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। 

 

বাবা ভাঙ্গার অলৌকিক ক্ষমতা জনপ্রিয় হতে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই। সেই সময় অনেকেই বাবা ভাঙ্গার কাছে এসে জানতে চাইতেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বেঁচে আছেন কিনা! ১৯৪২ সালের ৮ এপ্রিল বুলগেরীয় শাসক তৃতীয় বোরিস এসেছিলেন তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য।

বাবা ভাঙ্গার ২০২৫ সালের ভবিষ্যদ্বাণী খুবই উদ্বেগজনক। তাঁর মতে, আগামী বছরই ধ্বংসের শুরু। ইউরোপে ভয়ংকর যুদ্ধ বাঁধবে, যার জেরে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হবে, প্রচুর প্রাণহানি ঘটবে। নতুন করে কোনও দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ লাগবে। বাবা ভাঙ্গা তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীতে জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী সর্বনাশের দিকে এগিয়ে যাবে পৃথিবী। 

 

রিপোর্ট অনুসারে, তিনি রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেই সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে দেখছেন। রাশিয়া বিশ্বব্যাপী আধিপত্য অর্জন করবে। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী ঘিরে বিস্তর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী জানাচ্ছে যে, ২০২৫ সালেই পৃথিবী ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। তাঁর মতে ৫০৭৯ সালের মধ্যে মানবতা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে ২০৪৩ সালের মধ্যে পুরো ইউরোপ শাসন করবে মুসলিমরা। ২০৭৬ সালের মধ্যে কমিউনিজম বিশ্ব জুড়ে প্রত্যাবর্তন করবে।      

ZEENEWS TRENDING STORIES

By continuing to use the site, you agree to the use of cookies. You can find out more by Tapping this link