শুভপম সাহা: প্রয়াত হয়েছেন কেশব দত্ত (Keshav Datt)। অলিম্পিক্সে জোড়া সোনা জয়ী (১৯৪৮ লন্ডন, ১৯৫২ হেলসিনকি) হকি মহাতারকা মঙ্গলবার গভীর রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন সন্তোষপুরে নিজের বাসভবনে। ৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রীড়ামহলে। কেশব দত্তের অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন আরেক সোনা জয়ী অলিম্পিয়ান গুরুবক্স সিং (Gurbux Singh)। জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালে কেশব দত্তের স্মৃতিচারণ করলেন গুরুবক্স সিং।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গুরুবক্স বলছেন, "দেখুন আমরা যখন কলকাতায় এলাম, বড় হয়ে উঠলাম, তখন কেশব দত্ত, লেসলি ক্লডিয়াস, বলবীর সিং সিনিয়র, কেডি সিংরা আমাদের নায়ক ছিলেন। ১৯৪৮ ও ১৯৫২ সালের সবাই আমাদের হিরো ছিলেন। ১৯৫৫ সালে আমরা ইউনিভার্সিটি খেললাম, তারপর ভারতীয় দলে। আমি যখন কলকাতায় এলাম, তখন কেশব কলকাতাতেই। ৫৬ সালে ওঁর অলিম্পিকে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যেতে পারেননি। ছুটি পাননি উনি। কেশব তখন মোহনবাগানে খেলেছেন। ৫৭, ৫৮ ও ৫৯ সালে ও মোহনাবাগানে খেলেছেন। আমি ইস্টবেঙ্গল ও কাস্টমসে খেলেছি তখন। আমি ওঁর বিরুদ্ধে অল্পদিন খেলেছি।"


আরও পড়ুন: Lionel Messi ও Antonella Roccuzzo: ছোটবেলা থেকে ভালবেসে জুড়ে আছেন যাঁরা


খেলোয়াড় কেশবেরও ভূয়সী প্রশংসা করলেন গুরুবক্স। তিনি বলছেন, "উনি বিরাট মানের প্লেয়ার ছিলেন। সেটা আর নতুন করে কাউকে কিছু বলার নেই। সবাই জানেন। ১৯৫২ সালের ভারতীয় হকি দল ছিল সর্বকালের সেরা। সেই টিম সুযোগ পাওয়াটাই তো বিরাট কৃতিত্বের। সেখানে কেশব দলে সুযোগ পেয়ে খেললেন এবং সোনা জিতলেন। পরপর দু'বার। অভাবনীয় সাফল্য। সোজা, সোজা লন্বা শট নিতেন। বেশি ড্রিবল করতে যেতেন না। সেন্টার হাফে পুরো আধিপত্য নিয়ে খেলতেন। ভীষণ হার্ড-হিটিং প্লেয়ার ছিলেন। চার-পাঁচ বছর ওঁর খেলা দেখেছি। অল্প সময় খেলেছি ওঁর বিরুদ্ধে। পরে অলিম্পিকে ম্যানেজার হিসেবেও গিয়েছিলেন কেশব। শুধু হকিই নয়, ব্যাডমিন্টনও কিন্তু কেশব দারুণ খেলতেন। এটাও সবাই জানে।"


মানুষ কেশবও ছুঁয়ে গিয়েছে গুরুবক্সকে। তাঁর সংযোজন, "অসাধারণ একজন জেন্টেলম্যান ছিল কেশব। মানুষ হিসেবে দুর্দান্ত ছিল। খুবই সহজ সরল মনের। খাস কলকাতার লোকই হয়ে গিয়েছিলেন। গোটা জীবন কলকাতায় কাটিয়ে দিল কেশব। আমি যখন বাংলার হয়ে খেলছি, কেশব তখন নির্বাচক ছিলেন দলের। নিয়মিত কথাবার্তা হওয়া থেকে শুরু করে দেখাসাক্ষাৎ সবই হতো আমাদের। সিসিএফসি ক্লাব ও স্যাটার্ডে ক্লাবের প্রেসিডেন্টও ছিলেন কেশব। সামাজিক দিকটাও বরাবার বজায় রেখেছেন উনি। কেশব আমার অনেকটা জুড়ে রয়েছেন। বিগত পাঁচ-সাত বছরে আমরা অনেক হকির তারকাকে হারিয়ে ফেললাম। কেশবের চলে যাওয়ায় ভারতীয় হকির অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।"  গুরুবক্স সিংয়ের কথোপকথনে এটা অত্যন্ত পরিস্কার ফুটে উঠল যে, কেশব দত্ত তাঁর কতটা কাছের ছিলেন। নিজের হিরোর সান্নিধ্য পাওয়াটা কতটা সৌভাগ্যের ছিল গুরুবক্সের কাছে।


 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)