শুভপম সাহা: রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন এবারও অধরাই থেকে গেল বাংলার! সেমিফাইনাল হেরেই বেঙ্গালুরুর আলুর থেকে ফিরছেন মনোজ তিওয়ারি-অভিমন্যু ঈশ্বরনরা। ২০১৯-২০ মরশুমে বাংলা রানার্স হয়েছিল। ১৯৮৯-৯০ মরশুমের পর আর রঞ্জি ট্রফি ছুঁয়ে দেখা হয়নি বাংলার।  বাংলাকে শেষবার রঞ্জি ট্রফি জেতানোর অন্যতম কাণ্ডারী ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার প্রণব রায় (Pranab Roy)। শনিবার বাংলা-মধ্য়প্রদেশ ম্য়াচের পর জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন প্রণব। জানালেন কোথায় বাংলার সমস্যা, কী বা আগামীর করণীয়! আর তুলে দিলেন অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। চোখ রাখুন প্রতিবেদনে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


প্রণবের চোখে সেমিফাইনাল ম্যাচ ও বাংলার সাম্প্রতিক রঞ্জি পারফরম্যান্স


"সবসময় যে রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হলেই যে বাংলা ভাল, প্লেয়াররা দারুণ আর সেমিফাইনালে হেরে গেলে খারাপ! সে কথা বলব না। এমনটা নয়। আসলে ওপরের দিকে যখন বাংলা ওঠে, কোথাও যেন সারভাইভালের জন্য খেলে। অনান্য সময় বাকি রাজ্যগুলির সঙ্গে কিন্তু ভাল খেলে বাংলা। এবারও যথেষ্টা ভাল খেলেছে। ঘরামিও শেষ ম্যাচে ভাল খেলল। মনোজ এত বয়সেও পরপর সেঞ্চুরি পেল। দারুণ খেলেছে। কথায় আছে 'গুড ইনিংস ইন প্যাচেস'! দরকারের সময় বাংলা কিছু কিছু জায়গায় মিস করে গিয়েছে। বাংলা দু'টি ইনিংস পেয়েছিল। বোলাররা কিন্তু বাংলাকে এক সময় ভাল জায়াগায় এনে দিয়েছিল। ফাইনালে খেলতে গেলে ৩৫০ করতেই হত। উইকেট বড় রোল প্লে করেছে। খেলা সহজ ছিল না। চতুর্থ ইনিংসে খুব ভাল শুরুটা করতে হতো। বড় রানের ইনিংস পাওয়া গেল না এদিন। বিনা উইকেটে ১০০ বা ১৫০-এর মতো পার্টনারশিপ আসেনি কোনও। একটা টুর্নামেন্ট নিয়ে এভাবে বলাটা কঠিন সেঅর্থে। দেখতে গেলে সবাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রান করেছে। বোলিং খুব ভাল হয়েছে। নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণ। গতবছর আমরা ভাল খেলেছি। এরকম নয় যে, বাংলা গ্রুপ লিগেই উঠতে পারছে না। সেটা মাঝখানে হয়েছিল। এখন কিন্তু সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসেছি আমরা। কোয়ার্টার ফাইনাল বা ফাইনাল খেলছি। দীপ এবং অভিমন্যুর ক্যাপ্টেনসিতে বেশ কয়েকবার ফাইনাল খেলে ফেললাম আমরা। এটা বলতে পারি অবশ্য়ই বাংলার এবার ফাইনালে গিয়ে ভাল খেলার কথা ছিল।"


আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলার প্রতিনিধিত্ব নিয়ে প্রণবের প্রশ্ন


"এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলা থেকে কোনও ক্রিকেটার নেই। বাংলাকে আরও অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার তৈরি করতে হবে। একজন প্রাক্তন ক্রিকেটার ও কোচ হিসাবে আমি মনে করি, যে বাংলা আন্তর্জাতিক তারকা তৈরি করতে পারছে না। এখান থেকে প্লেয়ার বেরিয়ে আসছে না। যে পরিকাঠামো রয়েছে তা আরও শক্তিশালী করতে হবে। শুধু পরিকাঠামোর উন্নতিই নয়, সেটা ঠিক মতো চলছে কিনা সেটাও দেখতে হবে। এমন নয় যে, পরিকাঠামো খারাপ। যখন পরিকাঠামো রেজাল্ট দিতে পারে না তখন অবশ্যই তারওপর আরও বেশি করে জোর দিতে হবে। জুনিয়র ক্রিকেটে আরও জোর দিতে হবে। ছোট গাছকে জল, রোদ্দুর, মাটি ঠিক মতো দিলে তবেই সে গাছ বড় হবে। যদি ইতিহাস দেখা যায়, তাহলে দেখব সেই আমাদের সময় (১৯৮৯-৯০) থেকেই বাংলা ভিন রাজ্যের ক্রিকেটারদের ওপর নির্ভরশীল। আমি বলছি না, অন্য রাজ্যের ক্রিকেটাদের খেলানো খারাপ। আমি বলতে চাই যে, নিজেদের রাজ্য থেকে ক্রিকেটার তুলে আনতে হবে। বাইরের রাজ্য়ের ক্রিকেটাররা খেলুক না, কোনও ক্ষতি নেই। তাতে বরং প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে। সকলকে শ্রদ্ধা জানিয়েই কথাগুলো বললাম। রাতারাতি কিছু হয় না। গাছে জল দেওয়া হচ্ছে না, সেটা বলছি না। বাংলার ক্রিকেটের উন্নতির জন্য পরামর্শ এটাই। রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হওয়া বড় কথা নয়। একটি টুর্নামেন্ট শুধু। জেতা না জেতায় বিরাট কিছু ফারাক পড়ে না। আমাদের দেখতে হবে বাংলার হয়ে কে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। এটাই বড় চিন্তার। অনেক টিমই রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হয় না। কিন্তু তাদের প্লেয়াররা দেশের হয়ে খেলছে। ঝাড়খণ্ড রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে না। কিন্তু ঈশান কিশান খেলছে ভারতীয় দলে। বাংলা থেকে ঋদ্ধিমানের পর আর কেউ নেই! এই দিকেই আমাদের নজর দিতে হবে অনেক বেশি করে! বাংলার ক'জন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে? ঋদ্ধির পর আর নাম নেই! এটাই আমার বৃহত্তর চিন্তার কারণ।"


আরও পড়ুন: দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয় বাংলার, রঞ্জি ট্রফি জয়ের স্বপ্ন অধরাই মনোজ-অভিমন্যুদের


আরও পড়ুনRishabh Pant-Sunil Gavaskar: '১০ বার ভুল করেও কোনও শিক্ষা নেয়নি!' পন্থের উপর ফুঁসছেন গাভাসকর


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)