প্রথমে ছোটরা, বিকেলে মেয়েরা, রাতে ছেলেরা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর চ্যাম্পিয়ন এখন সমার্থক!
স্বরূপ দত্ত
ইডেনে ফাইনালে খেলেনি টি২০ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ভারত। ফাইনালে ছিল না উপমহাদেশের কোনও দলই। কিন্তু, সব শেষে জয় হল সেই ক্রিকেটেরই। ম্যাচ হল রোমাঞ্চকর। টানটান উত্তেজনা উপভোগ করলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
আর জয়ের শেষ হাসি হাসল ক্যারিবিয়ানরা। বিকেলে মেয়েদের টি২০ বিশ্বকাপ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একটু পর রাতে, জিতলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছেলেরা। ক্যারিবিয়ানরা দেখালো, সাম্প্রতিক ক্রিকেটের সব বিভাগে সেরা তাঁরাই। ২ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটে জিতে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মার্লন স্যামুয়েলস খেললেন জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংস। কিন্তু তিনি শুধু জয়ের ছবিটা এঁকেছিলেন। কিন্তু ব্রেথওয়েট যেন সেই ছবিতে প্রাণ এনে দিলেন। শেষ ওভারে ১৯ রান দরকার ছিল। অথচ, ব্রেথওয়েট কিনা প্রথম তিন বলে মেরেদিলেন তিন তিনটে ছক্কা! এবং চার নম্বর বলটাতেও ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন!
স্যামুয়েলস অপরাজিত থাকলেন ৬৬ বলে ৮৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে। আর ব্রেথওয়েট বল হাতে তিন উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করলেন মাত্র ১০ বলে ৩৪!
এদিন ইডেনে টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১৫৫ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। টস জিতে ইংল্যান্ডকেই আগে ব্যাট করতে পাঠান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ডারেন সামি।শুরুটা মোটেই ভালো ছিল না ইংরেজদের। মাত্র ২৩ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট পড়ে যায় ইংল্যান্ডের। এরপর দলের হাল ধরেন জো রুট এবং বাটলার। তাই ২০ ওভারের শেষে মোটামুটি ভদ্রস্থ রানে পৌঁছয় ইংল্যান্ড। ফর্মে থাকা জেসন রয় ২ বল খেলে ০ রানে আউট হয়ে যান। হেলস করেন ৩ বলে মাত্র ১ রান। অধিনায়ক ইয়ন মর্গান ১২ বল খেলে মাত্র ৫ রান করে আউট হয়ে যান। জো রুট দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন বাটলার। তাঁর অবদান ২২ বলে ৩৬ রান। তাই সব মিলিয়ে ভদ্রস্থ রান ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে রাখতে পারে ইংরেজরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩ টি করে উইকেট নেন ব্রেথওয়েট এবং ডোয়েন ব্রাভো। দুটো উইকেট নেন বদ্রী। একটি উইকেট পান রাসেল। যদিও ইংল্যান্ডকে এত কম রানে বেঁধে ফেলার জন্য বদ্রীর অবদান সবথেকে বেশি। কারণ, তিনিই শুরুর ঝটকাটা দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের থেকেও বেশি বড় ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ১১ রানে ডাগ আউটে ফেরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তিনজন ব্যাটসম্যান। ক্রিস গেইল সেমিফাইনালের মতো ফাইনালেও ফ্লপ। ২ বলে মাত্র ৪ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। অন্য ওপেনার জনসন চার্লস ৭ বলে ১ রান করে আউট হয়ে যান। আগের ম্যাচের নায়ক সিমন্স আউট হয়ে যান প্রথম বলেই!
এরপর ইংল্যান্ডের জো রুটের মতোই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন মার্লন স্যামুয়েলস। যদিও রুটকে যেমন সঙ্গ দিয়েছিলেন বাটলার, স্যামুয়েলস তাঁর সতীর্থদের কাছ থেকে সেভাবে সাহায্য শুরুতে পাননি একমাত্র ডোয়েন ব্রাভো ছাড়া কারওর কাছ থেকেই। ব্রাভো ২৭ বলে ২৫ রান করেন। ইডেনের চেনা মাঠে কেকেআরের আন্দ্রে রাসেল করেন ৩ বলে মাত্র ১ রান। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ডারেন সামি আউট হন ২ বলে ২ রান করে। যদিও হাল ছাড়েননি অভিজ্ঞ মার্লন স্যামুয়েলস। তাই ব্রেথওয়েট যেন স্যামুয়েলসকেই জয়ের উপহারটা দিলেন। এবার নাচ শুরু ক্যারিবিয়ানদের।