জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আর্জেন্টিনা (Argentina) এবং নেদারল্যান্ডসের (Netharlands) মধ্যে ফুটবল ইতিহাস একেবারে আদায় কাঁচকলা! ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় সময় রাত ১২:৩০ মিনিটে নামবে দুই দল। এখনও পর্যন্ত দুই দলের সাক্ষাতে নেদারল্যান্ডসের পাল্লাই ভারী। মোট নয় ম্যাচে ডাচদের ঝুলিতে এসেছে চারটি জয়। সেখানে আর্জেন্টিনা জিতেছে মাত্র দুই ম্যাচে। যদিও এরমধ্যে একবার মেগা ফাইনাল জিতেছিলেন লিওনেল মেসিদের পূর্বসূরিরা। বাকি তিন ম্যাচ ড্র হয়েছিল। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার দুটি দল প্রথমবার ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপের মঞ্চে লড়েছিল। চার বছর পর ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল ছিল নানা কারণে বিতর্কিত। নিজেদের মাঠ বুয়েনোস আইরেসে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েই প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু সেই ফাইনালে নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পাঁচ মিনিট পর মাঠে নামে নীল-সাদা বাহিনী। নানাভাবে ডাচ ফুটবলারদের চাপে রাখার চেষ্টা করে তারা। আপত্তি জানানো হয় রেনে ভ্যান ডার কারকফের হাতের প্লাস্টার নিয়েও। নেদারল্যান্ডস দল উঠে যেতে চায় মাঠ থেকে। যদিও আর্জেন্টিনার আপত্তি মেনে নেননি রেফারি। কারকফ হাতে বাড়তি ব্যান্ডেজ নিয়েই নামেন মাঠে। যদিও এর প্রতিবাদে ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে ছিল না নেদারল্যান্ডস।


শুধু তাই নয়, দর্শক ব্যবহার করে মাঠে ব্যাপক শব্দ তৈরি করে ফাইনাল ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের মনোসংযোগেও নাকি ব্যাঘাত ঘটানো হয়েছিল। ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে নাকি আর্জেন্টিনা ম্যাচ গড়াপেটা করেছিল। সেটা নিয়ে এখনও বিতর্কের শেষ নেই। তাই আলবিসেলেস্তেদের প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা যে নিষ্কলঙ্ক, তা জোর গলায় নিজেরাও দাবি করে না।



আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2022: সাংবাদিক বৈঠকে ঘাড় ধরে ছুড়ে ফেলা বিড়াল কি ব্রাজিলের রাস্তা কাটবে? দেখুন ভাইরাল ভিডিয়ো


আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2022: মেসি-নেইমারদের কোয়ার্টার ফাইনালে সবচেয়ে বড় বাধা কে? জেনে নিন


বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে তখন রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতি। বি গ্রুপে ছিল আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, পোল্যান্ড, পেরু। শীর্ষে থাকা দল সরাসরি খেলবে ফাইনাল। প্রথম ম্যাচে পেরুকে ৩-০ গোলে হারিয়ে দেয় ব্রাজিল। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনার জয় ছিল ২-০ গোলে। পরের রাউন্ডে পোল্যান্ড আবার পেরুকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয়। তবে বিপত্তি বাধে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হওয়ার জন্য। দ্বিতীয় পর্বের শেষ রাউন্ডে স্পষ্ট সমীকরণ ছিল, আলবিসেলেস্তেদের ফাইনাল খেলতে হলে সেলেকাওদের গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দিতে হবে। শোনা যায় পেরু ম্যাচ নিয়ে গড়াপেটার পরিকল্পনা শুরু তখন থেকেই। 


আর্জেন্টিনার এগিয়ে যাওয়া আরও সহজ হয়ে যায় বিশ্বকাপ সূচির কল্যাণে। ফাইনাল নির্ধারণী ম্যাচে পোল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারায় ব্রাজিল। এর প্রায় তিন ঘণ্টা পর পেরুর বিরুদ্ধে মাঠে নামে আলবিসেলেস্তেরা। ফলে ফাইনালের টিকিট পাওয়ার জন্য আর্জেন্টিনার কাছে খুব সহজ হিসাব ছিল। ব্রাজিলকে পিছনে ফেলে, ফাইনাল খেলতে হলে আর্জেন্টিনার দরকার ছিল কমপক্ষে চার গোলের জয়। সেই ম্যাচে পেরুর ৬-০ গোলে হারায় চেজার লুইস মেনত্তির দল। বিশ্বকাপ থেকে ছিটেকে পড়ে ব্রাজিল। ফাইনালের টিকিট পায় মারিও কেম্পেসরা। এবং নিজেদের দেশে ডাচদের ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনাল জিতেও যায় আর্জেন্টিনা। 


সে যাই হোক, সেবারের পরও বিশ্বকাপের মঞ্চে বেশ কবার মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডস। তবে আগের সেই বৈরিতা দেখা যায়নি। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর নানা চড়াই উতরাই এর মধ্যে দিয়ে গিয়েছে ডাচ ফুটবল। কোয়ালিফাই করতে পারেনি ২০১৬ ইউরো এবং ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে। গত সাত বছরে সাতবার কোচ বদল হয়েছে। তবে অবশেষে তৃতীয় দফায় গত বছর দায়িত্ব পেয়েছেন সেই লুই ফন গাল। ৭১ বছর বয়সী এই কোচ দলের দায়িত্ব নেয়ার পর কোনও ম্যাচ হারেনি নেদারল্যান্ডস। অপরাজিত আছে ১৯ ম্যাচে। দলের অভিজ্ঞ আর তরুণদের রসায়ন জমেছে দারুণভাবে। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত যে দলগুলো অপরাজিত আছে তাদের মধ্যে নেদারল্যান্ডস অন্যতম। তরুণ এই দলটাই তিনবার ফাইনালের মঞ্চ থেকে খালি হাতে ফেরা ডাচদের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। তবে তাদের স্বপ্ন চুরমার করে দিতে তৈরি মেসির আর্জেন্টিনা। 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)