Ranji Trophy Final 2023, BEN vs SAU: পুরো ডিআরএস-কে স্বাগত জানালো মনোজের বঙ্গব্রিগেড
অর্ধেক ডিআরএস থাকার জন্য অনুষ্টুপ তো এবার নিজেই ভুক্তভোগী। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ রানে ব্যাট করার সময় তাঁকে আউট দেন অনিল চৌধুরী। সেই অভিজ্ঞ আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই `রুকু`-কে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল।
সব্যসাচী বাগচী
অনেক টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত বড় পদক্ষেপ নিয়ে ফেলল বিসিসিআই (BCCI)। ১৬ ফেব্রুয়ারি ইডেন গার্ডেন্সের (Eden Gardens) বাইশ গজে আয়োজিত হতে চলেছে রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল (Ranji Trophy Final 2023)। সেই মেগা ফাইনালে বাংলার (Bengal) বিপক্ষ সৌরাষ্ট্র (Saurashtra)। সেই ম্যাচে থাকছে পুরো ডিআরএস (Decision Review System)। আন্তর্জাতিক মঞ্চে যে নিয়মে ডিআরএস (DRS) প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, ঠিক সেই নিয়ম মেনেই আসন্ন রঞ্জি ফাইনালে থাকছে ডিআরএস। মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) অনুশীলনের শেষে পুরো ডিআরএস-কে স্বাগত জানাল মনোজ তিওয়ারির (Manoj Tiwary) বঙ্গব্রিগেড।
আন্তর্জাতিক ম্যাচের মতোই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে ইডেনে। অর্থাৎ আল্ট্রাএজ, বল ট্র্যাকিং সব কিছুই থাকছে মেগা ফাইনালে। আম্পায়ার ভুলবশত কোনও সিদ্ধান্ত নিলেও রিভিউ নিয়ে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেন দু’দলের অধিনায়কেরাই। টেস্টের মতোই ইনিংস-প্রতি থাকছে তিনটি করে ডিআরএস। এই বিষয়ে অধিনায়ক মনোজ, হেড কোচ লক্ষ্মী রতন শুক্লা (Laxmi Ratan Shukla), অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Majumdar) নিজের বক্তব্য তুলে ধরলেন। আগেই অবশ্য এই ইস্যু নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন দলের স্পিন বোলিং কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী (Saurasish Lahiri)।
কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর নেওয়া একটি ক্যাচ নটআউট ঘোষণা করা হয়। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মনোজ। এহেন বঙ্গ অধিনায়ক বলেন, "ফাইনালের মতো বড় ম্যাচে পুরো ডিআরএস থাকছে এটা খুবই ভালো ব্যাপার। তবে আমার আবেদন হল রঞ্জি ট্রফির যে ম্যাচগুলো টিভি-তে সম্প্রচার করা হচ্ছে, সেই ম্যাচগুলোতেই পুরো ডিআরএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। কারণ লিগ পর্ব থেকেই তো প্রতিটা দল পরিশ্রম করে। সেই পর্বে একাধিক দল ভুল আম্পায়ারিংইয়ের শিকার হয়। সেই ভুল যাতে কমে, তাই পুরো ডিআরএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত।" ডিআরএস-কে কাজে লাগিয়ে সঠিক 'কল' নেওয়ার ক্ষেত্রে উইকেটকিপার অনেক বড় ভূমিকা নিয়ে থাকে। অভিষেক পোড়েলের সেই দিক থেকে অভিজ্ঞতা কম। যদিও মনোজ উপায় বাতলে দিলেন। তিনি যোগ করেন, "আমি সবসময় প্রথম স্লিপে থাকি। এমনিতেই কিপারের সঙ্গে সবসময় আলোচনা চলতেই থাকে। এবার তো আরও বেশি কথা বলব। এবং কোনও 'কল' নেওয়ার ক্ষেত্রে নিজের অভিজ্ঞতাকেই কাজে লাগাব।"
অর্ধেক ডিআরএস থাকার জন্য অনুষ্টুপ তো এবার নিজেই ভুক্তভোগী। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে সেমি ফাইনালের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ রানে ব্যাট করার সময় তাঁকে আউট দেন অনিল চৌধুরী। সেই অভিজ্ঞ আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই 'রুকু'-কে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল। দলের এহেন 'ক্রাইসিস ম্যান' বলছিলেন, "খুব ভালো সিদ্ধান্ত। পুরো ডিআরএস প্রযুক্তির ব্যবহার অবশ্য অনেক আগেই করা উচিত ছিল। তবে যাই হোক, রঞ্জি ফাইনালও বড় মঞ্চ। এমন ম্যাচে পুরো ডিআরএস থাকার জন্য আম্পায়ারের ভুল করার মার্জিন অনেক কমে যাবে। দুটি দলই চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারবে।" যদিও লক্ষ্মী কিন্তু ডিআরএস-কে তেমন মাতামাতি করতে রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, "ডিআরএস নিয়ে বাড়তি আলোচনা করে লাভ নেই। যেটা আমার হাতে নেই, সেটা নিয়ে এত মাথাব্যথা করতে কেন যাব!"
আরও পড়ুন: EXCLUSIVE, Ranji Trophy Final 2023: বাংলা দলের জন্য সুখবর, ইডেনের ফাইনালে থাকছে পুরো ডিআরএস
এই প্রসঙ্গে সৌরাশিস লাহিড়ী বলেন, "এটা খুবই ভালো সিদ্ধান্ত। রঞ্জি ট্রফি ফাইনাল ভারতের সবচেয়ে প্রতিযোগিতার সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এমন ম্যাচে আম্পায়ার ভুল করলে, ম্যাচের ফলাফল বদলে যায়। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে, এটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।"
২০১৯-২০ মরসুমের ফাইনালে সৌরাষ্ট্রের অর্পিত ভাসাবাদার বিরুদ্ধে লেগ বিফোরের আবেদন করেছিল বাংলা। তবে 'হাফ ডিআরএস' থাকার জন্য আম্পায়ার্স কলের জন্য সেই যাত্রায় বেঁচে যান অর্পিত। শতরান করার সুবাদে বাংলার কাছে থেকে সেই ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। সেই সিদ্ধান্ত বিপক্ষে যাওয়ার জন্য এখনও বঙ্গ শিবির থেকে আফসোস করা হয়। এমনকি মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে এবারের সেমি ফাইনালে অনিল চৌধুরীর ভুল সিদ্ধান্তের জন্য ৮০ রানে থামতে হয়েছে অনুষ্টুপকে। সেটা নিয়েও ক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তিনি। রঞ্জির কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই পুরো ডিআরএস চালু করার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাই শুধু বাংলা নয়, সৌরাষ্ট্রও বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে স্বস্তি পাবে।
গত বার পর্যন্ত আংশিক ডিআরএস ব্যবহার করা হত রঞ্জি ট্রফিতে। বোর্ড থেকে জানানো হয়েছিল, রঞ্জি ট্রফিতে এধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করার মতো পরিকাঠামো সব মাঠে নেই। কিন্তু ফাইনাল এবার ইডেনে। যেখানে একাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করা হয়। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মাঠে তাই পূর্ণ ডিআরএস প্রযুক্তির ব্যবস্থা থাকলে যে কোনও অসুবিধে হবে না, মনে করেছে বোর্ড। ক্রিকেটারেরাও চাপমুক্ত ভাবে খেলতে পারবেন। তাই এই প্রথমবার ঘরোয়া ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবার ডিআরএস-এর আমদানি করা হল।