সব্যসাচী বাগচী 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ক্রোয়েশিয়া: ২ ('৭ গুয়ার্দিওল, '৪২ মিসলাভ ওরসিচ)


মরক্কো: ১ ('৯ আশরফ দারি) 


চারটি বিশ্বকাপ খেলে ফেললেও বিশ্বজয়ী হওয়ার, বিশ্বকাপ হাতে তোলার সাধ পূর্ণ হল না। গতবার ফ্রান্সের (France) কাছে তাঁকে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। এর এবার তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল আর্জেন্টিনার (Argentina) বিরুদ্ধে সেমি ফাইনাল হেরে। তবে তাই বলে আন্তর্জাতিক মঞ্চের শেষ ম্যাচটা কিন্তু মোটেও দুঃখের হল না। বরং লড়াকু ও দাপুটে ফুটবল খেলা মরক্কোর (Morocco) বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জিতল ক্রোয়েশিয়ার (Coratia) 'এল এম টেন'-এর (LM 10) দল। ফলে ফেয়ারওয়েল ম্যাচ জিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন ক্রোয়েশিয়ার সর্বকালের সেরা ফুটবলার লুকা মদ্রিচ (Luka Modric)। এর আগে ১৯৯৮ সালেও তৃতীয়স্থানে শেষ করেছিল ক্রোয়েশিয়া। সেবার নেদারল্যান্ডসের (Netherlands) বিরুদ্ধে জয় এসেছিল ১-২ গোলে। কাকতালীয়ভাবে এবারও একই ফলাফল। 


১৮ ডিসেম্বর লুসেল স্টেডিয়ামে কোন ফলাফল অপেক্ষা করছে জানা নেই। তবে খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের নির্বিষ ম্যাচটা কিন্তু বেশ উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়ে চলে গেল। এমনিতে কাপ যুদ্ধের তৃতীয় ও চতুর্থস্থানের ম্যাচ নিয়ে আম জনতার তেমন মাথাব্যথা নেই। সবাই আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্স, লিওনেল মেসি বনাম কিলিয়ান এমবাপের ডুয়েল নিয়েই মজে আছেন। তবে ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কোর সমর্থকদের নিজেদের নিয়েই আগ্রহ তুঙ্গে। আর সেটাই স্বাভাবিক। কারণ একদিকে যেমন এটা ছিল লুকা মদ্রিচের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ, তেমনই আফ্রিকান জায়ান্টরা নিজেদের ফের একবার দুরন্ত প্রমাণ করার তাগিদ নিয়ে ৯০ মিনিটের যুদ্ধে নেমেছিল। 


বিশ্বকাপের খেতাবি লড়াই থেকে ছিটকে যাওয়ার পর তৃতীয় স্থান নির্ধারক ম্যাচে দু'দলই নেমেছিল অনেকটা চাপমুক্ত হয়ে। সম্ভবত সেকারণেই নিজেদের সেরা আক্রমণাত্মক খেলাটা খেলতে ভয় পায়নি। ক্রোয়েশিয়া এবং মরক্কোর সেই মনখোলা ফুটবল মন ভাল করে দিল ফুটবলপ্রেমীদের। উপভোগ্য টানটান ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়া জিতে গেলেও প্রশংসার দাবি রাখে মরক্কো।



৭ মিনিটে সেট পিস থেকে একটি দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। বাঁ-দিক থেকে ফ্রি-কিক নেন মদ্রিচ। ইভান পেরিসিচ সেই রানিং বলকে হেড দিয়ে বক্সের ভিতর নিয়ে যান। সেখান থেকে আবার হেডে গোল করে ক্রোয়েটদের এগিয়ে দেন গুয়ার্দিওল। এটিকে হেডারে জালে জড়ান।




তবে এগিয়ে গেলেও সেই যাত্রায় লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। মাত্র দুই মিনিট (পড়ুন ১১২ সেকেন্ড) পরেই সমতায় ফেরে মরক্কো। হাকিম জিয়েচ ডানদিকে প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে বল পাঠান। মদ্রিচ অজান্তেই ক্রোয়েশিয়ান গোলের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন বল ক্লিয়ার করার জন্য। তবে আশরাফ দারি বলটি পেয়ে লিভাকোভিচকে কাটিয়ে হেডে জালে জড়াতে ভুল করেননি। ফলে সমতা ফেরায় মরক্কো। 


পুরো প্রতিযোগিতায় দারুণ ছন্দে একের পর এক সেভ করেছিলেন মরক্কোর গোলকিপার ইয়াসিন বোনো। তবে এবার আর পারলেন না। ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য বিপক্ষের বক্সে একাধিক পাস খেলতে শুরু করলেন ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলার। ৪২ মিনিটে বক্সের কোনাকুনি জায়গা থেকে দারুণ শটে গোল করলেন মিসলাভ ওরসিচ। পোস্টে লেগে জালে বল জড়াতেই ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া।  




এই মরক্কো দলটা কাপ যুদ্ধের প্রথম ম্যাচেই ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করেছিল। এরপর একে একে 'আফ্রিকান জায়ান্ট'-দের হার মানে বেলজিয়াম, স্পেন ও পর্তুগাল। কিন্তু সেমি ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হারের হতাশা ও চোট-আঘাত থেকে বেরোতে পারল না ওয়ালিদ রেগরাগুইয়ের ছেলেরা। শেষ ম্যাচেও বারবার সেটা ধরা পড়ল। তবে এবার ক্রোয়েটদের কাছে হারলেও, চার নম্বরে উঠে আসা মরক্কো দেখিয়ে দিল লড়াই কাকে বলে। 


৩৭ বছরের ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর খেলা নিয়ে যখন বিস্তর কাঁটাছেঁড়া চলছে, তখন সমবয়সি লুকা মদ্রিচ মাঝমাঠে রীতিমতো ভেলকি দেখালেন। বিশ্বমঞ্চে নিজের শেষ ম্যাচে আরও এক সাফল্য দেশকে উপহার দিয়ে গেলেন ক্রোয়েটদের 'এল এম টেন'। আরও একবার ক্রোয়েশিয়ার জার্সিতে তাঁর মাঠজুড়ে দাপিয়ে বেড়ানোর সাক্ষী থাকল ফুটবল বিশ্ব। শেষবারের জন্য।



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)