সব্যসাচী বাগচী: গত দুই মাস ভেঙ্কটেশ আইয়ার (Venkatesh Iyer) যেন স্বপ্নের জগতে বসবাস করছেন! আইপিএল-এর (IPL) দ্বিতীয় পর্বে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) জার্সি গায়ে চাপিয়ে রাজকীয় অভিষেক! ১০ ম্যাচে মারকুটে মেজাজে ৩৭০ রান। গড় ৪১.১০, স্ট্রাইক রেট ১২৮.৫। সেই সুবাদে প্রথমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (WT20) ভারতীয় দলে নেট বোলার হিসেবে সুযোগ পাওয়া। আর এ বার রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) যুগ শুরু হতেই টিম ইন্ডিয়ার (Team India) ড্রেসিংরুমে সুযোগ পেয়ে গেলেন মধ্যপ্রদেশের এই অলরাউন্ডার। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবর বেশ অদ্ভুত ভাবে তাঁর কাছে এসেছিল। সেই বৃত্তান্ত ছাড়াও ক্রিকেটীয় উত্থানের নানান দিক নিয়ে জি ২৪ ঘণ্টাকে টেলিফোনে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন বিস্ফোরক বাঁহাতি ব্যাটার।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রশ্ন: ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবর আপনার কানে কীভাবে এল? 


ভেঙ্কটেশ: মঙ্গলবার সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় কেরলের কাছে হেরে যাওয়ার পর হোটেলের ঘরে বই পড়ছিলাম। হঠাৎ আমার ঘরের দরজায় আবেশ খান খুব জোরে ধাক্কা দিচ্ছিল। সেই আওয়াজে কিছুটা বিরক্ত হয়েছিলাম। তবে দরজা খুলতেই ও আমাকে বুকে জড়িয়ে সুখবর শোনায়। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য স্বভাবতই আনন্দ হচ্ছিল। তবে সেই আনন্দের মাত্রা বেশি হওয়ার কারণ হল বন্ধু আবেশও কিন্তু আমার মতো প্রথমবার সিনিয়র দলে সুযোগ পেল। 


প্রশ্ন: খুশির খবর পাওয়ার পর আপনার প্রথম প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?


ভেঙ্কটেশ: আগেও বললাম যে খুশি হয়েছি। তবে বাড়তি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করিনি। কারণ আমি জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে ক্ষান্ত থাকতে চাই না। প্রথম একাদশে  জায়গা করে নেওয়া আমার আসল টার্গেট। রোহিত ভাইয়ের নেতৃত্বে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। আমার ধারণা রোহিত ভাইয়ের নেতত্বে দল দারুণ পারফরম্যান্স করবে। 


আরও পড়ুন: INDvsNZ: কেন Rohit Sharma-কে সতর্ক করলেন Sunil Gavaskar?


প্রশ্ন: এত দ্রুত জাতীয় দলে সুযোগ পাবেন, সেটা ভেবেছিলেন?


ভেঙ্কটেশ: ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আইপিএল, সব জায়গায় ছন্দে ছিলাম। তাই আশাহত হওয়ার কোনও কারণ ছিল না। তবে সত্যি বলতে এত তাড়াতাড়ি ডাক আসবে সেটা ভাবতেও পারিনি। 



প্রশ্ন: আপনার পরিবার তো অবশ্যই গর্বিত। বাবা-মা'র প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? 


