সব্যসাচী বাগচী


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গুগল করলে দেখা যাচ্ছে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম (M Chinnaswamy Stadium, Bangalore) থেকে অ্যাডিলেড স্টেডিয়ামের (Adelaide Oval) দুরত্ব ৮, ৩৩৪ কিলোমিটার। তবুও গোলার্ধের দুই প্রান্তে থাকা দুটি স্টেডিয়াম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (ICC T20 World Cup) মঞ্চে অজান্তে একসূত্রে মিলে গেল! ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর, ছয় বছর পরেও বাংলাদেশের (Bangladesh) স্বপ্ন সফল হল না। বরং চাপের মুখে চুপসে গিয়ে ঘটল স্বপ্নভঙ্গ। সেবার মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni) নিজের ক্রিকেটীয় বুদ্ধি প্রয়োগ করেছিলেন। মুস্তাফিজুর রহমানকে (Mustafizur Rahman) রান আউট করে হেরে যাওয়া ম্যাচ টিম ইন্ডিয়াকে (Team India)জিতিয়েছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক। ছয় বছর পর ডিরেক্ট থ্রো-তে লিটন দাসকে (Litton Das) রান আউট করে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ ভারতকে জেতালেন কেএল রাহুল (KL Rahul)। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সেই দুটি মুহূর্ত ভাইরাল হয়েছে। 


লিটন দাসের হারাকিরি!- 


১৮৫ রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)-বিরাট কোহলিদের (Virat Kohli) কালঘাম ছুটিয়ে দিয়েছিলেন টাইগার্স ওপেনার। মাত্র ৭ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে তখন ৬৬ রান উঠে গিয়েছে। মাত্র ২৬ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকা লিটন দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। এরপরেই অ্যাডিলেডের আকাশে নেমে এল প্রবল বৃষ্টি। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস নিয়মে (Duckworth–Lewis–Stern Method) ১৭ রানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই বৃষ্টিই যে সাকিব আল হাসানদের (Shakib Al Hasan) স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেবে কে জানত! 




৯ ওভারে দরকার ৮৫ রান। তবে ৭.২ ওভারে প্রথম সাফল্য পেল ভারত। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের (Ravichandran Ashwin) বলকে ডিপ মিড উইকেটের দিকে ঠেলে দুই রান নিতে গিয়েছিলেন নজমুল হাসান শান্ত (Najmul Hossain Shanto)। প্রথম রান অনায়াসে নেওয়া গেলেও, দ্বিতীয় রান নিয়ে আর পপিং ক্রিজে ফিরতে পারলেন না লিটন। কেএল রাহুলের ডিরেক্ট থ্রো-তে ছিটকে গেল স্টাম্প। পুরো শরীর শুন্যে ভাসিয়ে দিলেও শেষরক্ষা হল না। রাগে গজগজ করে ডাগ আউটে ফিরে গেলেন লিটন। ৬৮ রানে ১ উইকেট হারিয়েছিল টাইগার্সরা। বাকিটা তো ইতিহাস। কারণ ৬ উইকেটে ১৪৫ রানে আটকে যাওয়ার জন্য ৫ রানে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে নেয় রোহিতের দল। 


আরও পড়ুন: Virat Kohli, ICC T20 World Cup 2022: কোহলি নাকি 'বিরাট' প্রতারক! হেরে মারাত্মক অভিযোগ আনল সাকিবের বাংলাদেশ! কিন্তু কেন?


আরও পড়ুন: Virat Kohli, ICC T20 World Cup 2022: 'কিং কোহলি'-ই সেরা, অকপটে জানিয়ে দিলেন রোহিত শর্মা


গ্লাভস হাতে ধোনির মাস্টারস্ট্রোক - 


ছয় বছর আগে ঠিক এমনভাবেই বাংলাদেশের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন ধোনি। গ্লাভাস হাতে কামাল দেখানোর জন্য মাত্র ১ রানে জিতেছিল ভারত। সেবার টাইগার্সদের টার্গেট ছিল ১৪৭। শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জয় ১০ রান দরকার ছিল। ২০তম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গল নিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (Mahmudullah Riyad)। স্ট্রাইক পেয়েই দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে (Hardik Pandya) পরপর দুটি চার মারেন মুসফিকুর রহিম (Mushfiqur Rahim)। ফলে ৩ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ২ রান। জোড়া চার মেরে সেলিব্রেশনে মত্ত ছিলেন মুসফিকুর। কিন্তু কে জানত এমন অবস্থা থেকেও বাংলাদেশ হেরে যাবে! কারণ শেষ তিন বলে তিন উইকেট হারিয়েছিল পদ্মাপাড়ের দেশ! হার্দিকের চতুর্থ বলকে তুলে মারতে গেলে ডিপ মিড উইকেটে শিখর ধাওয়ানের (Shikhar Dhawan) হাতে ধরা পড়েন মুসফিকুর। পরের বলে আবার চমক। পঞ্চম বলে আবার সাফল্য এনে দিলেন হার্দিক। এবার রবীন্দ্র জাদেজার (Ravindra Jadeja) হাতে ধরা পড়লেন মাহমুদুল্লাহ।




দুটি উইকেট পরপর হারালেও,  ১ বলে মাত্র ২ রানের দরকার ছিল। তবে শেষ বলে সাকিবদের স্বপ্নভঙ্গ ঘটবে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। মাহমুদুল্লাহ আউট হতেই স্ট্রাইকে এসেছিলেন শুভগত হোম। তখন ধোনির মাথায় ঘুরছিল অন্য পরিকল্পনা। ক্যামেরা তাঁর দিকে তাক করতেই দেখা গেল ডান হাতের কিপিং গ্লাভস মাঠে ফেলে শুধু ইনার গ্লাভস পরে দাঁড়িয়ে আছেন ধোনি। শেষ বলটা অফ স্টাম্পের বাইরে রেখেছিলেন হার্দিক। শুভগত স্কয়ার কাট করতে গেলেও বলের নাগাল ব্যাট পায়নি। বল চলে যায় ধোনির হাতে। এদিকে ১ রান নিতে পারলে ম্যাচ চলে যাবে সুপার ওভারে। সেটা মাথায় রেখে দৌড় দেন শুভগত। তাঁর 'কল' শুনে পপিং ক্রিজ থেকে দৌড়তে শুরু করেন মুস্তাফিজুর রহমান (Mustafizur Rahman)। কিন্তু ক্রিজে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি। কারণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে স্প্রিন্ট টেনে স্টাম্প উপড়ে দেন 'ক্যাপ্টেন কুল'। বেল মাটিতে পড়ার পরেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে ওঠেন 'আউট হ্যায়'। ঘটে টাইগার্সদের জয়ের স্বপ্নভঙ্গ।


খেলাধুলায় চাপ বজায় রাখতে পারলে কঠিন জয়ও সম্ভব। অবশ্য এর সঙ্গে জরুরি হল অভিজ্ঞতা। চলতি বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও সেটা প্রমাণ করল টিম ইন্ডিয়া। তবে ২০১৬ থেকে ২০২২, দু'বার এগিয়ে থেকেও পারল না বাংলাদেশ। কারণ চাপের মুখে বারবার চুপসে যান টাইগার্সরা।  



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)