মেয়েমানুষের প্রেম
সৃজা ঘোষ
ঝিম ধরা স্রোতে পুরুষ তোমায়, শেখাবো প্রেমের নদী-
নয়া অভিঘাত শুষে নিতে হবে 'ভালোবাসা' নামে যদি।
এ দেহ আমার ভাঁটার গল্পে গতিহারা হত যেই,
কেউ বলেছিল- মেয়ে-মানুষের জোয়ার শিখতে নেই।।
মনুষ্য নয় জন্ম আমার, জড়তা জীবন ভোর
রাষ্ট্র আগেই ছিনিয়ে নিয়েছে নারীত্বের অক্ষর
অগ্নিগর্ভে জন্ম আমার মুখরতা পেতো যেই,
কেউ বলেছিল- মেয়ে-মানুষের দৃঢ়তা চেনাতে নেই।।
বাঁচতে চেয়েছি বিষ-মন্থনে, স্তন বিকিয়েছি ঘুনে
তবুও জন্ম বাকি রয়ে গেছে মৃত কন্যা ভ্রূণে...
আধুনিকতার একুশে তবুও যাপন চিনেছি যেই,
কেউ বলেছিল- মেয়ে মানুষের আকাশ দেখতে নেই।
আগুন আমার মৃত যোনিপথ, আগুন আমার সই
কলজের ভারে তবু শতাব্দী ক্ষমাহীন, তীব্র-ই।
ধর্ষণে আর রক্তে, জীবন বাঁচবো বলেছি যেই...
কেউ বলেছিল- মেয়ে-মানুষের দীর্ঘায়ু হতে নেই।।
আকাশ এখানে চোরাপথে বাঁচে- সোনার পাথরবাটি
ভালোবাসা ছিটে বুক পুড়ে যায়। একলাটি পথ হাঁটি।
মুখ ঢেকে নেওয়া অ্যাসিডের দায়, চোকাতে চেয়েছি যেই,
কেউ বলেছিল- মেয়েমানুষের প্রকাশিত হতে নেই।।
চোকাতে চেয়েছি কালশিটে গুলো, চোকাতে চেয়েছি ঘাম-
বিষম বিবাদে মূক হয়ে যায় নষ্ট নারীর দাম।
বুক ঢেকে নেওয়া আভরণ-টুকু সরিয়ে দাঁড়াই যেই,
কেউ বলেছিল- মেয়েমানুষের দেবতা সাজতে নেই
সরে গেছে যুগ অভিসম্পাতে, দেবতা যেমন বোবা-
সভ্যতা,গতি কেউ জানলো না- নগ্ন হবার শোভা।
দেবত্বহীন গর্ভে 'জীবন' সাজাতে গিয়েছি যেই
কেউ বলেছিল- মেয়ে মানুষের জন্ম বুঝতে নেই।
বলিনি এখানে জন্মের নামে স্রোত শিখে গেছি আমি...
জেনেছি- ধর্মে 'নারীত্ব' নয়, 'দেহ'-টা সঅঅবচেয়ে দামী।
তবুও 'তন্ত্রে' অধিকার চেয়ে মুখর হয়েছি যেই,
কেউ বলেছিল- মেয়েমানুষের 'মানুষ' বনতে নেই।