নিজস্ব প্রতিবেদন : কোথাও এক ফোঁটা খামতি নেই। সব দিকে সব কিছু পরিপাটি করে সাজানো। ইতিহাস, ঐতিহাসিক, চাঁদের হাট, সাজানো-গোছানোর মতো শব্দগুলোর নিয়মিত আনাগোনা চলছে এদিক ওদিক। কলকাতার ইডেনে আজকের সূর্যোদয় আরও ঝকঝকে। শুক্রবারে অফিস-টফিস কামাই করে ক্রিকেটপ্রেমীদের আনাগোনাও আছে রেকর্ড হারে। তা হলে নেই-টা কী? ক্রিকেট! এমন হয় অনেক সময়, সমস্ত সাজগোজের পরও ফাঁকা ফাঁকা লাগে। এই যেমন মন্দিরে পুজো হবে। উপাচারের সব আয়োজন রয়েছে। পুজারির মন্ত্রোচ্চারণে দিকবিদিক গমগম করছে। বিগ্রহ সেজেছে হীরে-জহরতে। কিন্তু পূণ্যার্থীদের মনে ভক্তি নেই! তা হলে আর কীসের পুজোর আয়োজন! ইডেনও যেন সেটাই হল। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মনে ক্রিকেট-পুজোর জন্য ভক্তিভাবটাই নেই। ফলে সব আয়োজনে চুইয়ে পড়ল জল। দুঘণ্টার দুঃস্বপ্ন দেখে উঠল যেন বাংলাদেশ। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

৫০ রানের গণ্ডি পেরনোর আগেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। মাত্র ৩৮ রানে যখন পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে শ্মশানের নিস্তব্ধতা, ইডেনের গোলাপি টেস্টের বয়স তখন মাত্র দেড় ঘণ্টা। দর্শকরা ইশান্ত শর্মা, শামি আহমেদ, উমেশ যাদবদের আগুনে বোলিং দেখে হাততালিতে গর্জাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু কোথাও যেন ক্রিকেটের জন্য বুকে চাপড়ানিও রইল। এ কোন বাংলাদেশ! এ কেমন ক্রিকেট! গোলাপি বলের ঐতিহাসিক টেস্ট যেন ম্যাড়ম্যাড়ে করে ছাড়ল বাংলাদেশের ছ্ন্নছাড়া ব্যাটিং লাইন। এত আয়োজনের মাঝে ক্রিকেট রয়ে গেল একা। আড়ম্বর, আতিশয্য ক্রিকেটকে ছাপিয়ে বড় হয়ে দেখা দিল।


আরও পড়ুন-  গোলাপি বলে দিন-রাতের টেস্টে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ফিল্ডিং: বিরাট কোহলি



সাত উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। ইন্দৌরের বাংলাদেশ দলকে দেখে অনেকে দুর্বল বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু ইডেনের বাংলাদেশ যেন দুর্বলদের তালিকার লাস্ট বয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তো অনেকে বাংলদেশের টেস্ট মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার সওয়ালও করলেন। দিল্লিতে টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ ছাড়া বাংলাদেশ একবারের জন্যও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি গোটা ভারত সফরে। বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলকে ফেস করার জন্য যে মানসিক দৃঢ়তা ও স্কিল-টেকনিকের প্রয়োজন ছিল তার ধারে-কাছেও যায়নি এই বাংলাদেশ দল। শাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের মতো তারকারা আসেননি। কিন্তু এই দুজনের না আসায় কি এতটাই তফাত হয়ে গেল! প্রশ্ন উঠছে।


বাংলাদেশের ওপেনার শাদমান ইসলাম (২৯) ও ইমরুল কায়েস (৪) এই ম্যাচেও রান পেলেন না। অধিনায়ক মোমিনুল হক খাতাই খুলতে পারেননি। শূন্য রানে ফেরেন আরও দুই বাংলাদেশি। মহম্মদ মিঠুন ও মুশফিকুর। গত ম্যাচে তবু সম্মানজনক জায়গায় দলকে দাঁড় করিয়েছিলেন মুশফিকুর। এবার তিনি পারলেন না। পারল না বাংলাদেশ। গোলাপি বলের প্রথম টেস্ট যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। তবে ইডেন মনে রাখবে। ক্রিকেট ইতিহাসে সবই তো তোলা থাকে! 


১০৬ রানে শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের ইনিংস। পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ইশান্ত শর্মা। তিন উইকেট তুলেছেন উমেশ।দুটি শামি।