জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর, সাল ২০২২। কোহলি এবং তাঁর আপামর ফ্যানদের কাছে এটি কার্যত রেড লেটার ডে। ১০০-২০০ বা ৫০০ দিন নয়, গুনে গুনে ১০২০ দিন পর সেঞ্চুরির মুখ দেখেছিলেন বিরাট। তার আগে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে, দিন-রাতের টেস্টে শেষবার তিন অঙ্কের রান করেছিলেন কোহলি। এরপর ক্রিকেটের কোনও ফরম্যাটেই সেঞ্চুরির মুখ দেখেননি কোহলি। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের নিয়মরক্ষার ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ঝলসে উঠেছিল কোহলির ব্যাট। কেরিয়ারের ৭১ তম সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ব্যাটিং মায়েস্ত্রো। এর সঙ্গেই আন্তর্জাতিক টি-২০ ফরম্যাটে দেশের জার্সিতে করেছিলেন প্রথম সেঞ্চুরি। তাঁর আগে কোহলি অত্যন্ত খারাপ ফর্মের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। রানের সঙ্গে কোথায় যেন যোগাযোগটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। কোহলি ফের কথা বললেন তাঁর রানে ফেরা সেঞ্চুরি নিয়ে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এক ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থার অনুষ্ঠানে কোহলি বলেন, '১০০ আসার আগের বলে আমি ৯৪ রানে ছিলাম, সেই সময়ে মনে হচ্ছিল, ও আমি ৯৪-তে। তাহলে হয়তো সেঞ্চুরি পেতে পারি। এর পরের বলটাই ছয় মেরেছিলাম। তবে ১০০ করার পরেই প্রচুর হেসেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, আরে এর জন্য আমি দু'বছর কেঁদেছি?' যিনি কোহলির সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন, তিনি কোহলিকে জিজ্ঞাসা করেন যে, সত্যিই কোহলি কি সেঞ্চুরির পর কেঁদেছিলেন? কোহলি যার উত্তরে বলেন, 'সেই মুহূর্তে কাঁদিনি, তবে যখন অনুষ্কার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন আমি কেঁদেছিলাম।'


কোহলি ওদিন সেঞ্চুরির পর, কোনও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি। শুধু এক গাল হেসেছিলেন। নিজের লকেটে চুম্বন করেন। ব্যাট বিস্ফোরণের পর একেবারে শান্ত ছিলেন তিনি। সেঞ্চুরি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি ইনিংস ব্রেকে বলেছিলেন, '১০০০ শব্দে এই সেঞ্চুরির মূল্যায়ন করব। এই মুহূর্তে আমি ধন্য ও কৃতজ্ঞ। বিগত আড়াই বছরে অনেক কিছু শিখেছি। আগামী নভেম্বরে আমি ৩৪ বছরে পা দেব। অতীতে সেলিব্রেট করেছি। আজকের সেলিব্রেশনে অনেক কিছু মিশে ছিল। সত্যি বলতে আমি চমকে গিয়েছি। ন্যূনতম ভাবনাতেও আসেনি যে, এই ফরম্যাটে সেঞ্চুরি পাব। বিশেষ মুহূর্ত আমার এবং দলের কাছে ভীষণ স্পেশ্যাল। ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছাড়া সম্ভব নয়। এই সেলিব্রশনের সঙ্গেই জুড়ে রয়েছে কয়েকটি বিষয়। আমি এই দলের পাশে থাকতে পারি কিনা, এই দল এতটাই মুক্ত যে, আমাকে সুযোগ দিয়েছে নিজের খেলায় সাহায্য করার। এই কঠিন লড়াইতে আমার পাশে ছিল একজন, তাঁর নাম অনুষ্কা। আমি অনুষ্কা ও ভামিকাকে এই সেঞ্চুরি উৎসর্গ করছি। সময় আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। ছ সপ্তাহের ব্রেক নিয়ে কামব্যাক করে খুশি হয়েছি। বুঝেছিলাম যে, মানসিক ও শারীরীক ভাবে আমি কতটা ক্লান্ত ছিলাম। দেখতে গেল এই ব্রেক আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। এখানে ফিরে নেটে ব্যাট করার সময়ে ভাল অনুভূতি এসেছিল।'
 


আরও পড়ুন: Yashasvi Jaiswal | Virat Kohli: যশস্বীকে বিরাট সার্টিফিকেট কোহলির, 'জলদি পাবে নতুন ক্যাপ'! ভাইরাল ভিডিয়ো



এশিয়া কাপে নামার আগে কোহলির মনের মধ্যে যে সুনামি চলছিল, তা কোহলিই সবচেয়ে ভাল জানেন। এশিয়ার সেরা হওয়ার লড়াইয়ে নামার আগে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলে দিয়েছিলেন যে, তিনি ডিপ্রেশনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এক মাস ছুঁয়ে দেখেননি ব্যাট! যে কথা কার্যত অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। ক্রিকেট যদি ধর্ম হয়, তাহলে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধার্মিকের তকমা কোহলির কপালে লেখা হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাট ও আইপিএলে ধারাবাহিক ছন্দহীনতায় কোহলিকে কপিল দেবের মতো প্রাক্তনরা ছেঁটে ফেলেছিলেন। বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি অধিনায়ক বলে দিয়েছিলেন 'কিং কোহলি'কে টি-টোয়েন্টি দল থেকে কেন বাদ দেওয়া হবে না! বাইশ গজে বিরাটের সেই আগ্রাসী ব্যাট কোথাও যেন কর্পূরের মতো উবে গিয়েছিল। স্বভাবতই কোহলির 'বিরাট' ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনা বেড়েই চলেছিল। কিন্তু কোহলি সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন সেই ব্যাট শাসনেই। 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)