SAFF Cup: ছন্দে থাকা নেপালকে হারাতে মরিয়া Igor Stimac-এর Team India
নেপালের বিরুদ্ধে জয়ের খোঁজে ইগর স্টিমাচের ভারত।
নিজস্ব প্রতিবেদন: চলতি সাফ কাপে পরপর দুই ম্যাচ ড্র করে বেশ চাপে ভারত (Indian football team)। এমন অবস্থায় রবিবার নেপালের (Nepal) বিরুদ্ধে নামছে সুনীল ছেত্রীর (Sunil Chettri ) দল। তবে ভারতের কাজটা কঠিন হতে চলেছে সেটা মেনে নিলেন দলের হেড কোচ ইগর স্টিমাচ (Igor Stimac)। কারণ একদিকে যখন নেপাল পরপর দু’টি ম্যাচে জিতে আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছে, ঠিক তখনই এই ম্যাচে জয় না পেলে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হবে সাতবারের বিজয়ী টিম ইন্ডিয়াকে।
গত মাসেই নেপালে দু’টি ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল ভারত। দেশের ফুটবলপ্রেমীরা ভেবেছিলেন, ফিফা ক্রমতালিকায় ভারতের চেয়ে ৬১ ধাপ নীচে থাকা নেপালকে দুই ম্যাচেই হারিয়ে ফিরবেন সুনীল ছেত্রীরা। কিন্তু কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে যে রকম কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল নেপাল, সেটার জন্য তাদের সমীহ করতেই হবে।
তাই নেপালের অভিজ্ঞতা নিয়ে সুনীল ছেত্রী প্রথম ম্যাচের আগে বলেছিলেন, "নেপালের বিরুদ্ধে যে দুটো ম্যাচ খেলেছি আমরা, এর ভিত্তিতে বলতেই হবে অনেক জায়গাতেই আমাদের উন্নতি দরকার। কোচের সঙ্গে এই নিয়ে কথাও হয়েছে আমাদের। নেপালের বিরুদ্ধে আমরা আরও ভাল খেলতে পারতাম। আসলে প্রতি দিনই আমাদের আশপাশের জাতীয় দলগুলো ক্রমশ উন্নতি করছে। ওদের হারাতে গেলে ৯০ শতাংশ খেললে চলবে না। নেপালে গিয়ে আমরা এই শিক্ষাই পেয়েছি।"
ভারত অধিনায়কের ধারণা যে একেবারেই ভুল নয়, তা প্রমাণিত হয় ভারতের প্রথম দুই ম্যাচেই। ১০ জনে খেলে এগিয়ে থাকা ভারতের গোল শোধ করে শেষ পর্যন্ত ১-১ ড্র করে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে গোল তো দিতে পারেইনি ভারত, পুরো ম্যাচে একটার বেশি গোলমুখী শটও নিতে পারেনি ভারত। একইসঙ্গে সেট পিসেও ভারতীয় দল যে দুর্বল সেটাও গত দুই ম্যাচে দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের পর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও একাধিক কর্নার পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি স্টিমাচের দলের ফুটবলাররা। এমন অবস্থায় নেপালের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া যে বেশ কঠিন হবে ভারতের পক্ষে, সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
তবু আশাবাদী কোচ সাংবাদিকদের বলেন, "জেতা ছাড়া আমাদের সামনে কোনও রাস্তা নেই। গত দুই ম্যাচের পর কিছুই বদলে যায়নি। এখনও আমরা এখান থেকে প্রতিযোগিতা জিততে পারি। কয়েক মাস আগে নেপালের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচ খেলার জন্য ওদের খুব ভালভাবে জানি। ওদের ছ’পয়েন্ট রয়েছে। তাই ওরা বিপজ্জনকও হয়ে উঠতে পারে। তবে আমরা শুরু থেকেই গোলের জন্য ঝাঁপাব। কারণ পরবর্তী দুই ম্যাচ জিতলে আমরাও ফাইনালে উঠতে পারি। তবে এখন অঙ্ক নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নেই। বরং জয় নিয়ে ভাবতে হবে।"
যথেষ্ট ক্ষিপ্র গতিতে ওঠা-নামা করতে পারেন নেপালের ফুটবলাররা। ফলে কাউন্টার অ্যাটাকে বেশ গতিময় তারা। অর্থাৎ, নেপালের বিরুদ্ধে অল আউট আক্রমণে চলে গেলে বিপদে পড়তে পারে ভারত। গত ম্যাচে সেই প্রবণতাই দেখা যায় তাদের মধ্যে। ওই ম্যাচে তাদের বল পজেশন ছিল ৭৩ শতাংশ। বারবার দশ জনে মিলে বিপক্ষের এলাকায় উঠে যাচ্ছিল তারা। ফলে বিপক্ষের প্রতি আক্রমণে একাধিকবার বিপদে পড়ে তারা। এই সুযোগ অবশ্য একবারও কাজে লাগাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। কিন্তু নেপালকে এমন সুযোগ দিলে যে গোল খেয়ে যেতে পারে ভারত, তা তাদের মাথায় রাখতেই হবে।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তাঁদের ভুল নিয়ে স্টিমাচ বলেন, "ডিফেন্ডাররা পাস দিতে পেরেছে মিডফিল্ডাররা কিন্তু ততটা পারেনি। ওদের আরও বল দেওয়া-নেওয়া করতে হবে। সুনীলকে সে দিন আমরা তেমন ভাল পাস বাড়াতে পারিনি। তবে সে দিন ও দু’বার হেড করে গোলের সুযোগ নষ্ট করেছে, যেগুলো সাধারণত ও করে না। জিততে না পারলে এই হতাশাগুলো আসে।"
গোলের সুযোগকে গোলে পরিণত করার ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থ হচ্ছেন ভারতীয়রা। দুই উইং দিয়ে গোলের সুযোগ তৈরির চেষ্টা হলেও বিপক্ষের রক্ষণের পাল্টা চাপ সামলাতে না পেরে খেই হারিয়ে ফেলছে তারা। সুনীল ছেত্রীর অতিরিক্ত নির্ভরতাও ডোবাচ্ছে তাদের। বিপক্ষের ডিফেন্ডাররা সুনীলকে কড়া পাহাড়ায় রাখায় তিনি বেশি কিছু করতে পারছেন না। রক্ষণ বিভাগ বেশি পাস খেললেও বেশ দুশ্চিন্তায় রাখার মতো। গোল না করতে পারলেও যে গোল খাওয়া যাবে না, তাঁর এই পরামর্শ ঠিকমতো মেনে চলতে পারছেন না দলের ডিফেন্ডাররা।
এই অবস্থায় অন্য ফরোয়ার্ড, মিডফিল্ডারদের গোলের দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু তাঁরা এমন এমন গোলের সুযোগ হাতছাড়া করছেন, যা এই স্তরের ফুটবলে অভাবনীয়। গত ম্যাচে একাধিক সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও সে গুলি নষ্ট না করলে ভারত অন্তত তিন গোলে জিততে পারত। এই জায়গাগুলোতে নিজেদের শোধরাতে না পারলে নেপালের বিরুদ্ধে জয়ে ফেরা বেশ কঠিন হতে পারে। আর তৃতীয় ম্যাচেও যদি জয় অধরা থাকে তাহলে স্টিমাচ ও তাঁর দলের ফুটবলারদের নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)