জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আগামী ২ সেপ্টেম্বর সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF President Elections) নির্বাচন। ভারতীয় ফুটবলের মসনদে আসবে নতুন মুখ। মগডালে ওঠার লড়াইয়ে দেশের স্পোর্টিং আইকন ও কিংবদন্তি ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া (Bhaichung Bhutia) ও বাইচুংয়ের একদা সতীর্থ কল্যান চৌবেও (Kalyan Chaubey)। জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলকিপার ও বর্তমানে বিজেপি-র সক্রিয় নেতা তিনি। মঙ্গলবার বিকালে বাইচুং তাঁর প্রাক্তন ক্লাব ইস্টবেঙ্গলে এসেছিলেন। স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের শিষ্যদের প্র্যাকটিস দেখার পাশাপাশি আসিয়ান জয়ী লাল-হলুদ সুপারস্টার ঘুরে দেখলেন ক্লাবের নব নির্মিত আর্কাইভ। বাইচুং সাংবাদিক বৈঠকও করেছিলেন। সেখানে তিনি জানিয়ে দিলেন যে, ভারতীয় ফুটবলকে বদলে ফেলার নীল নকশা ইতিমধ্যে ছকে ফেলেছেন তিনি। মসনদে আসলে তিনি কী কী করবেন তা বলেও দিলেন। দিন দুয়েক আগে কল্যাণ এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়ে ছিলেন যে, একজন ফুটবলারের বাকি ফুটবলারদের জন্য যা যা করা উচিত, তিনি তাই করবেন! 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এদিন কল্যাণকে সমীহ করেই বাইচুং বললেন যে, তিনি রাজনীতি চাইছেন না নির্বাচনে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাইচুং বললেন,'দেখুন কল্যাণ খুবই ভাল ছেলে, কলকাতার মাঠে খেলেছে। তবে আমি চাই এই নির্বাচনে যেন কোনও রাজনীতি না থাকে। অতীতে এই রাজনীতির জন্যই কিন্তু ফুটবল নষ্ট হয়েছে। ফিফা-র নির্বাসনের পর ক্রীড়া আইন প্রনয়ণ হয়েছে। আমাদের কাছে এক বিরাট সুযোগ এসেছে ফুটবলকে ফের বাঁচিয়ে তোলার। ফুটবলের সঙ্গে বিজেপি-কংগ্রেস-টিএমসি-র মতো রাজনৈতিক দলগুলি জুড়ে গেলে সমস্যা হয়। কারণ ভিন রাজ্যে ভিন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে। তখন অনান্য রাজ্যগুলির সমস্যায় পড়ে যায়। আমি চাই এই নির্বাচন ফুটবলের জন্য হোক। এতে যেন ফুটবলের লাভ হয়।'


বাইচুং ভারতীয় ফুটবলকে বদলে ফেলার জন্য রূপরেখা নির্মাণ করে ফেলেছেন। তিনি জানাচ্ছেন, 'প্রতিটি রাজ্য অ্যাসোসিয়েশনকে এটা নিশ্চিত করতেই হবে যে, তৃণমূল স্তরে বড় টুর্নামেন্টের পাশাপাশি লিগ করাতে হবে। অর্ধেকের ওপর অ্যাসোসিয়েশন এখন কোনও লিগ করায় না। রাজ্য অ্যাসোসিয়েশনগুলিই কিন্তু প্লেয়ার তৈরি করবে। কারণ ভারতীয় দলে যারা খেলে, তারা বিভিন্ন রাজ্য থেকেই উঠে আসে। প্লেয়ার তৈরি না হলে ভারত কী করে আর বিশ্বকাপে খেলবে! শুধু পরামর্শ বা নির্দেশ দিলেই হবে না। সাহায্যের হাত বাড়াতে হবে। বহু অ্যাসোসিয়েশনেরই অর্থনৈতিক সামর্থ্য নেই। তাদের আর্থিক ভাবে সাহায্য়ও করতে হবে। এআইএফএফ ৫০ কোটি টাকা পায় এফএসডিএল-এর মাধ্যমে আইএসএল থেকে। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে ৩০-৪০ কোটি টাকা আসছে। ৮০-৯০ কোটি টাকা আছে। এই বাজেট থেকেই রাজ্য অ্যাসোসিয়েশনগুলিকে দিতে হবে। তহবিল গঠন করে কোচ তৈরি করতে হবে। অনেকেরই স্পনসরের সমস্যা হয়। সেটাও মাথায় রাখতে হবে। মূলত ইংরাজিতে বা এক-দু'টি আঞ্চলিক ভাষায় কোচিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আঞ্চলিক ভাষায় আরও বেশি করে কোচিং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। অনেকেরই ভাষাগত সমস্যা হয়।'


বাংলার তিন প্রধান-  ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ও মহামেডানের জন্যও বাইচুংয়ের রয়েছে বিশেষ ভাবনা। তিনি এদিনে বলেছেন, 'আমি বিশেষত এই বাংলার কথা বলতে পারি। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ও মহামেডানকে নিশ্চিত ভাবে সেই গৌরবের দিন ফিরিয়ে দেব আমি। আমাদের কর্পোরেট ও স্পনসর লাগবে ঠিকই। তবে আমি এমন একটা সিস্টেম করতে চাই যে, যেখানে স্পনসর না পেলেও এই তিন প্রধান ক্লাব নিজের পায়ে খেলতে পারে ভবিষ্যতে।' সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, ৩৬টি রাজ্য সংস্থারই শুধু ভোটাধিকার থাকছে এই নির্বাচনে। প্রশাসক কমিটির প্রস্তাবিত ৩৬টি রাজ্য সংস্থার সঙ্গে ৩৬ জন প্রাক্তন ফুটবলারকে ভোটাধিকার দেওয়া হয়নি। নির্বাচনী যুদ্ধে যে প্রার্থীর দিকে ১৯টি রাজ্য সংস্থার ভোট থাকবে, ফেডারেশনের মগডালে বসার জন্য এগিয়ে থাকবেন। এখন দেখার নির্বাচনে শেষ হাসি কে হাসেন, বাইচুং না কল্যাণ!


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)