`লজেন্স মাসি`-কে বিশেষ সম্মান জানাল সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরুর! দেখুন আবেগি ভাইরাল ভিডিয়ো
করোনা অতিমারীর আগের বছর হারিয়েছেন স্বামীকে। এরপর থেকে বন্ধ ছিল ময়দানের খেলা। মাঠের সঙ্গেই যাঁর হৃদয়ের সম্পর্ক। ইস্টবেঙ্গল হোক, মোহনবাগান, মহামেডান কিংবা অন্য দলের সমর্থক বা কর্মকর্তা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সরকারি খাতায় ওঁর নাম যমুনা দাস (Jamuna Das)। তবে কলকাতা ময়দান (Kolkata Maidan) তথা ভারতীয় ফুটবল (Indian Football) এই মহিলাকে 'লজেন্স মাসি' (Lozenge Maashi) নামেই চেনে। আদ্যন্ত ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) সমর্থক। তবে প্রাণের প্রিয় লাল-হলুদ মাঠে না নামলে প্রায় ষাট ছুঁতে চলা সবার প্রিয় মাসি কিন্তু ঘরে বসে থাকেন না। বরং একটা ঝোলাতে ভর্তি লজেন্স নিয়ে বেলঘরিয়া থেকে ধরেন ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেন। ইস্টবেঙ্গল ছাড়া অন্য দলের ফুটবলারদের বুকে টেনে নিতে, তাঁদের গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে মাসি হাত কাঁপে না। ফুটবলাররা কাছে এলেই তাঁদের হাতে গুঁজে দেন লজেন্স। যুবভারতী, বারাসত,কল্যাণী অথবা শিলিগুড়ির স্টেডিয়াম, অবাধ যাতায়াত তাঁর।
গত ৩০ বছর ধরে কলকাতা ময়দানের ফুটবলের সঙ্গে তিনি জড়িয়ে রয়েছেন। বহু ফুটবলারের জন্মদিন অথবা বিয়েতে নিমন্ত্রিত হলেও এত বড় সম্মান পাননি তিনি। ডুরান্ড কাপ (Durand Cup 2022) ফাইনালের আগে 'লজেন্স মাসি'-কে বিশেষ সম্মান জানাল বেঙ্গালুরু এফসি (Bengaluru FC)। দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri) নিজেদের পাঁচতারা হোটেলে ডেকে ফুটবলারদের সঙ্গে পরিচয় করালেন। সবার সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার পর শুরু হল লাঞ্চের পর্ব। এরপর তাঁর হাতে দলের জার্সি তুলে দিলেন সুনীল ও হেড কোচ সাইমন গ্রেসন (Simon Grayson)।
বাংলার প্রবীর দাস (Prabir Das) ও হীরা মন্ডল (Hira Mondal) 'লজেন্স মাসি'-কে আগে থেকেই চেনেন। সন্দেশ জিঙ্ঘান (Sandesh Jhingan), গুরপ্রীত সিং সান্ধু (Gurpeert Singh Sandhu) এসে তাঁর পা ছুঁয়ে নমস্কার করলেন। যমুনা দাস জানালেন এমন সম্মান, ভালবাসা এর আগে পাননি। তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। ময়দানের সব ফুটবলার তার ছেলে। অতীতের ফুটবলাররা দাদা অথবা ভাই। এমনটাই মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন: Virat Kohli, IND vs AUS : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোন ভূমিকায় খেলবেন বিরাট? খোলসা করলেন রোহিত
আরও পড়ুন: IND vs AUS : অজিদের বিরুদ্ধে নামার আগে কেমন হল কোহলির নতুন হেয়ার স্টাইল? ছবিতে দেখুন
মোহনবাগানে (Mohun Bagan) কেরিয়ার শুরু করেছিলেন সুনীল। এরপর ইস্টবেঙ্গলেও খেলছেন। সেই সুবাদে মাসিকে অনেক বছর ধরে চেনেন ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। সেই সুনীল স্বভাবতই এই ফুটবলপ্রেমী মহিলাকে নিয়ে আবেগি। তাঁর বক্তব্যে বারবার সেই আবেগ ঝরে পড়ল। যে ভাবে যমুনা দাস ফুটবলারদের সমর্থন করে এসেছেন এবং খেলাটাকে ভালবেসে এসেছেন, সেইজন্য তাঁকে স্যালুট জানালেন সুনীল।
করোনা অতিমারীর আগের বছর হারিয়েছেন স্বামীকে। এরপর থেকে বন্ধ ছিল ময়দানের খেলা। মাঠের সঙ্গেই যাঁর হৃদয়ের সম্পর্ক। ইস্টবেঙ্গল হোক, মোহনবাগান, মহামেডান কিংবা অন্য দলের সমর্থক বা কর্মকর্তা। সবাই মাসিকে এক নামে চেনে। যাঁদের সঙ্গে নিয়মিত ময়দানি ফুটবলের যোগাযোগ, তাঁদের মধ্যে একবার অন্তত তাঁর কাছ থেকে লজেন্স কিনে খাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এহেন সবার প্রিয় 'লজেন্স মাসি' তাঁর ভাই সুনীলের সঙ্গে দেখা করে আলাদা তৃপ্তি পেলেন। জানালেন ভবিষ্যতের শুভেচ্ছা।