সুখেন্দু সরকার :  চোখে দেখতে পান না, কিন্তু তাতে কি! দৃষ্টিহীনতা দমিয়ে রাখতে পারে নি বছর চল্লিশের মহম্মদ আসিফ ইকবালকে। স্রেফ মনোবলেই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে গতবারের মতো এবারও TSK25K রানে অংশ নেবেন আসিফ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন - সুনীল-বিরাটের টুইট 'গোল্ডেন টুইট'!


২০১৭ সালে TSK25K রানের পাঁচ কিলোমিটার ইভেন্টে এবং এয়ার টেল ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন আসিফ। আসিফ গতবার সহযোগী বিশ্বজিত্ গুড়িয়া এবং দেবেন্দ্র সিংয়ের ভয়েস ইনস্ট্রাকশন শুনে দৌড়েছিলেন। কিন্তু এবার TSK25K রানে হাত না ধরেই দৌড়বেন। গত বছর পাঁচ কিলোমিটারে দৌড়লেও এবার দশ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নেবেন তিনি। দৃষ্টিহীন হয়েও আসিফের দৌড়ের অনুপ্রেরণা কী? উত্তরে আসিফ ইকবাল বলেন, "আমার হাইপারটেনশন ছিল, আর সেটা আমাকে ভাবাতে থাকে। যে চল্লিশ বছর বয়স হওয়ার আগেই হাইপারটেনশন হয়েছে আমার। আগামী দিনে হয়তো ডায়াবেটিস কিংহবা কোলেস্টেরল ধরবে আমার। স্বাস্থ্য নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণেই একদিনে দৌড় শুরু করি। তাছাড়া আমার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী মাত্র ৩২ বছর বয়সে হার্ট-অ্যাটাকে মারা যায়। ওই ঘটনা আমার কাছে অ্যালার্মিং।" সঙ্গে তিনি যোগ করেন, "আগে আমার ওজন ছিল ১০৮ কেজি, বর্তমানে ৯৬ কেজি, দৌড়ে দৌড়ে ওজন কমেছে। এবার আমার লক্ষ্য ৮৫ কেজি করা।"


আরও পড়ুন - ‘চোট সারিয়ে হাঁটাচলা করছে’, দ্রুত আরোগ্যের পথে পৃথ্বী


জন্ম থেকেই ভালো ভাবে দেখতে পেতেন না আসিফ। ১৬ বছর বয়সে সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। কিন্তু তাতে অবশ্য দমে যান নি ভাগলপুরের আসিফ। ভয়েস অ্যাক্টিভেটেড সফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটার ব্যবহার করতে শেখেন। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্জ কলেজ থেকে তিনিই প্রথম দৃষ্টিহীন কমার্স গ্র্যাজুয়েট। এরপর সিমবায়োসিস পুণে থেকেও তিনিই প্রথম দৃষ্টিহীন এমবিএ হিসেবে উত্তীর্ন হন। ভারতে ডিজিট্যাল ইনক্লুশনের উন্নতির লক্ষ্য নিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিএজে আবদুল কালাম এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ইতিমধ্যেই জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট রোল মডেল অ্যাওয়ার্ড, একস্ট্রা অর্ডিনারি সিটিজেন অব কলকাতা অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছেন। ক্রীড়াক্ষেত্রে কোনও রোল মডেল নেই আসিফের। নিজের সঙ্গে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই পছন্দ তাঁর। তাই তো বলেন, "আজকের চেয়ে আগামিকাল ভাল করতে হবে।" সেই আগামীর লক্ষ্যেই দৌড়ে যেতে চান আসিফ।