জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারতের রোশিবিনা দেবী নওরেম অবশেষে কাটিয়ে উঠলেন সব ভয়। ভয়কে জয় করে দেশের হাতে তুলে দিলেন আরও একটি পদক। মণিপুরের বাড়িতে দাঙ্গার ভয়, গেমসে তাঁর তিন সতীর্থর ভিসা না পাওয়ার হতাশা, সব কাটিয়ে উঠে হাংঝৌ এশিয়ানে মহিলাদের ৬০ কেজি উশু ইভেন্টে রুপো জিতেছেন। বৃহস্পতিবার ফাইনাল ম্যাচে স্থানীয় ফেভারিট এবং সোনার মেডেল জয়ের অন্যতম দাবিদার চিনের উ জিয়াওইয়ের কাছে ০-২ গোলে হেরেছেন তিনি। জাকার্তায় ২০১৮ সালের খেলায় ব্রোঞ্জ জয়ের পর এটি ছিল রোশিবিনার দ্বিতীয় এশিয়ান গেমস পদক। ২০১০ সালে গুয়াংজু গেমসে একই ওজনের বিভাগে ওয়াংখেম সন্ধ্যারানি দেবী ফাইনালে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করার পরে গেমসে উশুতে এটি ভারতের দ্বিতীয় ব্যক্তিগত রুপোর পদক ছিল।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

স্বর্ণপদকের ম্যাচে, রোশিবিনা তার চিনা প্রতিপক্ষের সামনে আক্রমণণের চেষ্টা করেলেও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন উ জিয়াওই দ্রুত তা বুঝতে পেরে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন।


আরও পড়ুন: Shah Rukh Khan: 'বিরাট আমার...'! শাহরুখের মন্তব্যে ঝড় উঠল নেটপাড়ায়


তিন বন্ধুর জন্য পদক উৎসর্গ


রোশিবিনা বলেন, ‘আমি রুপোর পদক জিতে খুশি কিন্তু সোনার পদক পেতে না পারার জন্য আমি কিছুটা দুঃখিত’।


তিনি আরও বলেন, 'আমার তিন বন্ধুর জন্য জিততে চাই যারা এখানে আসতে পারেনি’। তিনি বলেন, ‘আমি আমার তিন বন্ধুর জন্য জিততে চাই যারা এখানে আসতে পারেনি’। ২০১৯ দক্ষিণ এশিয়ান গেমস চ্যাম্পিয়ন বলেছেন, ‘আমার পাশে ওনিলুর থাকয় আমি অভ্যস্ত। আমরা প্রায়ই একসঙ্গে প্রশিক্ষণ করি এবং ভাল বন্ধু। এই ধরনের বড় ইভেন্টগুলিতে, আপনার সঙ্গে স্বচ্ছন্দ এমন কাউকে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ’।


নেইমান ওয়াংসু, ওনিলু তেগা এবং মেপুং লামগু হলেন অরুণাচল প্রদেশের তিনজন ক্রীড়াবিদ যাদের হাংঝৌ গেমসে অংশ নেওয়ার ভিসা চিন প্রত্যাখ্যান করেছিল। ওনিলু হলেন রোশিবিনার স্পারিং পার্টনার।


তিনি বলেন, ‘উশু ভারতের একটি ছোট পরিবার এবং আমরা সবাই খুব কাছাকাছি থাকি। আমি আমার সাফল্য আমার বাবা-মা এবং সঙ্গী ক্রীড়াবিদদের উৎসর্গ করতে চাই যারা এখানে নেই। আমি ওনিলু, নেইমান ওয়াংসু এবং মেপুং লামগুর হয়ে জিততে চাই। এটা তাদের জন্য আমার উপহার হবে’।


আরও পড়ুন: Mohun Bagan: ন'জনের বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট তুলে আনল মেরিনার্স


বাবা-মায়ের জন্য ভয়


রোশিবিনার এশিয়ান গেমসে বন্ধুদের আসতে না পারার পাশাপাশি আরও একটি উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে রোশিবিনাকে। মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলার কোয়াসিফাই মায়াই লেইকেই গ্রামের বাসিন্দা রোশিবিনা। এই জায়গা ইম্ফল থেকে প্রায় এক ঘণ্টা দূরে। রোশিবিনাকে প্রতিদিন বাবা এবং মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়েছে শুধুমাত্র গেমস ভিলেজে তার প্রশিক্ষণের আনন্দ জানানোর জন্য নয় বরং তাদের সুস্থতা সম্পর্কে জানতে। প্রায় চার মাস ধরে মণিপুরে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে।


তিনি বলেন, ‘আমার করার কিছু নেই। আমি যা করতে পারি তা হল নেতিবাচকতা থেকে দূরে থাকা এবং তাদের জন্য প্রার্থনা করা’। তার বাবা-মা কৃষক এবং প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারীও।


তিনি বলেন, ‘আমার বাবা নিয়মিত প্রতিবাদ করতে যান যখন আমার মা প্রায়ই আমাদের গ্রামকে দুর্বৃত্তদের হাত থেকে নিরাপদ রাখতে অন্যদের সঙ্গে রাতভর নজরদারি করেন। আমাদের বাড়ি একটি থানার কাছাকাছি, কিন্তু আমি শুনেছি এমনকি পুলিসও সেখানে হুমকির মুখে রয়েছে’।


 



রোশিবিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের নিবেদিত ও প্রতিভাবান রোশিবিনা দেবী নওরেম, মহিলাদের সান্দা ৬০ কেজি উশুতে রুপোর পদক জিতেছেন। তিনি অসাধারণ প্রতিভা এবং শ্রেষ্ঠত্বের নিরলস সাধনা প্রদর্শন করেছেন। তার শৃঙ্খলা এবং সংকল্পও প্রশংসনীয়। তাকে অভিনন্দন'।


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের, রইল AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেলের ঢোকার রাস্তা)