Shubman Gill and Rohit Sharma, IND vs NZ: শুভমন-রোহিতের জোড়া শতরানের পর `লর্ড শার্দূল`-কুলদীপের দাপুটে বোলিং, কিউইদের চুনকাম করে শীর্ষে ভারত
কিউইদের বিরুদ্ধে আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছে ভারত। তবে নিয়মরক্ষার ম্যাচে খেলতে নেমেও দাপটের সঙ্গে ব্যাট করলেন রোহিত ও শুভমন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে দ্বিশতরান হাঁকানোর পরে আবারও চেনা ছন্দে পঞ্জাব তনয়।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নিউজিল্যান্ড (New Zealand) যে টার্গেট চেজ করতে পারবে না, সেটা আগেভাগেই জানা ছিল। আর তাই হল। কিউইদের ২৯৫ রানে অল আউট করল টিম ইন্ডিয়া (Team India)। একইসঙ্গে বিপক্ষকে একদিনের সিরিজে চুনকাম করে আইসিসি একদিনের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে চলে গেল ভারত। প্রথমে শুভমন গিল (Shubman Gill)-রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) জোড়া শতরানের পর, বল হাতে নজর কাড়লেন শার্দূল ঠাকুর (Shardul Thakur) এবং কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav) । তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিলেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya) ও উমরান মালিক (Umran Malik)। চার বোলারের দাপটে ভারতের কাছে ৯০ রানে হেরে গেল টম ল্যাথামের (Tom Latham) দল। ডেভন কনওয়ে (Devon Conway) মারমুখী মেজাজে ১০০ বলে ১৩৮ রান করলেও লাভ হল না।
চলতি বছর নিউজিল্যান্ডের আগে শ্রীলঙ্কাকেও (Sri Lanka) হোয়াইটওয়াশ করেছিল টিম ইন্ডিয়া। তবে বিপক্ষকে হেলায় উড়িয়ে দিলেও, ভারতীয় দলের মিডল অর্ডার নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই গেল। 'মর্নিং শোজ দ্য ডে'। ইংরেজির এই চালু প্রবাদ সবসময় সত্যি হয় না। সেটা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। বিস্ফোরক মেজাজে প্রথম উইকেটে ২১২ রান তুলে দেন রোহিত ও শুভমন। মনে করা হয়েছিল ফের একবার স্কোরবোর্ডে বড় রান তোলা সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু কোথায় কি! ইন্দোরের (Indore) হোলকার স্টেডিয়ামের (Holkar Cricket Stadium) বাইশ গজে চূড়ান্ত ব্যর্থ হল ভারতের তারকাখচিত মিডল অর্ডার। ফলে শেষ ১৭৩ রান তুলতে ৮ উইকেট হারাল ভারতীয় দল। তবুও ডেথ ওভারে রুখে দাঁড়ালেন হার্দিক। আর তাই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৮৫ রান তুলতে পারল 'মেন ইন ব্লু' ব্রিগেড।
কিউইদের বিরুদ্ধে আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছে ভারত। তবে নিয়মরক্ষার ম্যাচে খেলতে নেমেও দাপটের সঙ্গে ব্যাট করলেন রোহিত ও শুভমন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে দ্বিশতরান হাঁকানোর পরে আবারও চেনা ছন্দে পঞ্জাব তনয়। শেষ চারটি ম্যাচের তিনটিতেই শতরান করে ফেললেন তিনি। সেই সঙ্গে বিরাট কোহলির (Virat Kohli) নজির ভাঙলেন শুভমন। তবে সামান্য সময়ের ব্যবধানে আউট হয়ে যান দুই ব্যাটারই।
মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজ ব্যাটিং শুরু করেন রোহিতরা। ২০২০ সালে শেষবার শতরান করেছিলেন 'হিটম্যান'। আর এবার তিন বছর ও ১৬ ইনিংস পর ফের ৫০ ওভারের ফরম্যাটে শতরান ভারতের অধিনায়ক। মাত্র ৮৪ বলে শতরান করেন তিনি। ব্লেয়ার টিকনারের (Blair Tickner) ডেলিভারিকে ঠেলে এক রান নিতেই রোহিতের ঝুলিতে চলে এল ৩০তম শতরান। তাও আবার এই শতরান পেলেন ৮৩ বলে। তবে তাঁর এই ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হল না। ৮৫ বলে ১০১ রানে আউট হন রোহিত। এদিনের ইনিংসের পর রিকি পন্টিংয়ের (Ricky Ponting) সমসংখ্যক ৩০টি শতরান করে ফেললেন তিনি। রোহিত আউট হওয়ার সময় ভারতের স্কোর ছিল ২১২ রানে ১ উইকেট।
আরও পড়ুন: Shubman Gill and Babar Azam: এবার বাবর আজমকেও হুঙ্কার দিলেন শুভমন! কিন্তু কীভাবে?
ক্রিজের অন্যদিকের একই ছন্দে ছিলেন শুভমন। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৪৯ বলে ২০৮ করার পর, দ্বিতীয় ম্যাচেও ৫৩ বলে ৪০ রানে অপরাজিত ছিলেন পঞ্জাব তনয়। নিজের স্বপ্নের ফর্ম ধরে রেখে মঙ্গলবার ফের শতরান করলেন তিনি। চলতি বছরেই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দু’টি শতরান হাঁকিয়ে ২৮৩ রান করেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার অর্ধ শতরান করার সঙ্গে সঙ্গে সেই রেকর্ড পেরিয়ে গেলেন শুভমন। তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বাধিক ৩৬০ রান করার নজির ছিল বাবর আজমের। সেই রেকর্ডও ছুঁয়ে ফেললেন শুভমন।
তবে এদিন ৭৮ বলে ১১২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় গিলকে। রোহিত আউট হওয়ার মাত্র দুই ওভারের মধ্যেই ফিরে যান গিল। টিকনারের ডেলিভারি ব্যাটের কানায় লেগে সোজা উঠে যায়। সহজ ক্যাচ ধরে গিলকে আউট করেন কনওয়ে। ২৩০ রানে ২ উইকেট হারায় ভারত।
বিরাট-সূর্য কুমার যাদবদের হাতে ম্যাচ থাকলেও, ভারত কিন্তু সেই সুবিধা নিতে পারেনি। বিরাট (৩৬), ঈশান কিশান (১৭), সূর্য (১৪) শুরুটা ভালো করলেও নিজেদের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত হার্দিক ও শার্দূল ঠাকুর সপ্তম উইকেটে ৫৪ রান যোগ করেন। হার্দিক ৩৮ বলে ৫৪ রান ও শার্দুল ১৭ বলে ২৫ রান করেন। ফলে নিউজিল্যান্ডের টার্গেট দাঁড়াল ৩৮৬ রানের।
বল হাতে প্রথম ওভারেই বিপক্ষের ওপেনার ফিন অ্যালেনকে বোল্ড করে দেন হার্দিক। তবে দ্বিতীয় উইকেটে লড়াই চালিয়ে ১০৬ রান যোগ করেন কনওয়ে এবং হেনরি নিকোলস। হেনরিকে (৪২) ফিরিয়ে ভারতেকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন কুলদীপ। এরপর লাগাতার উইকেট হারাতে থাকে কিউইরা। তবে এরইমধ্যে একা বুক চিতিয়ে লড়লেন ডেভন। তাঁর ১৩৮ রানের ইনিংস ১২টি চার ও ৮টি ছক্কা দিয়ে সাজানো ছিল। তবে এতে লাভ হল না। শার্দূল ৪৫ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। কুলদীপ ৬২ রানে ৩ উইকেট নিলেন।