ICC T20 World Cup, IND vs BAN: ক্ষোভে ফুঁসছে সাকিবের বাংলাদেশ! কোন দুই কারণে আইসিসি-কে নালিশ করবে বিসিবি?
বাংলাদেশের ইনিংসের সপ্তম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের বলে ডিপ অফ সাইডে বল ঠেলে দিয়ে রান নিতে যান লিটন। বিরাট পয়েন্টে ফিল্ডিং করছিলেন। অর্শদীপ বল থ্রো করার সময়, বিরাট বল মাঠ থেকে তুলে ছুড়ে দেওয়ার ভঙ্গি করেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: টিম ইন্ডিয়ার (Team India) বিরুদ্ধে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ডার্ক ওয়ার্থ লুইস (Duckworth–Lewis–Stern Method) নিয়মে ৫ রানে হার মানতে পারছে না বাংলাদেশ। তাই এবার আইসিসি-র (ICC) দ্বারস্থ হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (Bangladesh Cricket Board)। বিসিবি-র (BCB) নিশানায় বিরাট কোহলি (Virat Kohli) এবং মাঠে থাকা আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস (Marais Erasmus)। মূলত দুটি দাবি নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার কাছে অভিযোগ জানাবে সাকিব আল হাসানের (Shakib Al Hasan) দেশের বোর্ড কর্তারা। ভেজা মাঠে নামতেই চায়নি বাংলাদেশ (Bangladesh)। লিটন দাসদের (Litton Das) জোর করে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবং বিরাটের 'ফেক ফিল্ডিং'(Fake Fielding) নিয়ে সরব টাইগার্সরা। তাদের দাবি ৫ রান পেনাল্টি প্রাপ্য ছিল। সেই রান পেলে ম্যাচ জিতে যেত দল। ভারতের কাছে হারের পর এই জোড়া অজুহাতকে অস্ত্র করেই এবার আইসিসির দ্বারস্থ হতে চলেছে বিসিবি।
বিসিবির অপারেশনাল ম্যানেজার জালাল ইউনুস দাবি বলেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে খেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে এমন দুটি ঘটনা ঘটেছে যেটা অপ্রত্যাশিত। আমরা টিভিতে সবই দেখেছি। বিরাটের ফেক থ্রো নাকি আম্পায়াররা দেখেননি। আর শাকিব বারবার বলা সত্ত্বেও খেলা শুরুর ব্যাপারে আম্পায়ররা তাঁর কথাকে গুরুত্ব দেননি। আমরা সঠিক জায়গায় সবটা জানাব।' বাংলাদেশ ক্রিকেট মহলেরও একাংশের অভিযোগ, বড় দল হওয়ায় বরাবরই বাড়তি সুবিধা পায় ভারত। এখন দেখার আইসিসি আদৌ বাংলাদেশের এই অভিযোগকে গুরুত্ব দেয় কিনা।
অ্যাডিলেডে বৃষ্টি নামার আগের ঘটনা। বাংলাদেশের ইনিংসের সপ্তম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের বলে ডিপ অফ সাইডে বল ঠেলে দিয়ে রান নিতে যান লিটন। বিরাট পয়েন্টে ফিল্ডিং করছিলেন। অর্শদীপ বল থ্রো করার সময়, বিরাট বল মাঠ থেকে তুলে ছুড়ে দেওয়ার ভঙ্গি করেন। মাঠের দুই আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস এবং ক্রিস ব্রাউনের নজর এড়িয়ে যায় এই ঘটনা। তৃতীয় আম্পায়ারও আপত্তি করেননি। বাংলাদেশের দুই ব্যাটারের তরফেও কোনও প্রতিবাদ আসেনি। যদিও বাংলাদেশের সমর্থকরা বিরাটের এই আচরণ মেনে নিতে পারছেন না।
শুধু বাংলাদেশের সমর্থক নয়, সাকিবের দলের একাধিক ক্রিকেটারও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত। ম্যাচের পর মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে নুরুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, 'আমরা সবাই জানতাম মাঠ ভিজে ছিল। এর মধ্যে ভুয়ো থ্রো করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রত্যেকে ওই ঘটনা দেখেছে। আমাদের পাঁচ রান পাওয়া উচিত ছিল। তা হলে আমাদের দিকে ম্যাচ ঘুরে যেত। দুর্ভাগ্যবশত, সেটা হয়নি।'
এক্ষেত্রে আইসিসি-র নিয়ম কী বলছে?
আইসিসির ৪১.৫ ধারা অনুযায়ী, ব্যাটারকে কোনওভাবে বাধা দিলে বা বিক্ষিপ্ত করার চেষ্টা করলে আম্পায়াররা ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বিপক্ষ দলকে পাঁচ রান শাস্তি হিসাবে দিতে পারেন। তবে এই ইস্যুতে মাঠে থাকা দুই আম্পায়ার মনে করেননি, বিরাট কোনও অপরাধ করেছেন। তাই শাস্তিও দেওয়া হয়নি।
এদিকে ১৮৫ রান তাড়া করতে নেমে একটা সময় ভারতের কালঘাম ছুটিয়ে দিয়েছিলেন টাইগার্স ওপেনার লিটন দাস। মাত্র ৭ ওভারে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে তখন ৬৬ রান উঠে যায়। মাত্র ২৬ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকা লিটন দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। এরপরেই অ্যাডিলেডের আকাশে নেমে আসে প্রবল বৃষ্টি। ডার্ক ওয়ার্থ লুইস নিয়মে ১৭ রানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেই বৃষ্টিই যে সাকিবদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেবে কে জানত!
৯ ওভারে দরকার ৮৫ রান। তবে ৭.২ ওভারে প্রথম সাফল্য পেল ভারত। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের (Ravichandran Ashwin) বলকে ডিপ মিড উইকেটের দিকে ঠেলে দুই রান নিতে গিয়েছিলেন নজমুল হাসান শান্ত (Najmul Hossain Shanto)। প্রথম রান অনায়াসে নেওয়া গেলেও, দ্বিতীয় রান নিয়ে আর পপিং ক্রিজে ফিরতে পারলেন না লিটন। কেএল রাহুলের ডিরেক্ট থ্রো-তে ছিটকে গেল স্টাম্প। পুরো শরীর শুন্যে ভাসিয়ে দিলেও শেষরক্ষা হল না। রাগে গজগজ করে ডাগ আউটে ফিরে গেলেন লিটন। ৬৮ রানে ১ উইকেট হারিয়েছিল টাইগার্সরা। বাকিটা তো ইতিহাস। কারণ ৬ উইকেটে ১৪৫ রানে আটকে যাওয়ার জন্য ৫ রানে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে নেয় রোহিতের দল। যদিও বিসিবি-র দাবি মাঠের আউট ফিল্ড ভিজে থাকার জন্য মাঠেই নামতে চায়নি টাইগার্সরা। সেটা নিয়ে একাধিকবার আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাসের সঙ্গে কথাও বলেন সাকিব। তবে এতে কোনও লাভ হয়নি।