নিজস্ব প্রতিবেদন: স্কোরটা দেখাচ্ছিল, ৩৫০-র বেশি। কিন্তু মহম্মদ আমিরের আগুনের বোলিংয়ে সামনে ৪৯ ওভারে ৩০৭ রানে অলআউট হয় অজিরা। লক্ষ্যকে ধরাছোঁয়ার মধ্যে রেখেও ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিতে হল পাকিস্তানকে। ভারতের কাছে চূর্ণ হওয়ার পর সরফরাজ আহমেদদের ৪১ রানে হারাল ফিঞ্চবাহিনী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেন ডেভিড ওয়ার্নার। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ইংলিশ আবহাওয়ায় মহম্মদ আমির, হাসান আলি, শাহিন আফ্রিদা ও ওয়াহাব রিয়াজদের আগুনে গতির সামলানো ছিল চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ সামলে প্রথম উইকেটেই অস্ট্রেলিয়া তোলে ১৪৬ রান। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ করেন ৮৪ বলে ৮২ রান। অন্যদিকে তখনও একপ্রান্তে স্বভাববিরুদ্ধ শান্ত ব্যাটিং ডেভিড ওয়ার্নারের। অস্ট্রেলিয়ার দুই উদ্বোধনী ব্যাটম্যানরা যেভাবে খেলছিলেন, মনে হচ্ছিল ৩৫০ রান অবধারিত। কিন্তু ফিঞ্চের প্যাভিলিয়ন ফেরার পর অজি ব্যাটম্যানরা আমিরের গতির মুখে এঁটে উঠতে পারেননি। একপ্রান্ত ধরে রেখে ১১১ বলে ১০৭ রান করেন ওয়ার্নার। এখানেই তাঁর ইনিংসের তাত্পর্য। ব্যর্থ হয়েছেন স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, শন মার্স ও উসমান খোয়াজারা। ৪৯ ওভারে ৩০৭ রানে অস্ট্রেলিয়াকে গুটিয়ে দেন আমিররা। আলাদা করে মহম্মদ আমিরের নাম উল্লেখ করতেই হয়। ইংল্যান্ডেই স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারির জন্য নির্বাসিত হয়েছিল আমিরকে। সেই ইংল্যান্ডেই ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ৩০ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়ে আমিরের শাপমুক্তি ঘটল। 



ঐতিহাসিকগতভাবে বোলিং বরাবরই পাকিস্তানের সেরা। কিন্তু ব্যাটিংয়ের পাকিস্তানের ধারাবাহিকতার অভাব সর্বজনবিদিত। এদিনও সেই ধারাবাহিকতা চোখে পড়ল বারবার। বিশেষ করে ম্যাচের রাশ নিয়ন্ত্রণে এনেও একটা সময়ে আত্মসমর্পণ করলেন পাকিস্তানি সরফরাজরা। বস্তুত ফকর জামান শূন্য রানে আউট হওয়ার পর বাবর আজম ও ইমাম-উল-হক বেশ জমাটি জুটির দিকে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু তাল কাটল বাবর আজমের দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে। মহম্মদ হাফিজও আশা জাগাচ্ছিলেন। কিন্তু একটা লোপ্পা বলেও ঠিকভাবে বাউন্ডারিতে টাঙাতে পারলেন না। এতদিন ক্রিকেট খেলার পরও দলকে নির্ভরযোগ্যতা দিতে ব্যর্থ শোয়েব মালিক। বলতে গেলে ৩৪ তম ওভারে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরই ম্যাচের ভবিষ্যত্ নির্ণয় হয়ে যায়। সরফরাজ আর যাই হোক ধোনি নন, যে টেলএন্ডারদের নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেবেন। তাও ওয়াহাব ধুমধাড়াক্কা মেরে একটা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পারলেন না। ২৬৬ রানে শেষ হল পাকিস্তান। বিশ্বকাপে আরও একটা হার।           



পাকিস্তানের ফিল্ডিং নিয়ে যত কম লেখা যায় তত ভাল। সহজ ক্যাচ ফেলে দেওয়ার  একাধিক নজির দেখাল পাকিস্তান। একবিংশ শতকেও পাকিস্তানের ফিল্ডিং উন্নত হল না। নইলে অ্যারন ফিঞ্চ কখন প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। বিশ্বকাপের মঞ্চেই তো হার্সেল গিবসকে স্টিভ ওয়ার সেই ঐতিহাসিক উক্তি, 'বন্ধু ওটা ক্যাচ নয়, বিশ্বকাপটাই ফেলে দিলে'। সালটা ছিল ১৯৯৯। যা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। 


আমিরের মঞ্চে ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ের জন্য অবশ্যই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য ডেভিড ওয়ার্নার। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে অতীব ঢিমেতালে ব্যাটিংয়ের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন অজি ওপেনার। আজ অবশ্য স্বভাববিরুদ্ধ ব্যাটিং করেই দলকে টানলেন। ফিঞ্চ ছাড়া বাকি অজি ব্যাটসম্যানদের রানটাই বলে দিচ্ছে, ওয়ার্নারের শতরানটা কতটা মহার্ঘ! আর সে কারণেই ম্যান অব ম্যাচ তাঁকে ছাড়া আর কাউকে ভাবার অবকাশই নেই।


আরও পড়ুন- ক্রিকেট বিশ্বকাপের মাঝেই শুরু হচ্ছে কোপা আমেরিকা, জেনে নিন সূচি