ISL 2021-22: ডার্বি যুদ্ধের আগে কীভাবে হুঙ্কার দিলেন Hugo Boumous?
ম্যাড়ম্যাড়ে ডার্বি জয়ের আশায় সবুজ-মেরুন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মাঝে আর মাত্র এক দিন। এরপরেই চলতি আইএসএল-এ ফিরতি ডার্বির কিক অফ। ৯০ মিনিটের আবগের লড়াইয়ের আগে এটিকে মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গল দুই দলই ডার্বির আগের ম্যাচ জিতে শেষ করতে পারেনি। লিগ টেবলে দুই দলেরই অবস্থান খুব একটা ভাল না। সবুজ-মেরুন আটে রয়েছে। সেখানে লাল-হলুদ সবার শেষে। তাই সেই দিক থেকে দেখতে গেলে একেবারে ম্যাড়ম্যাড়ে ডার্বি।
এর মধ্যে আবার দুই দল ডার্বি যুদ্ধে নামার আগে করোনা হানায় আক্রান্ত হয়েছিল। পারফরম্যান্সের বিচারে এটিকে মোহনবাগান এগিয়ে রয়েছে। এমনকি ভাইরাসের ধাক্কা কাটিয়ে ১৮ দিন বাদে মাঠে নেমে গত ম্যাচে ওডিশার বিরুদ্ধে মাঠে রীতিমতো ঝড় তুলে দিয়েছিল সবুজ-মেরুন বাহিনী। কিন্তু আসল কাজের কাজ করতে পারেননি রয় কৃষ্ণা-ডেভিড উইলিয়ামসরা।
গত ২৭ নভেম্বর প্রথম পর্বের ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দী এসসি ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল সবুজ-মেরুন। সেই ম্যাচের বৃত্তান্ত টেনে ফরাসি মিডফিল্ডার হুগ বুমৌস এই মর্যাদার ম্যাচের আগে বলেন,”গতবারের চেয়ে এ বার যে পরিস্থিতি আলাদা, এটা ঠিকই। শুধু ফুটবল নয়, অন্যান্য বিষয়েও মনোনিবেশ করতে হচ্ছে আমাদের। অনেক দিন অনুশীলন করতে পারিনি আমরা। তাই এখন কঠোর পরিশ্রম করে নিজেদের জায়গায় ফিরতে হবে আমাদের। ডার্বির গুরুত্ব সবসময়ই আলাদা। বাড়তি মোটিভেশন নিয়ে ম্যাচটা খেলতে হয়। আমি আত্মবিশ্বাসী, এ বারেও আমরাই জিতব”।
আরও পড়ুন: Surajit Sengupta: কেমন আছেন কিংবদন্তি ফুটবলার? কী বলছে মেডিক্যাল বুলেটিন!
রেফারির সঙ্গে দুর্ব্যবহারের শাস্তি স্বরূপ পাঁচ ম্যাচের নির্বাসন কাটিয়ে এই ম্যাচেই মাঠে ফিরবেন বুমৌস। এখনও পর্যন্ত ন’টি ম্যাচে পাঁচটি গোল ও তিনটি অ্যাসিস্ট করেছেন বুমৌস। তিনি যোগ করেন, “এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গত বার আমরা জিতেছি বা ওরা গত ম্যাচে হায়দরাবাদের কাছে চার গোল খেয়েছে বলে ওদের খাটো করে দেখার কোনও কারণই নেই। ওরা প্রতিশোধ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই নামবে। শেষ চারে বা চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে ফিরতে হলে এই ম্যাচে জিততেই হবে আমাদের। বাতিল হওয়া ম্যাচগুলি থেকেও পুরো পয়েন্ট তুলতে হবে আমাদের”।
গত ম্যাচে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে জিততে পারেনি এটিকে মোহনবাগান। গোলশূন্য ড্র হয় সেই ম্যাচে। গত চারটি ম্যাচের মধ্যে দু’টি জয় ও দু’টি ড্র রয়েছে তাদের। বুধবার দক্ষিণী ডার্বিতে বেঙ্গালুরু এফসি ৩-০-য় চেন্নাইন এফসি-কে হারানোর পর এটিকে মোহনবাগান আট নম্বরে নেমে গিয়েছে। এই অবস্থা থেকে দলকে তুলে নিয়ে আসাই এখন বুমৌসের মতো তারকাদের প্রধান কাজ।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, “শেষ ম্যাচে আমরা জিততে পারিনি ঠিকই। কিন্তু প্রচুর গোলের সুযোগ নষ্ট করেছি। আমাদের দলের পজিটিভ দিক এটাই। আমরা প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারছি। সেগুলো যাতে গোলে পরিণত করা যায়, সে জন্য আমরা কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি”।
দলের মিডফিল্ডারের সঙ্গে প্রায় একমত অধিনায়ক প্রীতম কোটাল। সবুজ-মেরুন শিবিরে সবচেয়ে বেশি ডার্বির অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই তারকা ডিফেন্ডার বলেন, “অনেকে বলছেন হায়দরাবাদের কাছে ওরা চার গোল খাওয়ায় আমরা সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছি। আমার তা মনে হয় না। সবচেয়ে বেশি ডার্বির অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই ম্যাচে কী হবে কেউ বলতে পারে না। তবে শেষ দু’টি ম্যাচ ড্র করলেও এই ম্যাচে আমরা জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। রক্ষণ আঁটোসাঁটো রেখে খেলতে পারলে ঠিক গোল পেয়ে যাব।“
ডার্বি প্রসঙ্গে প্রীতম আরও যোগ করেন,”আমরা বাংলা ছেলে। ডার্বি হেরে চ্যাম্পিয়ন হলেও সমর্থকদের কাছে শুনতে হয়, চ্যাম্পিয়ন হয়েছ তো কী হয়েছে, ডার্বি তো জিততে পারোনি। তাই এই ম্যাচে জিততেই হবে। আমাদের নতুন কোচের দর্শন আলাদা, তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়তো সময় লাগছে। কিন্তু শেষ ম্যাচে আমরা যথেষ্ট ভাল খেলেছি।“
দলের আর এক বাঙালি ফুটবলার শুভাশিস বোস মনে করেন, “এ বারের ডার্বিতে আবেগের সঙ্গে লিগের অঙ্কও গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচে জিততে পারলে ফের সেরা চারে ঢুকে পড়ব। তাছাড়া অন্যদের চেয়ে কম ম্যাচ খেলাটাও আমাদের পক্ষে সুবিধাজনক। সেই সুযোগটা নিতে হবে। লড়াইটা কঠিন। তাই আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই আমাদের শিবিরে।“
এই আত্মবিশ্বাস শনিবার কী ভাবে কাজে লাগাতে পারেন বুমৌস,কৃষ্ণারা, সেটাই দেখার বিষয়।