Yuvraj Singh-Jasprit Bumrah: ডারবান থেকে বার্মিংহ্যাম! যে পথে ইতিহাস যুবরাজ-বুমরার
১৫ বছর আগে এই ব্রডের ওপরেই `নির্মম অত্যাচার` চালিয়ে ছিলেন যুবরাজ। ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপে ব্রডের এক ওভারের প্রতিটি ডেলিভারিই পঞ্জাব পুত্তর পাঠিয়ে ছিলেন মাঠের বাইরে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এজবাস্টন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ইতিহাস লিখেছেন ভারতীয় দলের স্ট্যান্ড-ইন ক্যাপ্টেন জসপ্রীত বুমরা (Jasprit Bumrah)। ১৬ বলে ৩১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন বুমরা। ব্রিটিশ জোরে বোলার স্টুয়ার্ট ব্রডের এক ওভারে তিনি নিয়েছেন ৩৫ রান (৪, ৫ (ওয়াইড), ৬ (নো বল), ৪, ৪, ৪, ৬, ১ )। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এক ওভারে এটাই সর্বাধিক রানের রেকর্ড এখন। ব্রায়ান লারার রেকর্ড ভেঙে ইতিহাস লিখেছেন বিশ্ববন্দিত জোরে বোলার। বুমরা ব্যাট থেকে এসেছে ২৯ রান। ৬ রান (৫ ওয়াইড, ১ নো বল) হয়েছে অতিরিক্ত। বুমরার সঙ্গেই এখন বাইশ গজ বলছে যুবরাজ সিংয়ের (Yuvraj Singh) নামও। ১৫ বছর আগে এই ব্রডের ওপরেই 'নির্মম অত্যাচার' চালিয়ে ছিলেন যুবরাজ। ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপে ব্রডের এক ওভারের প্রতিটি ডেলিভারিই পঞ্জাব পুত্তর পাঠিয়ে ছিলেন মাঠের বাইরে। যা আজও ইতিহাস।
এজাবাস্টনে ভারতের ইনিংসের ৮৪ তম ওভারে বল করতে এসেছিলেন ব্রড। বুমরাকে প্রথম বলটিই শর্ট করেন তিনি। ব্যাটের কানায় বল লেগে চার হয়ে যায়। দেখে মনে হচ্ছিল, জেমস অ্য়ান্ডারসনকে শর্ট বল করার জন্য তিনি বুমরার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিচ্ছেন। সেটা করতে গিয়ে আরও বিপাকে পড়েন ব্রড। দ্বিতীয় বলটা শর্ট করেন। ব্যাটার এবং উইকেটকিপারের মাথার উপর দিয়ে পাঁচ রান হয়। পরের বলটিও বুমরার ব্যাটের কাণায় লাগে। এ বার তো ছক্কা মারেন অধিনায়ক। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো ক্রিজের বাইরে পা ছিল ব্রডের। ফলে নো বল ডাকা হয়। ফ্রি হিটে ফুলটস উপহার দেন ব্রড। মিড অনের ওপর দিয়ে সপাটে চার মারেন বুমরা। পরের বল আবার ব্যাটের কানায় লেগে চার হয়ে যায়। পরের বলটা ডিপ স্কোয়ার লেগের বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন বুমরা। মারতে গিয়ে মাটিতেও পড়েও যান ভারতের অধিনায়ক। পঞ্চম বলে একেবার ক্যারিবিয়ান স্টাইলে ছক্কা হাঁকান বুমরা। অর্থাৎ পাঁচটি বৈধ বলে ৩৪ রান উঠে যায়। শেষ বলটা ইয়র্কার করেন ব্রড। তাতে এক রান নেন বুমরা। এর ফলে সব মিলিয়ে ব্রডের ওভারে ৩৫ রান ওঠে।
এবার ফেরা যাক ২০০৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে। ডারবানের কিংসমিডে গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-ইংল্যান্ড। বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে এই তারিখ 'রেড লেটার ডে' হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচে ইংরেজ পেসার অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ উত্যক্ত করেছিলেন যুবরাজকে। তারপরই সেই উসকানিকে আগুনে পরিণত করেছিলেন যুবি। ফ্লিনটফের রাগ তিনি মিটিয়ে ছিলেন ব্রডের ওপর। এক ওভারে পরপর ছটি ছক্কা হাঁকিয়ে সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিলেন যুবরাজ। ডারবানে সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাটিং করে এমএস ধোনির ভারত তুলেছিল ২১৮ রান। দুই ওপেনার বীরেন্দ্র শেহওয়াগ (৫৮) ও গৌতম গম্ভীর (৬৮) ব্য়াট হাতে ফুল ফুটিয়ে ছিলেন। ১৪.৪ ওভারে ভারত এক উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলে ফেলেছিল। এরপর তিনে নেমে রবিন উথাপ্পা ৬ রান করে ফিরে যান। পাঁচে নামেন যুবরাজ।তাঁর সঙ্গে তখন নন-স্ট্রাইকার এন্ডে ছিলেন ধোনি। ক্রিজে আসার পরই ফ্লিনটফ যুবরাজকে উত্যক্ত করতে শুরু করে দেন। ঝামেলা হওয়ার ঠিক পরের ওভারেই ব্রডকে ধুয়ে দেন যুবি। ছ'বলে টানা ছটি ছক্কা মারেন! ডারবানের গ্যালারি তখন উত্তাল। একের পর এক ছক্কা গিয়ে পড়ছে মাঠের একেক প্রান্তে।
ভারতের ইনিংসে ১৯তম ওভারে যুবির ছটি ছক্কা ব্রডকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। তিনি বুঝে উঠতে পারেননি, যুবিকে ঠিক কোন জায়গায় বল ফেললে কাজ হবে। কারণ সেদিন যুবি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। তাঁকে আটকানোর সাধ্য কারও ছিল না। প্রথম বলেই লং অনে ছক্কা মেরে যুবি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁকে অকারণ খোঁচা দিয়ে ফ্লিনটফ ঠিক কাজ করেননি। আর তার শাস্তি এবার পেতে হবে ব্রডকে। ওই ওভারে ছটি ছক্কা হাঁকিয়ে যুবি সেদিন বিশ্বরেকর্ড করেছিলেন। সেদিন মাত্র ১২ বলে যুবি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। যুবরাজ সেদিন ১৬ বলে ৫৮ রানে ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন। সাতটি ছক্কা ও তিনটি বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। ভারত ম্যাচ জিতেছিল ১৮ রানে। এজবাস্টনে বুমরার বিস্ফোরণ দেখে কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরও টুইট করে বলেছেন যে, তিনি গুলিয়ে ফেলেছেন, যুবরাজ না বুমরাকে দেখছেন!
আরও পড়ুন: Rishabh Pant: 'ও উইকেটকিপারদের ব্রায়ান লারা'! ওয়াঘার ওপার থেকে পন্থের প্রশংসা
আরও পড়ুন: Jasprit Bumrah, ENG vs IND: বুমরা না যুবরাজ? ৩৫ রান দেখে টুইট করলেন সচিন তেন্ডুলকর
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)