জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে (M Chinnaswamy Stadium, Bengaluru) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর মুখোমুখি হয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংসের (Royal Challengers Bangalore vs Chennai Super Kings, RCB vs CSK)। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে আরসিবি হেরেছে আট রানে। তবে ম্যাচের পর চিন্নাস্বামীতে আর ম্যাচের কোনও রেশ ছিল না। যাবতীয় লাইমলাইট কেড়ে নেন ভারতীয় ক্রিকেটের দুই বিশ্বস্ত সেবক। সিএসকে ক্যাপ্টেন এমএস ধোনি (MS Dhoni) ও আরসিবি মহাতারকা বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। জাতীয় দলের দুই প্রাক্তন সতীর্থের ফের দেখা খেলার মাঠে। ধোনিকেই জীবনের শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক মানেন কোহলি। ধোনিকে পেয়ে আর ছাড়তে চাইলেন না। কখনও জড়িয়ে ধরলেন, তো কখনও হাসি-ঠাট্টায় মাতলেন। তাঁদের ছবি ও ভিডিয়ো নেটদুনিয়ায় মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। আর কোহলির হৃদয়ে ধোনি ঠিক কোন জায়গায়, তা কিছু মাস আগে ফিরলেই বোঝা যাবে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে এশিয়া কাপ চলাকালীন কোহলি বলেছিলেন যে, কেন তিনি ধোনির কাছে আজীবন ঋণী। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তারিখ ছিল ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তান পাঁচ উইকেটে হারিয়েছিল ভারতকে। গ্রুপ পর্যায় ভারতও এই ব্য়বধানেই হারিয়েছিল পাকিস্তানকে। এশিয়া কাপ শুরুর আগে থেকেই বলা হচ্ছিল যে, কোহলিকে টি-২০ বিশ্বকাপের দলে রাখার প্রয়োজন নেই। কারণ কোহলি সে সময়ে এবং তারও অনেক আগে থেকে হতশ্রী ফর্মের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তবে এশিয়া কাপের শুরু থেকেই কোহলি বুঝিয়ে দেন যে, জঙ্গলের রাজা এবার ফিরছে। পাকিস্তানের  বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেট হারের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন বিরাট। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩৪ বলে ৩৫ করার পর, কোহলি হংকংয়ের বিরুদ্ধে করেছিলেন ৪৪ বলে ৫৯ রান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তৃতীয় ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ৪৪ বলে ৬০ রান।   


আরও পড়ুন: RCB vs CSK: রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ধোনিদের অবিশ্বাস্য জয়! দুরন্ত লড়েও পারল না আরসিবি





বিরাট বলেন, 'আমি যখন টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ি, তখন এক জন মাত্র প্রাক্তন ক্রিকেটার আমাকে ফোন করেছিল। অনেকের কাছেই আমার নম্বর আছে। কিন্তু ফোন করেছিলেন শুধু মহেন্দ্র সিং ধোনি। এর থেকেই বোঝা যায় কে আমার ভাল চায়। একজনের সঙ্গে আর একজনের সম্পর্ক যদি জেনুইন হয়, একজনের প্রতি যদি সম্মান থাকে, তাহলে সেটা বোঝা যায়। না এমএস ধোনির থেকে আমার কিছু চাই। না এমএস আমার কাছ থেকে কোনও সাহায্য চেয়েছে। আমরা দুজন কেউ কাউকে নিয়ে নিরাপত্তার অভাবে ভুগি না। সেইজন্য আমাদের সম্পর্কটা রয়ে গিয়েছে।'


এই এশিয়া কাপেই কোহলি জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-২০ শতরান পেয়েছিলেন। এর সঙ্গেই ১০২০ দিন পর সব ফরম্যাট মিলিয়ে তিন অঙ্কের রানের দেখা পান বিরাট। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করার পরেও বিরাটের মুখে ছিল ধোনিরই কথা। বিরাট সেদিন বলেছিলেন 'সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে, ওই কঠিন সময়ে অনুষ্কাই ছিল আমার সব চেয়ে বড় শক্তির উৎস। ওই সময় সারাক্ষণ অনুষ্কা আমার সঙ্গে ছিল। ও জানে ঠিক কী সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলাম। কী হয়েছিল আমার। অনুষ্কা, পরিবারের লোক, শৈশবের কোচ বাদ দিয়ে যদি কোনও একজন আমার পাশে ছিল, সেটা এমএস ধোনি। ধোনি নিজে আমার কাছে এসেছিল। আমি যে কোনও দিন যদি ওকে ফোন করি, তাহলে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে ও ফোন ধরবে না। কারণ ও ফোনের দিকে তাকায় না। সেখানে ধোনি নিজে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। একবার নয়, দু'বার আমার সঙ্গে ঘটেছে এমনটা। ও আমাকে মেসেজে লিখেছিল,যখন তুমি শক্ত হওয়ার চেষ্টা কর এবং নিজেকে একজন শক্তিশালী মানুষ হিসেবে দেখ, তখন কেউ জিজ্ঞাসা করে না, কেমন চলছে তোমার! ধোনির এই বার্তাই আমার ভাবনা বদলে দিয়েছিল। ধোনি এমন একজন মানুষ যে, সব সময় ভীষণ আত্মবিশ্বাসী, মানসিক ভাবে প্রচণ্ড শক্তিশালী। যে কোনও পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারে, শুধু তাই নয়, রাস্তা বার করে সেটা আমাদের দেখায়। কখনও কখনও, এটা উপলব্ধি করতে হয় যে, কোনও মানুষকে জীবনের যে কোনও নির্দিষ্ট সময়ে কয়েক ধাপ পিছিয়ে যেতে হবে। বুঝতে হবে যে কী চলছে, কীভাবে নিজের ভালো থাকাটা নির্ভর করে।' কোহলি কোথাও আবার বুঝিয়ে দিলেন যে, তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ অধিনায়কের নাম ধোনিই। যিনি মাঠের নন, জীবনেরই ক্যাপ্টেন।



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)