জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ঝুলন গোস্বামীর (Jhulan Goswami) বিদায়ী ম্যাচে দীপ্তি শর্মার (Deepti Sharma) 'মানকাডিং' (Mankading) নিয়ে ক্রিকেট দুনিয়া তোলপাড়। অনেকের বক্তব্য, ক্রিকেটের আইনেই 'মানকাডিং' বৈধ বলে জানানো হয়েছে। আবার ইংল্যান্ডের (England) একাধিক ক্রিকেটারদের যুক্তি ও দাবি, আইনসিদ্ধ হলেও 'মানকাডিং' ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী। এরমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল মিম। তাতে মজা করে বলা হল, 'লগান'সিনেমার (Lagaan)মানকাডিং'-এর বদলা লর্ডসের মাঠে নিলেন ভারতের মহিলা দলের দীপ্তি শর্মা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দীপ্তির সেই কাণ্ডের পর নেটিজেনরা বলেন, 'লজ্জা পাবেন না। আরও কান্নাকাটি করতে থাকুন। দীপ্তি শর্মা এ বার লগান - প্রতিশোধ নিলেন!' সেই সঙ্গে দীপ্তির 'মানকাডিং'-এর ভিডিয়ো এবং 'লগান'-এর 'মানকাডিং'-এর দৃশ্য পোস্ট করেন ওই নেটিজেন। একজন আবার রবিচন্দ্রন অশ্বিন, দীপ্তি এবং 'লগান'-র মানকাডিংয়ের ছবি পোস্ট করেন। তাতে লেখেন, 'ভারত ২-১ ইংল্যান্ড। প্রথমে ভাবছিলাম, আইনে থাকলেও দীপ্তি আজ যেটা করেছেন, সেটা ঠিক নয়। কিন্তু এই মিমটা দেখার মতো আমার মনে হচ্ছে যে দীপ্তি ঠিক করেছেন। দ্বিগুণ লগান (খাজনা) ফেরানো বাকি ছিল।' 




কীভাবে চার্লি ডিনকে রান আউট করেছিলেন দীপ্তি? 


তৃতীয় একদিনের ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস জায়গায় পৌঁছে যায়। ৪৪ তম ওভারে যখন বাংলার মেয়ে দীপ্তি বল করতে আসেন, তখন জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। হাতে ছিল এক উইকেট। প্রথম বলে এক রান হয়। দ্বিতীয় বলে কোনও রান হয়নি। তৃতীয় বলে চার্লি ডিনকে 'মানকাডিং' করেন। তৃতীয় বলটা করার মধ্যেই থেমে যান ভারতীয় অলরাউন্ডার দীপ্তি। পিছন দিকে ফেরেন এবং ভেঙে দেন স্টাম্প। অনফিল্ড আম্পায়ার তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠান। তাতে স্পষ্ট দেখা যায়, ক্রিজের বাইরে ছিলেন ডিন। আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার। তার ফলে ঝুলনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১৬ রানে জিতে যায় ভারত। 


তবে স্পিরিটের দোহাই নিয়ে সেভাবে আউট করা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করতে থাকেন ইংরেজরা। প্রাক্তন ইংরেজ অধিনায়ক নাসের হুসেনও বিরক্তি প্রকাশ করতে থাকেন। তিনি মন্তব্য করেন, ঝুলনের মতো ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষ ম্যাচটা এ ভাবে শেষ হওয়া চূড়ান্ত লজ্জাজনক।


আরও পড়ুন: Exclusive, Jhulan Goswami : মাথায় ঘুরছে মায়ের আত্মত্যাগ, দীপ্তির পাশে দাঁড়িয়েই ঘরে ফিরছেন 'চাকদহ এক্সপ্রেস'


আরও পড়ুন: Deepti Sharma : রান আউট ইস্যুতে দীপ্তির পাশে দাঁড়িয়ে সাহেবকে সাপটে ওড়ালেন হরমন, মজা করলেন অশ্বিন



ম্যাচ শেষ হয়ার হরমন যেন মানসিক ভাবে উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েই ছিলেন। জানতেন যে, পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে তাঁকে অবধারিতভাবে 'মানকাডিং' নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। তেমন পরিস্থিতি আসতেই সপাটে ব্যাট চালালেন। ব্রিটিশ প্রেজেন্টারকে দিলেন মোক্ষম জবাব। বলেন, 'আমি ভেবেছিলাম আপনি প্রথম ৯টি উইকেট নিয়ে জানতে চাইবেন, যেগুলি তুলে নেওয়া মোটেও সহজ ছিল না।' এরপর একটু থেমে ফের যোগ করেন, 'এটা খেলার অঙ্গ। আমরা নতুন কিছু করিনি। আইসিসির নিয়মে রয়েছে। আপনি সবসময় সেই সুযোগটা নিতে চাইবেন। যেটা আমি মনে করি যে, এটা আপনার (বোলারের) সচেতনতার প্রমাণ দেয়। ব্যাটার কী করছেন, সে দিকে আপনার নজর রয়েছে। ক্যাপ্টেন হিসেবে আমি আমার ক্রিকেটারদের সমর্থন করব। আমি মনে করি না যে ও (দীপ্তি) এমন কিছু করেছে যেটা আইসিসির নিয়মে নেই। দিনের শেষে জয়টা জয়ই হয়। আপনার সেটাকে উপভোগ করা দরকার।' 



ক্রিকেটের আইন কী বলছে? 


মেরলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) আইনে ৪১.১৬.১ ধারা অনুযায়ী, 'মানকাডিং' পুরোপুরি আইনসিদ্ধ। ওই ধারায় বলা হয়েছে, যখন থেকে বল করা হচ্ছে শুরু করছেন বোলার, তখন থেকে যতক্ষণ না বোলারের হাত থেকে বল বেরোচ্ছে, তার মধ্যে নন-স্ট্রাইকার এন্ডে থাকা ব্যাটার ক্রিজ থেকে বেরিয়ে গেলে তাঁকে রান আউট করা যাবে। ওই ব্যাটারকে রান আউট হিসেবে দেখানো হবে বলে এমসিসি আইনে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।


তাতেও ‘লগান’-এর প্রসঙ্গ টেনে এনে ইংরেজদের খোঁচা দিতে ছাড়েননি নেটিজেনদের একাংশ। আশুতোষ গোয়ারিকরের পরিচালিত এবং আমির খানের অভিনীত বলিউড সিনেমার সেই মানকাডিংয়ের দৃশ্য পোস্ট করে এক নেটিজেন লেখেন, ‘তোমরাই এটা (মানকাডিং) শুরু করেছে।’ আবার কেউ কেউ বলেন, 'তিন গুণ লগানের বদলা নিলেন দীপ্তি।'


২০০২ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের পর লর্ডসের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে জার্সি খুলে উড়িয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দীর্ঘ ২০ বছর পর বাংলার আর এক ক্রিকেটার নাক উঁচু সাহেবদের প্রিয় লর্ডস স্টেডিয়ামেই 'মানকাডিং' করার সাহস দেখাতে পারলেন। ভারতীয় ক্রিকেটে এই মুহূর্তটাও আইকনিক হয়ে রয়ে গেল।  


 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)