জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তিন মাস পর ফের দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসেছেন ভিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat) ও সাক্ষী মালিকের (Sakshi Malik) মতো ভারতের (India) একাধিক নামী কুস্তিগিররা। তাঁদের দাবি একটাই। গ্রেফতার করতে হবে জাতীয় কুস্তি সংস্থার (Wrestling Federation of India) সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংকে। (Brij Bhushan Sharan)। ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে গুরুতর যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন দেশের একাধিক কুস্তিগিররা। তাঁদের তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক কিংবদন্তি বক্সার মেরি কমের (Mary Kom) নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা পড়ে গত মাসে। মেরি কমের কমিটি জানিয়ে দেয় যে, ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গত রবিবার থেকে ভিনেশ-সাক্ষীরা যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসেছেন। তাঁদের অভিযোগের তীর দিল্লি পুলিসের বিরুদ্ধে। কারণ দেশের রাজধানীর পুলিস যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পেয়েও কোনও এফআইআর দায়ের করেনি। বারাবার বলেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি দিল্লি পুলিস। এবার ভিনেশরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেখানে গিয়ে এফআইআর নিবন্ধনের আবেদন করেছেন তাঁরা। এবার কুস্তিগীররা একহাত নিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Prime Minister Narendra Modi)


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সাক্ষী ধর্নামঞ্চ থেকে বলেন, 'পিএম মোদী স্যার 'বেটি বাঁচাও', 'বেটি পড়াও'-এর কথা বলেন, 'মন কী বাত'-এ সকলের কথা শোনেন, উনি কি আমাদের 'মন কী বাত' শুনতে পারছেন না? আমরা পদক জিতলে, উনি আমাদের বাড়িতে ডেকে প্রচুর সম্মান দেন, নিজের মেয়ে বলে ডাকেন। আমি মোদী স্যারকে অনুরোধ করছি, এবার আমাদের মন কী বাত শুনতে।' রিও অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ পদক জয়ী সাক্ষী বিঁধেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকেও। সাক্ষী বলছেন, 'আমি স্মৃতি ইরানি কে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, এখন উনি নীরব কেন! চার দিন হল আমরা রাস্তায় শুয়ে মশার কামড় খাচ্ছি। দিল্লি পুলিস আমাদের রাস্তায় খাবারও তৈরি করতে দিচ্ছে না, ট্রেনিংও করতে দিচ্ছে না। স্মৃতি কেন চুপ করে আছেন? আমি শুধু বলতে চাই যে, উনি এখানে আসুন, আমাদের কথা শুনুন। সমর্থন করুক।' এই আন্দোলনের মুখ ভিনেশ। তিনি সাক্ষীর সুরে গলা মিলিয়ে একহাত নিয়েছেন মোদীকে। ভিনেশ বলেন ,'আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে আবেদন জানাচ্ছি, যাতে উনি আমাদের এই কান্না শুনতে পান। আমাদের অন্তরাত্মা প্রায় মৃত। উনি হয়তো দেখবেন। উনি 'মন কী বাত' অনুষ্ঠান করেন। তবে ওঁর কি আমাদের 'মন কী বাত' শোনার জন্য এক মিনিটও সময় আছে? উনি কি দেখতে পারছেন না যে, দেশের মেয়েরা রাস্তায় এসে বসেছে আজ। একজন বড় অপরাধীর সঙ্গে লড়াই করে তাঁরা কুস্তিটাই ছাড়তে চলেছে?'


আরও পড়ুনWrestler's Protest at Jantar Mantar: কুস্তি সংস্থার প্রধানকে করতেই হবে গ্রেফতার! এবার সুপ্রিম কোর্টে ভিনেশ-সাক্ষীরা


এক অপ্রাপ্তবয়স্ক সহ কুস্তিগীরদের পক্ষে ৩২ ধারার অধীনে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ কমিশনারকে ডব্লিউএফআই প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে, আবেদনে বলা হয়েছে। পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে যে ডব্লিউএফআই সভাপতির বিরুদ্ধে এফআইআর নিবন্ধনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত দেরি হয়েছে। এমনকি ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে শুধুই যৌন হেনস্থা নয়, পকসো (প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনেও অভিযোগ রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যৌন হেনস্থা এবং মৃত্যুর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে ব্রিজ ভূষণের শাস্তি এবং ভারতীয় কুস্তি সংস্থার প্রশাসনের পরিবর্তন দাবি জানিয়ে নতুন দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ভিনেশ-সাক্ষীর মতো দেশের প্রথম সারির কুস্তিগীররা। সেই অবস্থান বিক্ষোভে তাঁরা দাবি করেছিলেন, ফেডারেশন কর্তারা মহিলা কুস্তিগীরের সঙ্গে অশ্লীল ব্যবহার করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অভিযোগ করার জন্য ভিনেশ ফোগাটকে নাকি খুনের হুমকিও দিয়েছিলেন ব্রিজ ভূষণ!। সেই হুমকির জন্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যার কথাও নাকি ভেবেছিলেন ভিনেশ। একাধিক কুস্তিগীরের প্রতিবাদের জন্য কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক গত ২৩ জানুয়ারি মেরি কমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। পরে কুস্তিগীরদের দাবিতে এই কমিটিতে ববিতা ফোগাটকে ষষ্ঠ সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। এই কমিটিকে বলা হয়েছিল এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে। পরে আরও দুই সপ্তাহের সময়সীমা বাড়ানো হয়। সেই রিপোর্ট ব্রিজ ভূষণকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়নি।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)