নিজস্ব প্রতিবেদন: হাই ভোল্টেজ পঞ্চায়েত মামলার দিকেই মঙ্গলবার সারাদিন চোখ রেখেছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। এদিন মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা না হলেও, আদালতে ঘটেছে ৫টি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আগামী কালও শুনানি চলবে এই মামলার। কিন্তু এই ৫ দিকই আগামী দিনে মামলার ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইঙ্গিতবহ হতে চলেছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর ১২ এপ্রিল অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে এরপর কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সোমবার বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সবপক্ষের সওয়াল শুনে মামলাটিকে আবারও ফিরিয়ে দেয় সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চেই।


এদিন, মামলাটি ফের সিঙ্গল বেঞ্চে ওঠে এবং ৫টি অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ দিক সামনে আসে। জেনে নিন সেই ৫ দিক-



১. পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি রাখে আদালত।



২. এদিন তৃণমূলের আইনজীবী তথা লোকসবার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার আদালতকে বোঝান, এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ করার সাংবিধানিক অধিকার নেই। সংবিধানের ২৪৩ (ও) ধারার উপরই জোর দিয়ে কল্যাণ বলেন, একবার নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে, আদালত আর তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। সু্প্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ-সহ দেশের বিভিন্ন আদালতের ৮টি রায়ের কপি তুলে ধরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর যুক্তি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি বলেন, যদি এমন নজির তৈরি হয়, তাহলে যে কেউ আদালতে আবেদন করে নির্বাচন ভেস্তে দিতে চাইবে।



৩. ২৪৩ (ও) ধারা সংক্রান্ত কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়াল শুনে বিচারপতি তালুকদার বলেন, তিনিও এর সঙ্গে একমত। এরপরই তিনি বলেন, ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ঠিক এই কারণে আদালত কোনও হস্তক্ষেপও করেনি। কিন্তু, নির্বাচনে অনিয়ম হচ্ছে, বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারছেন না, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকুল নয়, এমন সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওইদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরই ভরসা রাখে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত বলে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ত্রুটিু মুক্ত রাখতে বিরোধীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনই। এরপরই কমিশন মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ায়। কিন্তু তারপর দিনই আবার সময়সীমা বাড়ানো সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে। আর এ জন্যই হাইকোর্ট তাতে হস্তক্ষেপ করেছে।



৪. বিচারপতি তালুকদার আরও বলেন, সংবিধানের ২২৬ ধারাতে হাইকোর্টকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার বলেই হাইকোর্ট এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। কিন্তু, প্রশ্ন উঠতেই পারে, এক্ষেত্রে কি সংবিধানের ২৪৩ (ও) ধারাকে ছাপিয়ে গিয়ে ২২৬ ধারা প্রতিষ্ঠিত হল? এই প্রশ্ন যাতে না ওঠে তাই সংবিধানের ১৪১ ধারার কথা মনে করিয়ে গিয়েছেন বিচারপতি তালুকদার। ১৪১ ধারায় সুপ্রিম কোর্টকে প্রভুত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আর সেই ক্ষমতার বলেই যে, হাইকোর্ট এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে, সেকথা স্পষ্ট করে দেন বিচারপতি।



৫. মঙ্গলবার, এজলাসে শুনানির ফাঁকে হালকা মেজাজে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে, এই মামলা সুপ্রিম কোর্ট অবধি যাবে।