Dinesh Karthik, IND vs AUS : রোহিতের কাছ থেকে `ফিনিশার`-এর তকমা পেলেও `ক্রেডিট` নিতে রাজি নন `ডিকে`
Dinesh Karthik, IND vs AUS : ৮ ওভারে ৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে,সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে হার্দিক পান্ডিয়া আউট হলে কার্তিক ক্রিজে আসেন। রোহিতের নির্দেশেই ঋষভ পন্থ ও অক্ষর প্যাটেলের আগে কার্তিক মাঠে চলে যান।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup 2022) কেন তাঁকে 'ফিনিশার' হিসেবে ধরা হচ্ছে সেটা ফের একবার বুঝিয়ে দিলেন দীনেশ কার্তিক (Dinesh Karthik)। অস্ট্রেলিয়ার (Asutralia) বিরুদ্ধে সমতা ফেরানোর ম্যাচে রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ২০ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকলেও সবাই 'ডিকে' নিয়েই মেতে রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে এই মুহূর্তে তাঁর ছক্কা ও চার মারার মুহূর্ত ভাইরাল। যদিও 'ফিনিশার' কার্তিকের দাবি, জয়ের 'ক্রেডিট' তাঁর নয়। বরং টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অধিনায়কের।
সাংবাদিক সম্মেলনে কার্তিক বলেন, 'স্যর আমি কোনও কৃতিত্ব নিতে চাই না। রোহিত অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। আমি শুধু শেষের দুটি বল পেয়েছি, দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছি মাত্র। বৃষ্টি ভেজা মাঠে নতুন বলে নাগপুরের পিচে খেলা একেবারেই সহজ ছিল না। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং বিশ্বমানের। শুধু ভারতীয় ক্রিকেটে নয়, বিশ্ব ক্রিকেটে রোহিত শর্মা কত বড় ব্যাটার সেটা এই ইনিংস বুঝিয়ে দেয়। জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে খেলার ওর দারুণ দক্ষতা আছে। সেটাই ওকে বাকিদের থেকে আলাদা করেছে।'
৮ ওভারে ৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে,সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya) আউট হলে কার্তিক ক্রিজে আসেন। রোহিতের নির্দেশেই ঋষভ পন্থ (Rishabh pant)ও অক্ষর প্যাটেলের (Axar Patel) আগে কার্তিক মাঠে চলে যান। এরপর বাকিটা ইতিহাস। ড্যানিয়েল সামসের শেষ ওভারের প্রথম ডেলিভারিটা ছিল স্লোয়ার। সেই বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগের দিকে ছক্কা হাঁকান তিনি। এর পরের বলেই ডিপ মিড-এর দিকে বাউন্ডারি মারেন 'ডিকে'। ব্যস! খেলা শেষ! দুই বলে ১০ রান করে দলকে জয় এনে দেন কার্তিক। স্ট্রাইক রেট ৫০০। অপর প্রান্তে অপরাজিত ৪৬ রান করে দাঁড়িয়ে থাকা রোহিতকে বেশ খুশি দেখাচ্ছিল। কার্তিকের ব্যাটিংয়ের পরে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন 'হিটম্যান'।
পঞ্চদশ আইপিএল (IPL 2022) থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত এই অভিজ্ঞ উইকেটকিপার নিজেকে ধীরে ধীরে 'ফিনিশার' হিসেবে গড়ে তুলেছেন। সেটা তাঁর পরিসংখ্যান দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। ২০২২ সালের ক্রোড়পতি লিগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের (Royal Challengers Bangalore) জার্সি গায়ে চাপিয়ে যেন তাঁর 'পুনর্জন্ম' হয়েছিল। ১৬ ম্যাচে রান ৩৩০। এরমধ্যে ১০টি ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন। সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৬। গড় ৫৫। এবং স্ট্রাইক রেট চোখে পড়ার মতো ১৮৩.৩৩।
কিন্তু কীভাবে তিনি নিজেকে গড়েছেন? তাঁর অনুশীলনের ধরন কেমন? সেটা নিয়ে প্রশ্ন আসতেই 'ডিকে' বলেন, 'আমি সাধারণত 'ম্যাচ সিমুলেশন' প্র্যাকটিস করি। বিভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করে সেই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করি। আইপিএল-এর ফ্রাঞ্চাইজি হোক কিংবা ভারতীয় দল, এ ভাবে অনেক বছর ধরেই অনুশীলন করছি। এটা এখন আমার দৈনন্দিন কাজের অংশ হয়ে গিয়েছে এটা। রাহুল ভাই এবং বিক্রম ভাই আমাকে অনেক সাহায্য করেন। কী ভাবে আমার অনুশীলন করা দরকার, কোন শট খেলা দরকার, সব বলে দেয়। আসলে আমি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে অনুশীলন করতে ভালবাসি। একটানা বেশি ক্ষণ অনুশীলন করা আমার ধাতে নেই। বিশেষ কিছু বিষয়ে জোর দেওয়ার চেষ্টা করি।'
আরও পড়ুন: Rohit Sharma, IND vs AUS : সমতা ফিরিয়ে সতীর্থদের ধন্যবাদ জানিয়েও কেন অবাক 'হিটম্যান'? জানতে পড়ুন
প্রথম ম্যাচে অক্ষর পটেলের পর ব্যাট করতে এসেছিলেন তিনি। শুক্রবার তাঁকে আগে পাঠানো হল। কী ছিল দলের পরিকল্পনা? কার্তিক বলেছেন, 'আমরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর চেষ্টা করছি। এমন অনেক ম্যাচ গিয়েছে, যেখানে শেষ দিকে দুই ওভার স্পিনারদের পিটিয়ে রান তুলে দিয়েছে অক্ষর। ম্যাচের কী পরিস্থিতি রয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরা ঠিক করি কে কখন নামবে।'
ইদানীং কয়েকটা ম্যাচে পন্থ ও কার্তিক, দুজনকেই মাঠে নামিয়ে দিচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কাকে 'ফিনিশার' হিসেবে দেখা যাবে? সেই ইঙ্গিত অবশ্য ম্যাচের শেষে দিয়েছিলেন রোহিত। বলেছিলেন, 'কার্তিক যে ভাবে খেলাটা শেষ করেছে তাতে আমি খুশি। এক সময় ভেবেছিলাম ঋষভকে নামতে বলব। কিন্তু জানতাম যে ড্যানিয়েল স্যামস অফ কাটার করবে। তাই কার্তিককেই নামালাম। শেষ পর্যন্ত ফিনিশার হিসাবে তো ওকেই খেলতে হবে।'
গত ২০-২৫ বছরে সাদা বলের ক্রিকেটে অনেক 'ফিনিশার' দেখা গিয়েছে। মাইকেল বেভান (Michael Bevan), মাইক হাসি (Michael Hussey) থেকে শুরু করে মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahednra Singh Dhoni)। সবাই নিজের সেরা সময়ে একাধিক ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। আইপিএল ও কয়েকটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজে কার্তিক 'ফিনিশার'-এর ভূমিকা পালন করেছেন। তবে আসল লড়াই তো ২৩ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। কারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে সে দিন যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের (Pakistan) বিরুদ্ধে মেলবোর্নে নামবে ভারত। 'ডিকে' কি কাপ যুদ্ধের মঞ্চে নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন? সেটাই দেখার।