World Diabetes Day: খুব সাধারণ কিছু সমস্যা, ডায়বেটিসের লক্ষণ নয় তো?
সৃজিতা মৈত্র: ডায়বেটিস! ক্য়ানসারের পরই যে রোগটা আতঙ্কের শীর্ষে রয়েছে। সম্প্রতি ডায়বেটিস সংক্রান্ত বেশ কিছু সমীক্ষা সকলের নজর কেড়েছে। একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে সমগ্র বিশ্বের মধ্যে ভারতকে ডায়বেটিসের ক্যাপিটাল বলে গণ্য করা হচ্ছে। কারণটা যদিও অপর সমীক্ষাটি দেখলেই বুঝবেন। অপর সমীক্ষায় জানাচ্ছে, কলকাতায় প্রতি চারজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ প্রতি একজন ডায়বেটিস রোগে আক্রান্ত। শুধুমাত্র অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জন্য এই নীরব ঘাতকের পায়ের তলায় রয়েছেন এত বিপুল সংখ্যক মানুষ। আসলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীরা জানতেই পারেন না, তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কখন হু হু করা বেড়ে গিয়েছে। অথচ যখন ধরা পড়ে, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই, বিশ্ব ডায়বেটিস দিবসে ডায়বেটিসের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন।
ডায়বেটিস মূলত দু’প্রকারের। প্রথম প্রকারের ডায়বেটিস হল একপ্রকার অটো ইমিউন ডিজিজ। যার ফলে, খুব ছোট বয়সেই এই প্রকার ডায়বেটিস ধরা পড়ে। কিন্তু, মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় প্রকার ডায়বেটিসটি দেখা যায়। এই প্রকার ডয়বেটিসে আপনার শরীর ইনসুলিন নামক হরমোনটির উৎপাদন বন্ধ করে দেয়, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই, এই সাধারণ কিছু লক্ষণ যদি দেখা দেয়, বেশি দেরি না করে একটা সামান্য রক্ত পরীক্ষা করিয়েই নিন।
ভীষণ ঝাল খাবার খাওয়ার পর অথবা গরম কালে অতিরিক্ত জল পিপাসা পাওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্তু, জল খাওয়ার পরও স্বাভাবিকের থেকে বেশি ঘন ঘন জল তেষ্টা পাওয়া কিন্তু ডায়বেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
সারাদিন আমাদের যে পরিমাণ মূত্র পায়, রাতে সেই হার অনেকটা কমে যায়। কারণ, আমাদের বায়োলজিক্যাল ক্লক রাতের দিকে আমাদের সব অঙ্গকে শিথিল করে দেয়। তবে, ঘন ঘন মূত্র ত্যাগ করা, বিশেষ করে রাতে, ডায়বেটিসের আশঙ্কাকেই নিশ্চিত করে।
না আপনার খাবারের তালিকা পাল্টেছে, না পাল্টেছে আপনার দৈনন্দিন রুটিন। তাও, অস্বাভাবিক হারে ওজন কমেই যাচ্ছে। এই লক্ষণ শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়।
সাধারণত অনেকক্ষণ কোনও জায়গায় একইরকম ভাবে থাকলে আমাদের হাত পা প্রথমে ভারী হয়ে গিয়ে অবশ হয়ে যায়। পরে, ওই অবশ হয়ে যাওয়া জায়গায় ঝিনঝিনে অনুভূতি হয়। এই ঘটনা আমাদের সঙ্গে প্রায়শই হতে থাকে। কিন্তু অস্বাভাবিক ভাবে বার বার ঝি ঝি ধরে গেলে, সে বিষয়ে নজর রাখাই ভালো।
আগেও যেমন কাজ করতেন, এখনও তেমন কাজ করেন। খালি এখন যাই করছেন তাতেই দুর্বল হয়ে পরছেন বা আপনার কাজ করার ইচ্ছেটাই চলে গিয়েছে। সারাক্ষণ শুয়ে বসে কাটিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। আপাত দৃষ্টিতে এটাকে আলসেমি মনে হলেও, এটা কিন্তু শরীর দুর্বল হওয়ারও লক্ষণ।
রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম লক্ষণ হল, ত্বক অতিরিক্ত পরিমাণে শুষ্ক হয়ে যাওয়া। শুষ্কতার পাশাপাশি চুলকানি, হালকা ব়্যাশভাবও দেখা যায়।
দৈনন্দিন জীবনে টুকটাক আঁচড়, কেটে যাওয়া লেগেই থাকে। ছোটখাটো কাটা-ছেঁড়া সারতে সাধারণত দু’ থেকে তিনদিন সময় লাগে। কিন্তু এই সাধারণ ক্ষত সাড়তেও যখন অতিরিক্ত সময় লাগে তখন সাবধান হয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
এই কয়েকটি সাধারণ লক্ষণ যদি আপনার অথবা আপনার আশপাশে কারোর লক্ষ্য করে থাকেন, তা হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা করানো উচিত। মনে রাখবেন, এই জেট যুগে যে কোনও রোগই যদি প্রথমে ধরা পড়ে, তার সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।