কন্যাসন্তান! আমতায় ১৪ মাসের শিশুকে আছাড় মেরে `খুন` বাবার
পুত্রসন্তান চেয়েছিলেন তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বছর তিনেকের দাম্পত্য জীবনে সুখ ছিল না। তার উপর আবার কন্যাসন্তান! অশান্তি চরমে পৌঁছেছিল। শেষপর্যন্ত একরত্তি সন্তানকে তুলে আছাড় মারল বাবা! বিনা চিকিৎসায় প্রাণ গেল চোদ্দ মাসের শিশুর। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার আমতায়।
হাওড়ারই বাগনানের পূর্ব বাইনান মাইতি পাড়ায় বাপের বাড়ি তনুশ্রী পাল। বছর তিনেক আগে বিয়ে হয় তাঁর। স্বামীর নাম প্রসেনজিৎ পাল। আমতার কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁকুড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। অভিযোগ, বিয়ের কয়েকদিন পর থেকেই শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা পয়সা দাবি করতে শুরু করেন প্রসেনজিৎ। এমনকী, নেশা করার জন্য স্ত্রী গয়না বিক্রি করতেও পিছুপা হতেন না তিনি! ফলে পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকে।
আরও পড়ুন: Deganga: প্রধানশিক্ষকের মারে নাক ফাটল সহ-শিক্ষকের! আতঙ্কে স্কুল ছেড়ে পালাল পড়ুয়ারা
এদিকে বিয়ের পর তনুশ্রী যখন গর্ভবতী হন, তখন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা চেয়েছিলেন, পুত্রসন্তান আসুক। কিন্তু বউমার কোল আলো করে আসে মেয়ে। ফলে অশান্তি আরও বাড়ে। পরিস্থিতি এমনই জায়গায় পৌঁছয় যে, মেয়েকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই বাপের বাড়ি চলে আসতেন তনুশ্রী। তাঁর দাবি, মেয়ের খাওয়ার দুধও ঠিকমতো কিনে দিতেন না স্বামী। উল্টে কিছু বলতে গেলেই মারধর করতেন। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এমনকী, এলাকার লোকজন বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
মেয়েকে নিয়ে বাগনানে বাপের বাড়িতেই ছিলেন তনুশ্রী। কিছুদিন আগে শ্বশুরবাড়ির সম্পর্কে এক আত্মীয় মারা যান। খবর পেয়ে সেখানে যান তিনি। অভিযোগ, ওই গৃহবধূকে মারধর করেন শ্বশুরবাড়ি লোকেরা। স্ত্রীর কোল থেকে মেয়েকে কেড়ে নেন প্রসেনজিৎ। তারপর তুলে আছাড় মারেন মাটিতে! কোনওরকমে শিশুটিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা টাকা দিতে না চাওয়ার MRI করতে পারেননি। মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাত শিশুটি, আবার ফিরেও আসত। কিন্তু গতকাল, বৃহস্পতিবার রাতে জ্ঞান হারানোর পর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে সে। চিকিৎসকের কাছে পর জানা যায়, চোদ্দো মাসের শিশুকন্যাটি মারা গিয়েছে!