ভেঙ্কটেশ: আমার ক্ষেত্রে কিন্তু ব্যাপারটা একেবারে উল্টো। আমি বরং আমার পরিবারের জন্য গর্বিত। কারণ ছোট থেকে ক্রিকেটের প্রতি প্যাশন থাকলেও, পরিবারের ইচ্ছায় এমবিএ পড়তে শুরু করেছিলাম। কিন্তু বাইশ গজের প্রতি প্রেম কমেনি। তাই লেখাপড়ার সঙ্গে একযোগে ক্রিকেট চালিয়ে গিয়েছি। মন দিয়ে ক্রিকেট খেলতাম বলেই ২০১৮ সালে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফিতেও অভিষেক হল। আর তারপর থেকেই ক্রিকেটকে পেশাদার মানসিকতা দিয়ে খেলতে শুরু করেছিলাম। আমার বাবা, মা ও বিশেষ করে দিদি সব সময় আমাকে ভরসা জুগিয়ে গিয়েছেন। তাই ওদের জন্য আমি গর্বিত। 


প্রশ্ন: আপনাকে কিন্তু হার্দিক পান্ডিয়ার বিকল্প বলে মনে করা হচ্ছে। চাপ অনুভব করছেন? 


ভেঙ্কটেশ: আমি কোনওদিন চাপ অনুভব করিনি। যারা আমাকে ছোট থেকে দেখেছেন তাঁরা খুব ভাল ভাবে জানেন। নিজেকে কখনই হার্দিক পান্ডিয়ার বিকল্প বলে মনে করছি না। বরং আমি একজন প্রকৃত অলরাউন্ডার হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেকে তুলে ধরতে চাইছি। তাই শুধু সাদা বল নয়, লাল বলের ক্রিকেটেও একই একাগ্রতা বজায় রাখি। আধুনিক সময় দেশের হয়ে সাফল্য পেতে হলে সব বিষয়ে পারদর্শী হওয়া প্রয়োজন। আমি সেই লক্ষ্য নিয়েই রোজ অনুশীলন করি। বাকিটা মাঠে নামলে বোঝা যাবে। 


আরও পড়ুন: INDvsNZ: বিশ্রামে Virat! প্রত্যাশা মতোই ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের পূর্ণ দায়িত্ব পেলেন Rohit Sharma


প্রশ্ন: আইপিএল থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বিরাট কোহলির সঙ্গে সময় কাটানোর অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? 


ভেঙ্কটেশ: আরসিবি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ ছাড়াও ভারতীয় দলের নেটে কয়েক দিন কাটিয়েছিলাম। তারপর মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য দেশে ফিরে আসতে হয়েছিল। তবে যে কয়েক দিন সেখানে ছিলাম সেগুলো ছিল আমার কাছে অন্যতম সেরা দিন ছিল। বিরাট ভাই সব সময় আমাকে উজ্জীবিত করতেন। ব্যাটের সঙ্গে যাতে বোলার হিসেবেও সফল হতে পারি সেই বিষয়ে বিরাট ভাইয়ের কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেয়েছি। 



প্রশ্ন: আচ্ছা আপনার জীবন কতটা বদলে গিয়েছে? আইপিএল-এর পর কতটা পরিণত হয়েছেন আপনি?


ভেঙ্কটেশ: সত্যি কথা বলতে, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে একই রকম কথাবার্তা হয়। তাদের কাছে কখনওই আমি আলাদা হতে পারব না। আমার ছোটবেলার বন্ধুদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ আছে। জৈব বলয়ের মধ্যে থাকার জন্য তো সবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে চাপমুক্ত হতাম। আর ক্রিকেটার হিসেবে কতটা পরিণত হলাম সেটা তো নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামলে বোঝা যাবে। 


প্রশ্ন: ছোটবেলা থেকেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভক্ত। দাদার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন? 


ভেঙ্কটেশ: ছোটবেলা থেকে ডান হাতে ব্যাট করতাম। তবে দাদাকে দেখার পর থেকে বাঁহাতে ব্যাট করতে শুরু করে দিয়েছিলাম। ওঁর মতো শট মারা নকল করতাম। ধীরে ধীরে কখন যে আগ্রাসী মনোভাবের বাঁহাতি ব্যাটার হয়ে গেলাম বুঝতেই পারিনি। এ বার ফাইনাল ম্যাচের পর দাদা-র সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিলাম। উনি শুধু খোলা মনে খেলার পরামর্শ দিয়েছেন। 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)