Suryakumar Yadav | Explained: নটরাজ সুইপ থেকে হেলিকপ্টার হুইপ! নেপথ্যে কোন বিজ্ঞান? জানিয়ে দিলেন `মিস্টার ৩৬০`
অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলছেন সূর্যকুমার যাদব। অবলীলায় নিচ্ছেন বিচিত্র সব শট। যা দেখে থ হয়ে গিয়েছে ক্রিকেটবিশ্ব। অথচ তাঁর খেলা দেখে মনে হচ্ছে, ব্যাটিং কতই না সহজ! সূর্যই জানালেন কীভাবে হলেন `মিস্টার ৩৬০`।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কখনও ফাইন লেগের ওপর দিয়ে নটরাজ সুইপ, তো কখনও ওয়াইড লং অন দিয়ে হেলিকপ্টার হুইপ! প্রয়োজনে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে ড্রাইভ থেকে ব়্যাম্প ওভার উইকেটকিপার। আবার স্কোয়ারের ওপর দিয়ে কাট। এই মুহূর্তে একজন ব্যাটারই এসব অনায়াস দক্ষতায় এবং অবলীলায় করছেন। তাঁর আর কোনও ভূমিকার প্রয়োজন নেই। তিনি 'ওয়ান অ্যান্ড অনলি' সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) ওরফে বাইশ গজের নতুন 'মিস্টার ৩৬০'। বোলাররা বুঝেই উঠতে পারছেন না যে, বিশ্বের এক নম্বর টি-২০ ব্যাটারকে কোন বলে পরাস্ত করা সম্ভব! কীভাবে থামবে এই তাণ্ডবলীলা!
কিংবদন্তি সুনীল গাভাসকরও মোহিত সূর্য রোশনাইয়ে। সূর্যর একের পর এক মারকাটারি ইনিংস দেখে ব্যাটিং মায়েস্ত্রো থ! তিনি বলছেন, 'বোলাররা যে অ্যাঙ্গেলে ওকে লক্ষ্য করে বল করছে, ও সেই অ্যাঙ্গেলেরই অ্যাডভান্টেজ নেয়। ওর ক্রিকেট বইতে সব শট আছে'। এহেন সূর্য রোষে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছেন বোলাররা। চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে রয়েছেন আগুনে ফর্মে। এখন প্রশ্ন, সূর্য কীভাবে এক সহজে সব বিচিত্র শট নেন! কোন বিশেষ ট্রেনিং নিয়েছেন মুম্বইকর? বছর বত্রিশের ক্রিকেটার বলছেন যে, ছোটবেলার শিক্ষাই কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। সবটাই রাবার বলের মাহাত্ম্য।
আরও পড়ুন: Suryakumar Yadav | Sunil Gavaskar: সূর্য না জ্বললে কী হবে ভারতের ? প্রশ্ন তুলে দিলেন গাভাসকর
মেলবোর্নে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ২৫ বলে ৬১ রানের মারকাটারি ইনিংস খেলেছেন সূর্য। ৬টি চার ও ৪টি ছয়ে সাজানো দুরন্ত ব্যাটিংয়ে ভর করেই রেকর্ডবুকে নিজের নাম তুলেছেন সূর্য। প্রথম ভারতীয় ও বিশ্বের দ্বিতীয় ক্রিকেটার (মহম্মদ রিজওয়ানের পর) হিসাবে আন্তর্জাতিক টি-২০ ফরম্যাটে এক ক্যালেন্ডার বছরে ১০০০ রান করার রেকর্ড করেছেন তিনি।ম্যাচের পর নিজের খেলার প্রসঙ্গে এক স্পোর্টস ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সূর্য বলছেন, 'দেখুন যখন স্কুলে পড়তাম তখন আমরা সিমেন্টের শক্ত রাস্তায় খেলতাম। সেখানে বোলাররা যত জোরে পারত, বল চাক করত। একদিকের বাউন্ডারি মোটামুটি ওই ৭০-৮০ মিটারের থাকত। অন্য়দিকে ব্যাটারের পিছনের বাউন্ডারি হত ৭০ মিটারের। শক্ত সিমেন্টে রাবারের বলে খেললে স্কুপ করা সহজ হয়ে যায়। আপারকাট মারা যায়, পয়েন্টের ওপর দিয়ে স্লাইস করা যায়। আমাকে স্কোয়ার অফ দ্য উইকেট এবং স্কোয়ারের পিছনে যা যা শট নিতে দেখেন, সবই ছোটবেলায় স্কুল পর্যায়ে শেখা আমার। আমি নেটে কখনও এই সব শট অনুশীলন করি না। না কোনও বোলারের বিরুদ্ধে, না বোলিং মেশিনের সামনে করি! রাবার বলে খেলার জন্যই এসব পারি। যখন শরীর লক্ষ্য করে বল ধেয়ে আসে, তখন না মারা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। অন্য কিছু চেষ্টা করা যায় না।'
সূর্য আরও বলছেন যে, একটি শট নেওয়ার আগে তাঁর মাথায় ঠিক কী চলে, সূর্যর সংযোজন, 'আমি বল ডেলিভারি হওয়ার আগে পর্যন্ত দু'তিনন রকমের স্ট্রোক নেওয়ার কথা ভাবি। বোলারে যেখানে বল করবে, সেটা বুঝে যে কোনও একটি শট নেব। নন-স্ট্রাইকার্স এন্ডে দাঁড়িয়েও এসব ভাবি। বোলার যদি আমার ভাবনা মতো বল না করে, তখন কোথাও আটকে যাই। সেটা বুঝে নিয়ে আবার খেলি।' টি-২০ বিশ্বকাপে এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ রান শিকারিদের তালিকায় তিনে সূর্য। সেমিতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এমন বিধ্বংসী ফর্ম বজায় রাখতে পারলে, বিরাট কোহলির ঠিক পিছনেই দ্বিতীয় স্থানে থাকবেন সূর্য। কারণ ডাচ ব্যাটার ম্যাক্সওয়েল প্যাটট্রিক ৮ ম্যাচে ২৪২ রান করলেও, তাঁর দল ইতিমধ্যেই ছিটকে গিয়েছে। তিনে থাকা সূর্যের রান ৫ ম্যাচে ২২৫। সর্বোচ্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪০ বলে ৬৮। গড় ৭৫.০০। স্ট্রাইক রেট ১৯৩.৯৬।