জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ইতিহাসের চাকা আর ঘুরল না। 'চোকার্স' তকমাই থাকল দক্ষিণ আফ্রিকার। মাত্র ২১২ রানের পুঁজি নিয়ে যে, অস্ট্রেলিয়াকে বেঁধে ফেলা যাবে না, তা ক্রিকেটের অন্ধভক্ত না হয়েও বলে দেওয়া যায়। কোনও অবিশ্বাস্য বা ম্য়াজিকাল কিছু ঘটল না ইডেন গার্ডেন্সে। তেমনটা ঘটেও ঘটল না। দক্ষিণ আফ্রিকা মরিয়া লড়াই করেও পারল না শেষমেশ। অস্ট্রেলিয়া তিন উইকেটে জিতে চলে গেল আরও একটি বিশ্বকাপ ফাইনালে।  আগামী রবিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে প্য়াট কামিন্সরা (Pat Cummins) খেতাবি যুদ্ধে নামবেন রোহিত শর্মাদের (Rohit Sharma) বিরুদ্ধে। পাঁচবারের বিশ্বচ্য়াম্পিয়নরা খেলবে দু'বারের চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত খেলেছিল রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। ফাইনালে ভারত হেরেছিল ১২৫ রানে। এবার রোহিতদের সামনে সুযোগ মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: PIC: রোহিত-বেকসের জার্সিবদল, চমকে দেওয়া 'এপিক ক্রসওভার'! অবাক নেটপাড়া


দুই দশকেরও বেশি সময় বর্ণবাদের জন্য় ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯১ সালের ১০ নভেম্বর তারা বাইশ গজে ফিরেছিল। প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী ছিল কলকাতা। ইডেন গার্ডেন্সেই রামধনু দেশের ক্রিকেটের নবজন্ম হয়েছিল। সেই ইডেনেই প্রোটিয়া বাহিনীর কাছে সুযোগ ছিল ইতিহাস লেখার। ১৯৯৬ কোয়ার্টার ফাইনাল, ১৯৯৯ সেমিফাইনাল, ২০০৭ সেমিফাইনাল, ২০১১ কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৫ সেমিফাইনালের পর ২০২৩ সেমিফাইনালেও 'চোক' করল নেলসন ম্য়ান্ডেলার দেশ! 


এদিন ইডেনে টস জিতে টেম্বা বাভুমা প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। বলা ভালো নিজেই দলের বিপদ ডেকে আনেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া মেঘলা ইডেনের সুযোগ নিয়ে শুরুতেই যা আঘাত করার করে দেয়। ১২ ওভারের মধ্য়েই প্রোটিয়াদের চার উইকেট চলে যায় মাত্র ২৪ রানের মধ্য়ে। টপ অর্ডারের তিন ব্য়াটার- কুইন্টন ডি কক (৩),  টেম্বা বাভুমা (০), রাসি ভ্য়ান ডার ডুসেন (৬) ফিরে যান। আইদেন মারক্রমও (১০) ফেরেন সাজ ঘরে। মিচেল স্টার্ক ও জোশ হ্য়াজেলউড শুরুতে দু'টি করে উইকেট নিয়ে অজিদের কাজটা সহজ করে দেয়। ১৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডে ছিল ৪৪ রান। তখনই বৃষ্টি আসে। খেলা বন্ধ থাকে বেশ কিছুক্ষণ। 


এরপর যখন খেলা শুরু হয়, তখন হেনরিক ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার চেষ্টা করেন দলকে একটা ভদ্রস্থ স্কোর উপহার দেওয়ার। ১১৩ বলে তাঁদের ৯৫ রানের যুগলবন্দি হয়। ৪৮ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান ফেরেন ক্লাসেন। এরপর আর কোনও ব্য়াটারই সেভাবে ক্রিজে থাকতে পারেননি। একাই লড়াই চালিয়ে যান মিলার। 'কিলার মিলার' ১১৬ বলে ১০১ (আটটি চার ও পাঁচটি ছয়) করেন এদিন। প্য়াট কামিন্সের বলে ট্র্য়াভিস হেডের হাতে ক্য়াচ তুলে ফিরে যান মিলার। যদিও এদিন ইডেনে ইতিহাসই লিখেছেন মিলার। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনও ব্য়াটারই বিশ্বকাপের নকআউট ম্য়াচে সেঞ্চুরি করতে পারেননি। স্টার্ক-কামিন্স পেলেন তিনটি করে উইকেট। দুই উইকেট হ্য়াজেলউড-হেডের।


মনে করা হয়েছিল যে, অস্ট্রেলিয়া অনায়াস জয়ে অনেক আগেই খেলা শেষ করে দেবে। তবে যেমনটা ভাবা হয়েছিল তেমনটা ঘটেনি। কম রানের ম্য়াচে অনেক সময়ে সাসপেন্স থ্রিলার হয়ে যায়। এদিনও ঠিক সেরকমই একটা রহস্য়-রোমাঞ্চের গল্প লিখে দিচ্ছিলেন প্রোটিয়া বোলাররা। প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে ছিল চমক। এত কম রান তাড়া করতে নেমেও অজিদের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছিল একটা সময়। ১৩৭ রানে চলে গিয়েছিল পাঁচ উইকেট। স্পিনারদের দাপটে কপালে ঘাম জমতে শুরু করে দেয় অজিদের। আট ওভারের মধ্য়ে অজিদের প্রথম দুই উইকেট চলে যায় ৬১ রানে। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার (২৯) ও তিনে নামা  মিচেল মার্শ (০) ফিরে যান। সেট হয়ে যাওয়া ট্র্য়াভিস হেডকেও (৪৮ বলে ৬২) কেশব মহারাজ ক্লিন বোল্ড করে দেন। এরপর মার্নাস লাবুশানে (১৮) ও গ্লেন ম্য়াক্সওয়েল (১) ফিরে যান। কোথাও যেন প্রোটিয়ারা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছিলেন। অজিদের রক্তচাপ আরও বাড়তে শুরু করে দেয়। চারে নামা স্টিভ স্মিথ (৬২ বলে ৩০) আউট হতেই, দক্ষিণ আফ্রিকা কার্যত উল্লাস শুরু করে দিয়েছিল। এরপর সাতে নেম জোশ ইংলিস (৪৯ বলে ২৮) ধীরে ধীরে অজিদের জন্য় ম্য়াচটাকে নিয়ে আসতে শুরু করেন। কিন্তু তিনিও আউট হয়ে যান। তবে সাতে ও নয়ে নামা মিচেল স্টার্ক (৩৮ বলে ১৬) ও ক্য়াপ্টেন কামিন্স (২৯ বলে ১৪) অপরাজিত থেকে ম্য়াচ বার করে আনেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছিল সাসপেন্সের রেশ। ১৬ বল হাতে রেখে তিন উইকেটে জিতে যায় অজিরা। এদিন জেরাল্ড কোয়েটজি ও তাবরেজ শামসি নিলেন দু'টি করে উইকেট। কাগিসো রাবাদা, আইদেন মারক্রম ও কেশব মহারাজ নিলেন একটি করে উইকেট।


আরও পড়ুন: SA vs AUS Semi-Final | World Cup 2023: ইডেনে ইতিহাস লিখলেন 'কিলার মিলার'! যা অতীতে তাঁর দেশের কেউ করেননি



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)