Swarnendu Das : ৩৫-এ থামলেন লড়াকু ক্রীড়া সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু, শ্রদ্ধা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Swarnendu Das : বিরল কর্কট রোগে আক্রান্ত হলেও স্বর্ণেন্দু কাজ ছাড়েননি। মুম্বইতে গিয়ে প্রতি বছর চিকিৎসা করাতেন। একইসঙ্গে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে বুম-মাইক নিয়ে চলে যেতেন স্পটে। নিয়মিত। সিঙ্গুরের কৃষক পরিবারে ওঁর জন্ম। তাই লড়াই, পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা ওঁর মজ্জায় ছোটবেলা থেকেই ছিল। ২০০৭ সাল থেকে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। বি.কম-এ স্নাতক হয়ে সাংবাদিকতা নিয়েও পড়াশোনা করেন। সম্পদ ছিলেন অডিও ভিজুয়াল মিডিয়ার।
সব্যসাচী বাগচী: ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছিল একটা অসম লড়াই। দীর্ঘ আট বছর ধরে কর্কট রোগের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করার পর অবশেষে থামলেন ক্রীড়া সাংবাদিক (Sports Journalist) স্বর্ণেন্দু দাস (Swarnendu Das)। লেখা ভাল থামতে বাধ্য হলেন ৩৫ বছরের লড়াকু ও 'অলরাউন্ডার' স্বর্ণেন্দু। কারণ শুধু খেলা নয়। সব 'বিট'-এ কাজ দক্ষতা দেখিয়েছিলেন অতি সহজে। তবে সবাইকে কাঁদিয়ে ২৩ অগস্ট সকাল ছ'টা নাগাদ চিরঘুমে চলে যান কলকাতা ময়দানের সবার প্রিয় ছেলেটা। রেখে গেলেন বয়স্ক বাবা-মা, স্ত্রী ও একমাত্র হতভাগ্য কন্যাকে। বাচ্চা মেয়েটার তিন হবে! কাঁদিয়ে গেলেন তাঁর সহকর্মীদেরও।
অন্য নিত্যযাত্রীর মতো হুগলীর সিঙ্গুর থেকে এই তিলোত্তমার বুকে আসতেন স্বর্ণেন্দু। বাকিদের মতই। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। ২০১৪ সালে ওঁর জীবনে নেমে এল অন্ধকার। শরীরে হানা দিল কর্কট রোগ। লড়াইটা কঠিন ছিল। কিন্তু অফুরান জীবনীশক্তি আর কাজের প্রতি অদম্য ইচ্ছেয় এতদিন মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন তরুণ সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু। মঙ্গলবার সকালে সেই যুদ্ধ শেষ হল। দুঃসংবাদ শুনে মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister of West Bengal) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। টুইট করে স্বর্ণেন্দুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানালেন তিনি। লিখলেন, দক্ষ ও বুদ্ধিদীপ্ত এক ব্যক্তিত্বকে হারাল সাংবাদিক জগত।
আরও পড়ুন: Rahul Dravid, Asia Cup 2022 : টিম ইন্ডিয়ার জন্য বড় ধাক্কা, কোভিডে আক্রান্ত রাহুল দ্রাবিড়
আরও পড়ুন: FIFA Ban AIFF : ফিফার কাছে ক্ষমা চেয়ে কী লিখেছিলেন ফেডারেশনের ক্ষমতাচ্যুত সভাপতি প্রফুল প্যাটেল?
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বর্ণেন্দু দাসের বিষয়টি তোলেন তাঁরই কোনও সতীর্থ। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। সেই সময় মুম্বইতে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। সে কথাও জানতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তিনি স্বর্ণেন্দুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই এসএসকেএম-এর কথা উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিন, 'ওঁকে বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর দরকার কী? এসএসকেএম-এ নিয়ে আসা হোক। এখানে ভাল চিকিৎসা হয়। ওঁর যাতায়াতের ভাড়া আমরা দেব। চিকিৎসার খরচও রাজ্য সরকারের।' এরপর থেকে স্বর্ণেন্দুর চিকিৎসা চলছিল এখানেই। মঙ্গলবার ভোরে সকলকে কাঁদিয়ে চলে গিয়েছেন স্বর্ণেন্দু। তাঁর পরিবারই শুধু নয়, সহকর্মীরাও শোকাহত।
বিরল কর্কট রোগে আক্রান্ত হলেও স্বর্ণেন্দু কাজ ছাড়েননি। মুম্বইতে গিয়ে প্রতি বছর চিকিৎসা করাতেন। একইসঙ্গে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে বুম-মাইক নিয়ে চলে যেতেন স্পটে। নিয়মিত। সিঙ্গুরের কৃষক পরিবারে ওঁর জন্ম। তাই লড়াই, পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা ওঁর মজ্জায় ছোটবেলা থেকেই ছিল। ২০০৭ সাল থেকে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। বি.কম-এ স্নাতক হয়ে সাংবাদিকতা নিয়েও পড়াশোনা করেন। সম্পদ ছিলেন অডিও ভিজুয়াল মিডিয়ার।
গত নভেম্বর থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করেছিল তাঁর। মুম্বইয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সম্প্রতি কলকাতায় আনা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন স্বর্ণেন্দু। মাস দুই আগে ফের একবার ওঁকে কর্কট রোগ ভোগাতে শুরু করেছিল। চিকিৎসার জন্য দরকার ছিল বিপুল অর্থের। তাই সাংবাদিকের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন তাঁর বন্ধু, শুভাকাঙ্খীরা। 'ক্রাউড ফান্ডিং'-এর মাধ্যমে স্বর্ণেন্দুকে বাঁচানোর একটা চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে লড়াই দীর্ঘস্থায়ী হল না। ৩৫ বছরের ছেলেটা থামলেও, লড়াকু মানসিকতার একটা উদাহরণ তৈরি করে গেলেন।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)