জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: একেই বলে আগাগোড়া দাপট দেখানো। বোলাররা যেখানে শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই মারতে শুরু করে দিয়েছিলেন অজিঙ্কা রাহানে! অবাক হচ্ছেন, রাহানে মারছেন! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। চোটের জন্য মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন সিএসকে-এর দুই তারকা বেন স্টোকস। এমনকি মইন আলিও মাঠে নামতে পারলেন না। এরমধ্যে আবার দীপক চাহার এক ওভার বল করেই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। তবে সিএসকে সেনাপতির সব চাপ কমিয়ে দিলেন ভারতীয় দলের কাছে 'ব্রাত্য' রাহানে। তাঁর বিস্ফোরক ইনিংসের সৌজন্যে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিল চেন্নাই সুপার কিংস। ৩ উইকেটে ১৫৯ রান তুলে, রোহিত শর্মাকে তাঁর ডেরায় এসে হারিয়ে দিয়ে চলে গেলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। পাঁচবারের আইপিএল জয়ী দল জোড়া হারের ধাক্কা হজম করল। অবশ্য এই মাঠ 'ক্যাপ্টেন কুল' -এর কাছেও সমান স্পেশ্যাল। কারণ ২০১১ সালের ২ এপ্রিল এই মাঠেই যে তাঁর ছক্কা ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিল।  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

টসের পরই ধোনি জানিয়ে দেন যে, চোট থাকায় খেলছেন না স্টোকস। তিনি এ-ও জানান যে, অসুস্থ থাকায় খেলতে পারছেন না মঈন আলি। পাশাপাশি ম্যাচের প্রথম ওভার বল করার পর হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট লাগায় মাঠ ছাড়েন দীপক চাহারও। সব মিলিয়ে বেশ কঠিন পরিস্থিতি ছিল ধোনিদের সামনে। তবে বোলিংয়ে দাপট দেখানোর পর, ব্যাট হাতে গর্জে উঠলেন রাহানে। তাও আবার নিজের জন্মভূমির মাঠে। এই মাঠে খেলে ছোট থেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে তুলে ধরেছেন তিনি। আবার এই মাঠেই তাঁর একটা 'স্লো' ইনিংস ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয় থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমি ফাইনাল। সেই ম্যাচে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন রাহানে। বিরাট কোহলির ৪৭ বলে অপরাজিত ৮৯ রানের সৌজন্যে ভারত ২ উইকেটে ১৯২ রান তুললেও, ম্যাচ জেতা যায়নি। সেই হারের জন্য অনেকেই রাহানের ইনিংসকে দায়ী করেছিলেন। কারণ ৩৫ বলে ৪০ রান করেছিলেন এই মুম্বইকর। 



১৫৯ রান চেজ করতে নেমে শুরুতেই ফিরে যান ফর্মে থাকা ডেভন কনওয়ে। চাপে থাকার বদলে রাহানে বিপক্ষের বোলিংকে কার্যত খুন করতে শুরু করলেন। একেবারে ব্যাকরণ মেনে শুরু হল তাঁর পালটা মারের খেলা। কাউকে রেয়াদ করলেন না তিনি। প্রিয় 'আজ্জু'-র ব্যাট থেকে চার-ছক্কার ফুলঝুরি দেখে তখন মাথায় হাত দিয়ে বসেছিলেন 'হিটম্যান'। মাত্র ২৭ বলে ৬১ রান। শুধু নিজের টি-টোয়েন্টি কেরিয়ার নয়, এবারের আইপিএল-এও দ্রুততম অর্ধ শতরান করলেন। তাঁর এই মারকাটারি ইনিংস ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা দিয়ে সাজানো ছিল। স্ট্রাইক রেট ২২৫.৯২।


আরও পড়ুন: Mahendra Singh Dhoni: সিএসকে-তে 'ধোনি যুগ' শেষ হওয়ার পর নতুন নেতা কে? নাম জেনে নিন


আরও পড়ুন: David Warner, RR vs DC: কেন আউট হয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন ওয়ার্নার? জেনে নিন আসল কারণ


২৬ বলে ২৮ রান করে গেলেন শিবম দুবে। শেষ পর্যন্ত রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও 'ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার' অম্বাতি রায়াডুর সৌজন্যে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল মুম্বই। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের বিশ্বজয় অমর হয়ে রয়েছে। কিন্তু আইপিএল-এ এই মাঠে ধোনির স্মৃতি খুব একটা সুখকর ছিল না। বরং অনেকটা এগিয়ে ছিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই। ওয়াংখেড়েতে দশবারের সাক্ষাতে সাতবারই সিএসকে-কে হারিয়েছে মুম্বই। তবে হিসেবটা এবার বদলে গেল। রুতুরাজ ৩৬ বলে ৪০ রান ও রায়াডু ১৬ বলে ২০ রানে অপরাজিত রইলেন। 



বল হাতে জ্বলে উঠলেন সিএসকে বোলাররা। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কোনও ব্যাটারই সিএসকে-র নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারলেন না। টস জিতে মুম্বইকে প্রথমে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিলেন ধোনি। রোহিত শর্মারা শুরু থেকে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকলেন। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৭ রানে আটকে গেল মুম্বই। 


রোহিত ও ঈশান শুরুটা ভালো করেছিলেন। ৪ ওভারে ৩৮ রান ওঠার পর তুষার দেশপাণ্ডের বলে বোল্ড হয়ে যান রোহিত। ১৩ বলে ২১ রান করে। ২১ বলে ৩২ রান করে রবীন্দ্র জাডেজার বলে ফেরেন ঈশান। তারপর থেকেই ধস নামে মুম্বই ইনিংসে। মিডল অর্ডার ব্যর্থ। ক্যামেরন গ্রিন ১২, সূর্যকুমার যাদব ১, তিলক বর্মা ২২, আর্শাদ খান ২ ও ট্রিস্টান স্টাবস ৫ রান করে ফেরেন। টিম ডেভিড ২২ বলে ৩১ রান করে আউট হন। সিএসকে বোলারদের মধ্যে সেরা জাদেজা। ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। মিচেল স্যান্টনার ও তুষার দেশপাণ্ডে ৩১ রানে ২ উইকেট নেন। এরপর বিপক্ষকে বুঝে নেন রাহানে। আর তাই পাঁচবারের আইপিএল জয়ী দল জোড়া হারের ধাক্কা হজম করল। 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)