William Butler Yeats: হে পথিক, চলে যাওয়ার আগে জীবন ও মৃত্যুর দিকে ঠান্ডা চোখে তাকাও একবার!
বিপুল প্রতিভাধর কবি উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস বা ডাব্লু. বি. ইয়েটস। প্রয়াত হন আজকের দিনে। ১৯৩৯ সালের ২৮ জানুয়ারি ফ্রান্সে ৭৩ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু। ইয়েটস সেই অর্থে আলাদা করে কোনও এপিটাফ লিখে যাননি। তবে ইয়েটসের কাব্যবিশারদেরা তাঁর প্রায় অন্তিম সময়ের কাব্য 'Under Ben Bulben'থেকে প্রায় এপিটাফের মতোই এই কয়েকটি লাইন উদ্ধৃত করে থাকেন: Cast a cold Eye/ On Life, on Death./ Horseman, pass by!
আয়ারল্যান্ডে জন্মালেও ইয়েটসের পড়াশোনা লন্ডনে। ধর্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে তিনি প্রোটেস্টান্ট ছিলেন। তাঁর ছোটবেলাটা কেটেছিল County Sligo-তে। একেবারে বাল্যকাল থেকেই ইয়েটস কবিতায় আসক্ত ছিলেন। আবার সেই বয়স থেকেই তিনি আয়ারল্যান্ডের কিংবদন্তি এবং গুপ্তবিদ্যার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। সাহিত্যজগতে তিনি এক মাইলফলক। বিশ শতকের বিশ্বসাহিত্যে তিনি এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। তিনি Irish Literary Revival-এরও অন্যতম পুরোধাপুরুষ।
ইয়েটসের সর্বপ্রথম কবিতাগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ সালে। ইয়েটসকে ধরা হয় ঐতিহ্যগত ভাবধারার অত্যন্ত দক্ষতাসম্পন্ন একজন কবি।
একজন সার্থক কবির মতোই ইয়েটস সারাজীবন তাঁর ভালবাসাকে খুঁজে গিয়েছেন। তবে প্রায়ই সফল হননি। তাই ক্ষতবিক্ষত মন নিয়ে নারী থেকে নারী এবং কবিতা থেকে কবিতায় ভেসে গিয়েছেন অনিবার। তবে একজনকে তীব্র ভালবেসেছিলেন। তিনি মড গন। যদিও মড গন তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেন। পরে, কী আশ্চর্য, সেই মডের মেয়ের প্রতিও আকৃষ্ট হন কবি এবং তাঁকেও প্রেম নিবেদন করেন। মনের বিচিত্র গতি, জীবনের রূপরসগন্ধ, সব কিছই ছিল তাঁর অভিজ্ঞতার সামগ্রী। নিজের জীবনকে দেখতে দেখতে মনোগহনের আবিল অন্ধকারে ডুব দিয়ে কবিতার আলো খুঁজে আনতেন তিনি।
ইয়েটসের ভারতযোগও আছে। এই মানুষটিই রবীন্দ্রনাথের Song Offerings-এর ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন। যে বইয়ের জন্য রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। ইয়েটস সেই সময়ে রবীন্দ্রনাথকে প্রায় হাত ধরে পাশ্চাত্যের কবিকুলের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। ইংরেজি গীতাঞ্জলির ভূমিকারও গভীর প্রভাব ছিল।
ঠান্ডা চোখে নয়, আজও উষ্ণ, উত্তপ্ত চোখেই মানুষ তাকিয়ে থাকেন ইয়েটসদের দিকে। বিস্ময়-বিমুগ্ধ। প্রাণিত, তাঁর কাব্যের কাছে সদা-প্রণত।