নিজস্ব প্রতিবেদন : কেউ বলছিলেন, ধৈর্যের পরীক্ষা। কারও মত ছিল, মানসিক লড়াই। সাদা চোখে দেখলে দরকার ছিল মাত্র ৭২ রান। কিন্তু সেই ৭২ রান যে রনজি ফাইনালের শেষ  দিন পাহাড়ের মতো বাংলার ব্যাটসম্যানদের কাঁধে চেপে বসবে, কে জানত! ৩০ বছর আগের সেই সোনালী বিকেল আবার ফিরে আসবে বাংলার ক্রিকেটে। এমনই আশা করতে শুরু করেছিলেন বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুষ্টুপ মজুমদার, অর্ণব নন্দীরা পারলেন না। নিজেদের ডেরায় রনজি চ্যাম্পিয়ন হওয়া আর মাত্র সময়ের অপেক্ষা সৌরাষ্ট্রের কাছে। সৌরাষ্ট্রের ৪২৫ রানের জবাবে বাংলার প্রথম ইনিংস শেষ হল ৩৮১ রানে। অর্থাত মাত্র ৪৩ রান আগে স্বপ্নভঙ্গ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হাতে ছিল চার উইকেট। শেষ দিনে সৌরাষ্ট্রকে টপকে যতে হলে তুলতে হত মাত্র ৭২ রান। কিন্তু পঞ্চম দিনের সকালটা একটু আক্রমণাত্মক হয়েই শুরু করেছিলেন জয়দেব উনাদকাররা। অনুষ্টুপ ৬৩ রানে আউট হতেই বাংলার জয়ের আশা নিয়ে সংশয় দেখা দিতে শুরু করে। একার হাতেই লড়াই করছিলেন অর্ণব নন্দী। তিনি ৪০ রানে অপরাজিত থাকলেন বটে! কিন্তু উল্টোদিকে একের পর এক উইকেট পড়ল। এবারের মতো রানার্স হয়েই ফিরতে হচ্ছে বাংলাকে। রনজি ফাইনালের ফল নির্ধারণ হত প্রথম ইনিংসের ভিত্তিতে। আর সেই হিসেবেই এগিয়ে গেল সৌরাষ্ট্র। 


রনজি ফাইনালে বাংলার সুদীপ চ্যাটার্জীকে নিয়ে আলাদা করে বলতেই হয়। সৌরভ গাঙ্গুলির পরবর্তী সময় তাঁকে বাংলার অন্যতম প্রতিভাবান বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান হিসাবে ধরা হয়েছিল। কিন্তু গত রনজি মরশুমে অফ ফর্ম-এর অন্ধকারে ডুবতে থাকেন তিনি। ধারাবাহিকতার অভাবে ধুঁকতে থাকেন। বাংলার ক্রিকেটাকাশ থেকে আস্তে আস্তে হারিয়ে যান সুদীপ। কিন্তু এবার রনজিতে সেমিফাইনালে তাঁকে আবার দলে নেওয়া হয়। তার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৬ করে সুদীপ বুঝিয়ে দেন, তাঁর ফর্মে ফেরাটা এখন স্রেফ সময়ের অপক্ষা। ফাইনালে সেই সুদীপ খেললেন ৮১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। বাংলার ক্রিকেটের সমর্থকরা তাঁকে নিয়ে এবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতেই পারেন। আরও একজনের কথা উল্লেখ করতেই হয়। ঋদ্ধিমান সাহা। পুত্র সন্তানের বাবা হওয়ার পরের দিনই দলের সঙ্গে যোগ দিতে রওনা হন তিনি। ফাইনালে ৬৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে দলকে ভরসা দেন তিনি।


আরও পড়ুন-  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অস্ট্রেলিয়ার পেসার, আর্সেনালের কোচ! আতঙ্ক খেলার দুনিয়ায়


স্বপ্নভঙ্গ হল ঠিকই। তবে সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, ঋদ্ধিমান সাহা, অনুষ্টুপ মজুমদার ও অর্ণব নন্দী- চার বঙ্গসন্তান যেন লড়াইয়ের নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করে গেলেন। হার-জিত তো খেলার অঙ্গ। চ্যাম্পিয়ন সৌরাষ্ট্রের কথা ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে লেখা থাকবে। পাশাপাশি ফাইনালে এই চার বঙ্গসন্তানের লড়াইয়ের কথাও উল্লেখ থাকবে ইতিহাসের অন্য কোনও পাতায়।