Virat Kohli vs Anil Kumble: কেন হেড কোচ Kumble-কে অপছন্দ করতেন Virat? কারণ জানলে চমকে উঠবেন!
টিম ইন্ডিয়ার সংসারে যাতে সুখ ফিরিয়ে আনাই ছিল লক্ষ্য। সেইজন্য ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলার সময় কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ও বোর্ডের ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটির তিন প্রাক্তন ক্রিকেটার লন্ডনে গিয়ে কুম্বলে ও কোহলির সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০১৭ সালের কথা। অনিল কুম্বলে বনাম বিরাট কোহলি (Virat Kohli vs Anil Kumble) বিবাদ প্রকাশ্যে চলে আসার জন্য উত্তাল হয়ে উঠেছিল ভারতীয় ক্রিকেট। এ বার সেই বিবাদ নিয়ে বই লিখে চাঞ্চল্য ফেলে দিলেন বিসিসিআই-এর (BCCI) কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের (সিওএ) প্রাক্তন প্রধান বিনোদ রাই (Vinod Rai) । তাঁর বই 'নট জাস্ট আ নাইটওয়াচম্যান: মাই ইনিংস ইন দ্য বিসিসিআই'-এ বিরাট (Virat Kohli) ও কুম্বলের (Anil Kumble) বহুল প্রচলিত বিবাদের আরও ভিতরের ঘটনা তুলে তুলে ধরেছেন। প্রাক্তন আইএএস তাঁর বইতে দাবি করেছেন যে, ক্রিকেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর কমিটিও অধিনায়ক-কোচ সম্পর্কের মধ্যে এই ফাটলে সমস্যায় পড়েছিল।
অনুশাসন প্রিয় প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) হেড কোচ হিসেবে বিরাটবাহিনীর সিনিয়র থেকে জুনিয়র, একাধিক সদস্য মেনে নিতে পারেননি। কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরদের দ্বারা পরিচালিত বিসিসিআই থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly), সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar) এবং ভিভিএস লক্ষ্মণকে (VVS Laxman) নিয়ে গঠিত ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটি (সিএসি) পর্যন্ত কুম্বলে বনাম বিরাট-এর সেই বিবাদকে থামাতে পারেননি। ফলে একপ্রকার অপমানিত হয়ে কোচের দায়িত্ব ছাড়তে বাধ্য হন প্রাক্তন লেগ স্পিনার। বিদায়বেলায় বিস্ফোরক টুইট করে জবাব দিয়েছিলেন কুম্বলে।
কিন্তু কেন বিরাটবাহিনীর একাধিক সদস্য কোচ কুম্বলেকে ভয় পেতেন? বিনোদ তাঁর বইয়ের এক জায়গায় লিখেছেন, 'অধিনায়ক এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে একাধিকবার এই জটিল সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। বিরাট ও তাঁর দলের একাধিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি যে, কুম্বলে শৃঙ্খলার ক্ষেত্রে খুব কঠোর ছিলেন। অনুশাসন নিয়ে একফোঁটাও আপোস তিনি রাজি ছিলেন না। এ দিকে দলের সদস্যরাও তাঁর ব্যবহারে খুব খুশি ছিলেন না। স্বভাবতই সেই সময় বিরাট অধিনায়ক হিসেবে তাঁর সতীর্থদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাঁর দাবি ছিল কোচ কুম্বলের অনুশাসন প্রিয় মানসিকতার জন্য দলের একাধিক তরুণ সদস্য খুব ভয় পেয়েছিলেন।' তবে বইতে শুধু বিরাট নন, কুম্বলের বক্তব্যও তুলে ধরেছেন বিনোদ রাই। তিনি ফের লিখেছেন, 'বিরাট ও দলের বাকিদের সঙ্গে কথা বলার পর সেই ইস্যু নিয়ে কুম্বলের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছিলাম। সেই সময় নিজের অবস্থানে অনড় থেকে কুম্বলের দাবি ছিল, তিনি দলের স্বার্থকে সবার উপরে রেখে কাজ করতে চাইছেন। এবং প্রধান কোচ হিসাবে তাঁর সফল রেকর্ডকে ক্রিকেটারদের কথিত অভিযোগের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।'
টিম ইন্ডিয়ার সংসারে যাতে সুখ ফিরিয়ে আনাই ছিল লক্ষ্য। সেইজন্য ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলার সময় কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ও বোর্ডের ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটির তিন প্রাক্তন ক্রিকেটার লন্ডনে গিয়ে কুম্বলে ও কোহলির সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তবে এতে লাভ হয়নি। কারণ বিরাট ও কুম্বলে দুজনেই নিজেদের যুক্তিতে অনড় ছিলেন। সেই অংশে বিনোদ রাই ফের লিখেছেন, 'সেই সময় আমরা সবাই বিরাট ও কুম্বলের বিবাদ থামাতে চেয়েছিলাম। কারণ এতে দলের পারফরম্যান্স খারাপ হচ্ছিল। তবে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। বরং সেই আলোচনার মাঝেই বিরাট নতুন হেড কোচের জন্য সওয়াল করে বসেন। এতে আরও অপমানিত হন কুম্বলে।'
দলের ক্রিকেটারদের এই আচরণ কুম্বলে মোটেও ভালভাবে নেননি। সেটাও এই বইতে তুলে ধরেছেন লেখক। বিনোদ রাই লিখেছেন, '২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ হওয়ার পরেই দায়িত্ব ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন কুম্বলে। সেই সময় তাঁর সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসেছিলাম। এই পুরো ঘটনায় তাঁকে একঘরে করে দেওয়ার জন্য কুম্বলে প্রচন্ড বিরক্ত ছিলেন। কুম্বলে মনে করতেন বিরাট ও দলের একাধিক সতীর্থ তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। তাঁর আরও দাবি ছিল একজন অধিনায়ক কিংবা ক্রিকেটারদের এতটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়। দলে শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্বকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন কুম্বলে। একইসঙ্গে তাঁর জোরালো দাবি ছিল কোচের চিন্তাভাবনা ও ধারণাকে সম্মান করা উচিত।'
ভারতীয় ক্রিকেটে কুম্বলের অবদানের কথা মাথায় রেখে তাঁকে হেড কোচ হিসেবে রেখে দেওয়ার একটা শেষ চেষ্টাও করা হয়েছিল। সেটাও বইতে তুলে ধরা হয়েছে। লেখকের দাবি, 'চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল ভারতীয় দল। তবে সেই সফরে দলের সঙ্গে ছিলেন না কুম্বলে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফাইনাল হারের পরেই ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। তবুও আমরা একটা শেষ চেষ্টা করেছিলাম। তাই বিরাটকে বোঝানোর জন্য তৎকালীন সিইও রাহুল জোহরি এবং ভারপ্রাপ্ত সচিব অমিতাভ চৌধুরী ওয়েস্ট ইন্ডিজ উড়ে গিয়েছিল। সেখানে তিনদিন বিরাটের সঙ্গে ওরা কথা বলেছিল। এমনকি সেখান থেকে সেই দুই কর্তা টেলি কনফারেন্সে কুম্বলের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। কুম্বলে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন।'
আরও পড়ুন: IPL 2022: কবে মাঠে নামবেন KKR-এর তারকা পেসার Pat Cummins? জানতে পড়ুন
আরও পড়ুন: IPL 2022: খারাপ সময় কাদের সাহায্য নিয়েছিলেন? জানালেন Rishabh Pant