Wriddhiman Saha vs Journalist: ঋদ্ধিকে ‘ভয় দেখানোর’ দায়ে দুই বছরের জন্য নির্বাসিত Boria Majumdar
গত ২৩ এপ্রিল অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠকের পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ঋদ্ধিমান সাহাকে (Wriddhiman Saha) মেসেজ করা ও ভয় দেখানোর জন্য সাংবাদিক বোরিয়া মজুমদারকে দুই বছরের জন্য নির্বাসিত করল বিসিসিআই (BCCI)। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সেই চিঠি জি ২৪ ঘন্টার কাছে এসেছে।
গত ২৩ এপ্রিল অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বৈঠকের পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এরপর ৩ মে একটি চিঠি দিয়ে বোরিয়াকে দুই বছরের জন্য নির্বাসিত করার ব্যাপারটা জানায় বিসিসিআই।
এই নির্বাসিত সাংবাদিক আগামী দুই বছর ভারতীয় দল (Team India) ও আইপিএল-এর (IPL) কোন ফ্র্যাঞ্চাজির ক্রিকেটারের সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন না। বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকা কোন রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় তিনি যেতেও পারবেন না। তবে সেই সাংবাদিকের সঙ্গে জি ২৪ ঘণ্টা যোগাযোগ করলেও, তাঁর তরফ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কা সিরিজের দল ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই ঋদ্ধি টুইটারে এই সাংবাদিকের হুমকি তুলে ধরেছিলেন। এই সাংবাদিক ঋদ্ধিকে রীতিমতো অসম্মানিত করে কিছু মেসেজ করেন। সেই রাতে টুইটারে একটি হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট পোস্ট করেছেন ঋদ্ধি। সেই স্ক্রিনশটে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছিল এই সাংবাদিক ঋদ্ধিকে কার্যত ‘হুমকি’ দিয়েছেন। ঋদ্ধি এই পোস্টের সঙ্গেই লিখেছেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতি আমার যাবতীয় অবদানের পর তথাকথিত ‘শ্রদ্ধেয়’ সাংবাদিকের থেকে এমন বিষয়ের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই পর্যায় নেমে গিয়েছে সাংবাদিকতা।'
বঙ্গ উইকেটকিপারের সেই টুইট ভাইরাল হতেই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বীরেন্দ্র শেহওয়াগ (Virender Sewhag) থেকে শুরু করে রবি শাস্ত্রী (Ravi Shashtri)। ঋদ্ধি ও তাঁর পরিবারের অভিযোগ ছিল সেই জনৈক সাংবাদিক তাঁকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন!বোর্ডের কাছে সেই সাংবাদিকের নাম জানালেও, তিনি সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেননি। পরবর্তীতে সাংবাদিক বোরিয়া মজুমদার নিজে এগিয়ে এসে দাবি করেছিলেন যে ঋদ্ধিমান তাঁর চ্যাটের স্ক্রিনশট 'এডিট' সবার সামনে নিয়ে এসেছেন।
বোরিয়া একটি ভিডিও টুইটারে পোস্ট করে ঋদ্ধির বিরুদ্ধে জরালো অভিযোগ এনেছিলেন। পোস্ট করা স্ক্রিনশটের পাশাপাশি নিজের স্ক্রিনশটও সামনে এনেছিলেন তিনি। সেই দু'টি স্ক্রিনশট পাশাপাশি রেখে তাঁর অভিযোগ ছিল, "ঋদ্ধি ইচ্ছাকৃত ভাবে বার্তা পাঠানোর তারিখ মুছে দিয়েছেন ও একটি মিসড কল মাঝখানে জুড়ে দিয়েছেন। উনি বোঝাতে চেয়েছেন যে এটা একই দিনের বার্তা। প্রথমত মিসড কলের সময় সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা আর তার আগে পাঠানো বার্তার সময় রাত ১০টা ১৯ মিনিট। দ্বিতীয়ত হোয়াটসঅ্যাপে আলাদা দিনে বার্তা পাঠালে তবেই মাঝে তারিখ আসে। আমার স্ক্রিনশট দেখলেই বোঝা যাবে ঋদ্ধি কী ভাবে মানুষকে ভুল বোঝানোর পাশাপাশি সহানুভুতি আদায় করার চেষ্টা করেছেন।"
এরপর তিনি ঋদ্ধির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তুলে তাঁর দাবি ছিল, পাপালি নাকি সাক্ষাৎকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখেননি। ঋদ্ধি ও তাঁর পরিবার শুরু থেকেই এই সাংবাদিকের কাছ থেকে 'হুমকি' পাওয়ার কথা বলে আসছিলেন। যদিও বোরিয়ার দাবি ছিল, "ঋদ্ধি বলেছেন আমি ওঁকে হুমকি দিয়েছি, কিন্তু আমি সেটা করিনি। যদি ঋদ্ধি সেই দিন এতটাই রেগে গিয়ে থাকতেন, তাহলে ১৩ ফেব্রুয়ারিই এই স্ক্রিনশট সামনে আনতে পারতেন। ওই দিন ঋদ্ধির আনন্দের দিন ছিল। প্রায় ২ কোটি টাকার দর উঠেছিল তাঁর। এই স্ক্রিনশট ১৩, ১৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি সামনে আনা যেত। কিন্তু তিনি ১৯ তারিখ অবধি অপেক্ষা করেন। ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। বার্তা বিকৃত করেন। তার পর সেগুলি সামনে আনেন রাত ১০টা ১২ মিনিটে। মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য এমনটা করেছেন তিনি। ১৩ ফেব্রুয়ারির পর আমি কোনও ভাবে ঋদ্ধির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করিনি। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আছে, যেটা আমি এখানে বলছি না। কিন্তু বোর্ডের কমিটির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলে তাদের কাছে আমি জানাবো। আমার আবেদন রইল, বিসিসিআই-এর কমিটির কাছে যাতে আমাকেও কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়।"
দুই পক্ষই তদন্ত কমিটির সামনে উপস্থিত হয়ে তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ পেয়েছেন। এই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে ছিলেন সহ সভাপতি রাজীব শুক্লা, কোষাধক্ষ্য অরুণ ধুমল (Arun Dhumal) এবং অ্যাপেক্স কাউন্সিলের সদস্য প্রভতেজ ভাটিয়া। শেষ পর্যন্ত রায় ঋদ্ধির পক্ষেই গেল।
আরও পড়ুন: IPL 2022: পাঁচ সুপার ফ্লপ তারকা বিদেশির গল্প, ছবিতে দেখে নিন
আরও পড়ুন: IPL 2022: Sanju Samson-এর পাশে দাঁড়িয়ে ওয়াইড বলে রিভিউ চালুর দাবি জানালেন একাধিক প্রাক্তন