সৌরভ পাল


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কমেন্ট্রি বক্সে তখন বীরেন্দ্র সেওয়াগ ও শোয়েব আখতার। শেষ ওভারের খেলা। ৬ বলে ১১। প্রথম বলে ১ রান। উত্তেজনার পারদ বেঙ্গালুরুর ২২ গজেই সীমাবদ্ধ ছিল না। মহারণে যারা খেলছিলেন আর যারা বাইরে থেকে খেলা দেখছিলেন, সবারই যেন হার্ট বিট রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের মত ছুটছিল। দর্শকাসনে বেঙ্গালুরুর ৫০ হাজারি দর্শক আর গোটা দেশ, একটাই প্রার্থনা, ভারত ম্যাচ জিতুক। কিন্তু বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড দেখে একথা কোনও ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যায় দেওয়া সম্ভব ছিল না, ভারত জিতবে। কমেন্ট্রি বক্সে বসে বীরু তাঁর সাবলীল ভঙ্গিতেই বলে উঠলেন, "যাদের হৃদয় কমজোর, তাঁরা এই শেষ পাঁচ বল দেখবান না, হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাবে"।



সত্যিই সেদিন বুকের বা দিকে হাত রেখে বসে ছিল ১২০ কোটির ভারত। অবশ্যই বাংলাদেশও। ৫টি টি-টোয়েন্টিতে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ৪টি ম্যাচেই গো হারান। প্রথমবার জয়ের এত কাছে। ভারতের মাটিতে, বিশ্বকাপের মঞ্চে আবারও ২০০৭ ফিরিয়ে নিয়ে আসার চূড়ান্ত 'মওকা'। জাস্ট মিস! হার্দিকের দ্বিতীয় আর তৃতীয় বলে পর পর চার। প্রথমটি কভার দিয়ে, আর পরেরটি স্কুপ শটে। যা, ভারত হেরে গেল, হ্যাঁ, ঠিক এমনটাই মনে হচ্ছিল। হাতে ৪ উইকেট, ৩ বলে ২ রান। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতছে। হার্ট অ্যাটাকটা বোধহয় এবারই হওয়ার ছিল! ৪ নম্বর বলে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট মুশফিকুর। পরের বলে একই রকমভাবে বড় শট নিতে গিয়ে আউট মহমদুল্লা।


ক্রিজে শুভাগত ও মুস্তাফিজুর। দুজনেই অনভিজ্ঞ। এমন চাপে কখনও পড়তে হয়নি তাঁদের। ৩ বলে ২ রান থেকে ম্যাচ এবার ভারতের দিকে। ১ বলে দুই। ডট হলে ম্যাচ জিতছে ভারত। আর ১ রানে ম্যাচ ড্র। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবার সুপার ওভার হবে। বুক ধুক পুক বাড়ছে। শেষ বলের আগে থেকেই বুকে ব্যাথা অনুভব করছিলেন উত্তরপ্রদেশের ওম প্রকাশ বাবু। শেষ বল দেখার আগে, একটু ঢোক গিলে নিয়েছিলেন ওম প্রকাশ শর্মা। বল হাতে নিয়ে দৌঁড় শুরু করেছে হার্দিক। ব্যাটে তখন শুভাগত। ৩০ গজের মধ্যে গোটা দল। ব্যাক অব দ্য লেন্থ ডেলিভারি, অফ স্ট্যাম্পের বাইরে, মিস করল ব্যাটসম্যান। ধোনির হাতে পৌঁছাতেই নন স্ট্রাইকারে থাকা মুস্তাফিজুর দৌঁড় শুরু করেছে। বল না ছুঁড়ে দৌঁড়াচ্ছেন ধোনি। এই ২২ গজের দৌঁড়ে যে প্রথম, জিতবে সে। জয়টা ধোনির। মুস্তাফিজুরের পৌঁছানের আগেই উইকেট ভাঙলেন ক্যাপ্টেন মাহি। এই রোমাঞ্চ উপভোগ করেছেন ওম প্রকাশ শর্মা, কিন্তু হৃদস্পন্দনকে আর থামাতে পারেননি। চিড় ধরার মত ব্যাথা, অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে বুক ধরে বসে পরেছিলেন তিনি। হার্ট অ্যাটাক। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই মৃত্যু।