Exclusive Anand : `মোমো` থেকে মন সরাতে আনন্দের দাওয়াই দাবা
এখনও কী জয়ের খিদে রয়েছে? না কি শুধুই দাবা ভালোবেসে খেলা? ৬৪ বোর্ডের সাদা-কালো খোপে কি শুধুই কিস্তিমাতের নেশা? রাশিয়া বিশ্বকাপের ঘোর এখনও কাটিয়ে না উঠতে পারা বিশ্বনাথন আনন্দের, এমনই নানা কথা উঠে এল একান্ত সাক্ষাত্কারে
ভারতীয় দাবা বলতে গোটা বিশ্ব তাঁকেই চেনে। ছয় বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দের লক্ষ্য এখন সাত নম্বর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট। এখনও কী জয়ের খিদে রয়েছে? না কি শুধুই দাবা ভালোবেসে খেলা? ৬৪ বোর্ডের সাদা-কালো খোপে কি শুধুই কিস্তিমাতের নেশা? রাশিয়া বিশ্বকাপের ঘোর এখনও কাটিয়ে না উঠতে পারা বিশ্বনাথন আনন্দের, এমনই নানা কথা উঠে এল একান্ত সাক্ষাত্কারে। মুখোমুখি সুখেন্দু সরকার...
প্রশ্ন: আপনি তো ১৯৮৬ সালে প্রথমবার কলকাতায় খেলেতে এসেছিলেন?
বিশ্বনাথন আনন্দ : হ্যাঁ, কিন্তু তখন আমি গ্র্যান্ডমাস্টার হইনি। তখন আমি ছিলাম ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার।
প্রশ্ন: দুই যুগ পরে আবার কলকাতায় প্রথম সারির আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় খেলবেন কিছুটা হলেও কী নস্টালজিক?
বিশ্বনাথন আনন্দ : ১৯৯২ সালের জানুয়ারিতে গুডরিক দাবায় খেলেছিলাম। তারপর এর মধ্যে কলকাতায় অন্তত ৩০ বার তো এসেছি। কিন্তু খেলা হয়নি। আবার কলকাতায় খেলব (টাটা স্টিল দাবা প্রতিযোগিতার আসরে খেলবেন আনন্দ) এটা ভেবেই বেশ ভালো লাগছে। কারণ, কলকাতা মানেই তো স্পোর্টস সিটি। এখানকার মানুষজন তো খেলা পাগল। সুতরাং আমার মনে হয় খুব ভালো প্রতিযোগিতা হবে নভেম্বরে।
প্রশ্ন: ভেসেলিন টোপালভকে হারিয়ে ২০১০ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন, কিন্তু ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে পর পর দুবার ম্যাগনাস কার্লসেনের কাছে হেরেছেন। কার বিরুদ্ধে খেলা কঠিন, কাকে হারানো সবচেয়ে শক্ত?
বিশ্বনাথন আনন্দ : সেই নির্দিষ্ট দিনে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই যথেষ্ঠ। আপনাকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে।
প্রশ্ন: রাশিয়ান ফেডারেশন আপনাকে সম্প্রতি "অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ" সম্মানে ভূষিত করেছে। এই অনুভূতিটা কেমন?
বিশ্বনাথন আনন্দ : এই সম্মান পেয়ে আমি সত্যিই খুব আপ্লুত। সবচেয়ে বড় কথা, এই সম্মান রুশ সরকার আমাকে দিয়েছে চেন্নাইয়ের রাশিয়ান সেন্টার অব সায়েন্স অ্যান্ড কালচারে। আর এখানেই আমি দাবা খেলা শিখেছি, আমি বেড়ে উঠেছি। ফলে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়েছি।
প্রশ্ন: এখনও জেতার খিদে রয়েছে বলেই কি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ জিততে চান?
বিশ্বনাথন আনন্দ : কোনও রকম খিদে নেই। খেলতে ভালো লাগে তাই খেলি। নেশার মতো অনেকটা। যেদিন খেলার ইচ্ছেটা থাকবে না সেদিন আর খেলব না।
প্রশ্ন: মোমো গেম, ব্লু হোয়েলের মত ভিডিও গেমে আসক্তি বাড়ছে আজকের প্রজন্মের, তাদের কোনও বার্তা দিতে চান আপনি?
বিশ্বনাথন আনন্দ : অবশ্যই, আমার মনে হয় আমরা খুব সহজেই তাদের ওই সব খেলা থেকে বাঁচাতে পারি। তাদের মন অন্য দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। যদি আমরা তাদের দাবার মতো খেলার সঙ্গে যুক্ত করতে পারি, এর চেয়ে ভালো আর কিছুই হতে পারে না।