Suryakumar Yadav, ICC T20 World Cup 2022: উত্তাপ ছড়ানো সূর্যই নতুন `মিস্টার 360 ডিগ্রি`, জানিয়ে দিলেন এবি ডিভিলিয়ার্সের তারকা সতীর্থ
Suryakumar Yadav, ICC T20 World Cup 2022: ১০ অক্টোবর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিরুদ্ধে ফের একবার ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিলেন সূর্য। ৩৫ বলে ৫২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। তিনটি চার ও তিনটি ছয় হাঁকান তিনি। আগুনে ব্যাটিং-এর নমুনা এখানেই শেষ নয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতীয় দলের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন সূর্য। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও ফর্মের তুঙ্গে ছিলেন `স্কাই`।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সূর্যের উত্তাপে গোটা দুনিয়া ছারখার হয়ে যায়। বাইশ গজের যুদ্ধে বিপক্ষ কোন ছাড়! মহাকাশ থেকে সূর্য যেমন তেজ দেখান, ঠিক সেভাবেই ব্যাট-বলের যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে ছারখার করে দিচ্ছেন সূর্য কুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। আর তাই তো টিম ইন্ডিয়ার (Team India) এই নতুন তারকাকে এবি ডিভিলিয়ার্সের (AB de Villiers) সঙ্গে তুলনা করে সূর্যকে 'মিস্টার 360 ডিগ্রি' (Mr 360 Degree) বলে দিলেন ডেল স্টেইন।
কেউ আবার ওঁর মধ্যে কয়েক মাস আগে প্রয়াত অ্যান্ড্র সাইমন্ডসকে (Andrew Symonds) দেখতে পান। এবি ডিভিলিয়ার্স ও সাইমন্ডসের ছায়ায় তিনি বসবাস করেন কিনা সেটা একমাত্র সূর্যই বলতে পারবেন। তবে এতটা লেখাই যায় যে সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতীয় দল চার নম্বর ব্যাটারকে পেয়ে গিয়েছে। আসন্ন টি-টিয়েন্টি বিশ্বকাপে (ICC T20 World Cup 2022) রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) দলের ঝুলিতে ট্রফি ভরাতে হলে, বাইশ গজে সূর্যের উত্তাপ ছড়ানো খুবই জরুরী। সেটা ক্লাসে সিক্সে পড়া ছেলেও জানে।
সেটা মনে করিয়ে প্রাক্তন প্রোটিয়াস তারকা জোরে বোলার বলেন, 'সূর্য আক্ষরিক অর্থে অলরাউন্ডার ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টিয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজিত হওয়ার জন্য সূর্যের মতো ব্যাটার বাড়তি সুবিধা পাবে। আমার মতে ও সফল হবেই। কারণ সূর্য 'মিস্টার 360 ডিগ্রি'-র দ্বিতীয় সংস্করণ। ওকে ব্যাট করতে দেখলেই এবি ডিভিলিয়ার্সকে মনে পড়ে যায়। এই প্রতিযোগিতায় সূর্যের দিকে সবার নজর থাকবে।'
পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এই ফর্মটাই তো দেখতে চেয়েছে আসমুদ্র হিমাচল। অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে সেটা করে দেখানোর পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ফের 'উত্তাপ' ছড়িয়েছেন 'স্কাই'। শুধু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নয়, সব সিরিজে দাপট দেখানোর জন্য সূর্যের ব্যাটের শাসন কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সবাই জানে। এই মুম্বইকর অভিষেকের পর থেকে এই ফরম্যাটে যে ভাবে উত্তাপ ছড়াচ্ছেন, তাতে এতটুকু লিখে দেওয়া যায় যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আসন্ন কাপ যুদ্ধে তিনিই হতে চলেছেন রোহিতের মূল কারিগর।
১০ অক্টোবর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিরুদ্ধে ফের একবার ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিলেন সূর্য। ৩৫ বলে ৫২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। তিনটি চার ও তিনটি ছয় হাঁকান তিনি। আগুনে ব্যাটিং-এর নমুনা এখানেই শেষ নয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতীয় দলের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন সূর্য। অজি বোলারদের থান্ডা মাথায় 'খুন' করা সূর্যের পরিসংখ্যান দেখলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। ৩ ম্যাচে রান ছিল ১১৫। সর্বাধিক রান করেছিলেন হায়দরাবাদে। ৩৬ বলে ৬৯ রান। গড় ৩৮.৩৩। স্ট্রাইক রেট ১৮৫.৪৮।
আরও পড়ুন: Mohammed Siraj, IND vs SA: সিরিজের সেরা হয়ে হায়দরাবাদি স্টাইলে বড় মন্তব্য করে দিলেন আগুনে সিরাজ
অস্ট্রেলিয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন সূর্য। তিন ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ১১৯। যা ভারতীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ। সঙ্গে জোড়া অর্ধ শতরান। গড় ছিল ৫৯.৫০। স্ট্রাইক রেট চোখ কপালে উঠবে। ১৯৫.০৮।
সূর্যের এমন ফর্ম দেখার পর স্টেইন যোগ করলেন, 'সূর্য এমন একজন ব্যাটার যে বলের গতিকে কাজে লাগিয়ে রান তুলতে পারে। ব্যাকফুট ও স্কোয়ার অফ দ্যা উইকেটে খুব ভালো খেলতে পারে। ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি হলেও অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন কিংবা পারথের পিচে কিন্তু গতি ও বাউন্স দুটিই থাকবে। এমন পিচে সূর্য ছন্দ পেয়ে গেলে বিপক্ষকে উড়িয়ে দেবে। কারণ একটা বলকে সূর্য তিন-চার ভাবে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিতে পারে।'
সামগ্রিক ভাবে এই মারকুটে মুম্বইকর জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও সফল। মাত্র ৩৪টি ম্যাচে করে ফেলেছেন ১০৪৫ রান। গড় ৩৮.৭০। স্ট্রাইক রেট ১৭৬.৮১। সঙ্গে জ্বলজ্বল করছে ১টি শতরান ও ৯ টি অর্ধ শতরান। শুধু তাই নয়, প্রোটিয়াসদের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের ম্যাচে আরও একটি নজির গড়েছিলেন সূর্য। ২২ বলে ৬১ রানের ইনিংসে টি-টোয়েন্টিতে হাজার রানও পূরণ করে ফেলেন তিনি। মাত্র ৫৭৩ বলে ১০০০ রান পূরণ করেন সূর্য। তাঁর স্ট্রাইকরেট ১৭৪.০০। যেটা বলের নিরিখে দ্রুততম। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন 'ম্যাড ম্যাক্স' গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাঁর স্ট্রাইকরেট ১৬৬.০০। তিনি ৬০৪ বলে টি-টোয়েন্টিতে হাজার রান করেছেন। তৃতীয় স্থানে থাকা কলিন মুনরো ৬৩৫ বলে হাজার রান করেন। মুনরোর স্ট্রাইকরেট ১৫৭.০০। ৬৪০ বলে টি-টোয়েন্টিতে হাজার রান করেছেন এভিন লুইস (স্ট্রাইকরেট ১৫৬.০০)। থিসারা পেরেরা আবার ৬৫৪ বলে ১৫৩.০০ স্ট্রাইকরেটে এই হাজার রান পূরণ করেছেন। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন সূর্য।