অর্কদীপ্ত মুখোপাধ্যায়: এবার টোকিও অলিম্পিক্সে ভারত থেকে ১১৯ জন (৬৭ জন পুরুষ ও ৫২ জন মহিলা) অ্যাথলিট প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাঁদের মধ্যে ২৬ জন কোয়ালিফাই করেছেন ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে। আগামী ৩০ জুলাই থেকে টোকিওতে শুরু এই ইভেন্ট। তার আগে 'কুইন অফ ইন্ডিয়ান ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড' পিটি ঊষা কথা বললেন জি ২৪ ঘণ্টার সঙ্গে। আলোচনায় উঠে আসল মীরাবাঈ চানুর অলিম্পিক্স পদক থেকে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের একাল-সেকাল ও এবারের অলিম্পিক্সে ভারতের পদক সম্ভাবনার মতো বিষয়গুলি। এই প্রতিবেদনে রইল সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


প্রশ্ন: মীরাবাঈ চানুর পদক জয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
পিটি ঊষা: আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। প্রতিটি দেশবাসীর মতো আমিও চানুর সাফল্যে গর্বিত। কর্নম মালেশ্বরীর পর ও আমাদের দেশকে অলিম্পিক্স থেকে ভারোত্তোলনে পদক (রুপো) এনে দিয়েছে। নিঃসন্দেহে বিরাট কৃতিত্বের।


প্রশ্ন: এবারের টোকিও অলিম্পিক্সে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে ভারতের কী সম্ভাবনা দেখছেন? 
পিটি ঊষা: এবার ২৬ জন কোয়ালিফাই করেছে। কোয়লিফাই করাটাই কিন্তু ভীষণ কঠিন। কারণ অ্যাথলেটিক্স আর পাঁচটা খেলার মতো নয়। যাঁরা কোয়ালিফাই করেছে তারা যদি ধারাবাহিকতা দেখাতে পারে তাহলে অবশ্যই ফাইনালে পৌঁছাতে পারে অনেকে। আর ধারাবাহিকতার কথা বললে আমি বলব আমাদের জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরাজ চোপড়ার কথা। ও এক নম্বর। ওর কিন্তু পদক জয়ের সম্ভাবনা আছে টোকিওতে।


প্রশ্ন: ১৯৮৪ তে লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক্সে অল্পের জন্য ব্রোঞ্জ হাতছাড়া হয়েছিল আপনার! সেই অভিজ্ঞতা যদি বলেন।
পিটি ঊষা: মাত্র ১/১০০ সেকেন্ডের জন্য পদক না পাওয়ার আক্ষেপটা থেকেই যাবে। সেটা বলে বোঝানো যাবে না। আমি হেরে গেলাম শুধু অভিজ্ঞতা ও এক্সপোজারের অভাবে। আমি অলিম্পিক্সে নামার আগে মাত্র দু'বার ৪০০ মিটারের হার্ডেলে ছুটেছিলাম। আমি প্রাক অলিম্পিক ট্রায়ালে ৫৫.৭ সেকেন্ডে আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন স্প্রিন্টার জুডি ব্রাউনকে হারিয়ে ছিলাম। সেটাই আমার অলিম্পিক্সে নামার অন্যতম মোটিভেশন ছিল। সেমিফাইনালের পর কোচ আমাকে বলেছিল আমি প্রথম হার্ডেল ৬.৮ সেকেন্ড শেষ করেছিলাম, সাধারণত আমি ৬.২ সেকেন্ড সময় নিতাম। যেটা অনেকটাই ধীর গতির ছিল। কোচ বলেছিলে প্রথম হার্ডেলে গতি বাড়াতে পারলে আমার পদক আসবে। আমি সেদিকেই মনোনিবেশ করেছিলাম। দৌড়ের দিন কিছুটা নার্ভাস ছিলাম, হাতও কাঁপছিল। আবারও প্রথম হার্ডেল আমি ধীর গতিতে দৌঁড়েছিলাম। ৬.৭ সেকেন্ড নিই। হয়তো ভাল করলে রুপোও পেতে পারতাম। অভিজ্ঞতটা মনে থাকবে। 


প্রশ্ন: আপনাদের সময় অ্যাথলেটিক্সের সঙ্গে এখনকার অ্যাথলেটিক্সের কতটা বদল দেখেন?
পিটি ঊষা: আমাদের সময় সুযোগ থেকে শুরু করে পরিকাঠামো কিছুই ছিল না। আমি মস্কো অলিম্পিক্সে গিয়ে সিন্থেটিক ট্র্যাক দেখেছিলাম। এখন প্রতিটি রাজ্যে প্রতি জেলায় রয়েছে সিন্থেটিক ট্র্যাক। এখন তো কোচ থেকে শুরু করে রিকভারি এক্সপার্ট, ফিজিও, ম্যাসিও সকলেই বিদেশি। এত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে অ্যাথলিটরা। তাদের তো উচিত অলিম্পিক্স থেকে পদক নিয়ে ফেরা। আমরা এর কিছুই পাইনি তখন। আমরা ইউরোপ হতে পারিনি। কিন্তু উন্নতি করেছি। কিন্তু পদক আসছে না। সেভাবে দৌড়াতে পারছি না। এত প্রযুক্তি পেয়ে তো পদক পাচ্ছি না আমরা।


প্রশ্ন: আমাদের কোথায় সমস্যা হচ্ছে?
পিটি ঊষা: অ্যাথলেটিক্স এত সহজ নয়। এটায় দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি। স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করতে হয়। আমাদের রানিং মেকানিজমটাই ঠিক নেই। ইউরোপিয়ান অ্যাথলিটদের ট্রেনিং থেকে দৌড়ের স্টাইল, সবটাই কী মসৃণ আর সুন্দর। দেখতেও ভাললাগে। তবে সবার আগে রানিং মেকানিজমটা ঠিক করতে হবে আমাদের। ওটাই ঠিক করতে হবে সবার আগে। দক্ষতা বাড়াবে। জাতীয় ক্যাম্পে ঢোকার পরেই যাবতীয় সুযোগ পাওয়া যায়। তাহলে কেন দৌড়টা ঠিক হবে না। সেটাই দেখতে হবে আমাদের।


প্রশ্ন: টোকিওতে ভারতীয় অ্যাথলিটদের জন্য কী বার্তা থাকবে আপনার?
পিটি ঊষা: আমি সবাইকে বলব, প্রত্যেকেই কোয়ালিফাই করেই ওই জায়গায় এসেছে। নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সের পুনরাবৃত্তিই ঘটাতে হবে। তাহলে ফাইনাল, সেমিফাইালে যাওয়া যাবে। নিজেদের সেরাটা দিতে বলব। আর সকলকে আমার শুভেচ্ছা।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)